২৬ এপ্রিল, ২০২৪

Crackers: সপ্তাহ ঘুরলেই কালীপুজোর আমেজ, শব্দবাজি নিয়ন্ত্রণে কোথায় দাঁড়িয়ে প্রশাসন?
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2022-10-15 16:40:53   Share:   

প্রসূন গুপ্ত: প্রায় প্রতি বছর নিয়ম করে একটি নির্দিষ্ট ডেসিবেল বেঁধে দিয়ে শব্দবাজি নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা মানে কতজন? মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ রায়ের আমলে নকশাল আন্দোলন দমন করে নির্দেশ দিয়েছিলেন, আপাতত শব্দবাজি বন্ধ থাকুক। সিদ্ধার্থ শংকর রায়ের বক্তব্য পরিষ্কার ছিল, কোনটা শব্দবাজি আর কোনটা বোমা বোঝা মুশকিল। কাজের কাজ হয়েছিল, ৭২-এর কালীপুজোয় সতর্ক ছিল বাঙালি। এরপর শব্দবাজি নিয়ে যথেষ্ট আইন আদালত নিয়ম কানুন হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের প্রয়াত বিচারপতি ভগবতী প্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আইনজীবী গীতানাথ গঙ্গোপাধ্যায় শব্দবাজিতে একেবারে নিষেধাজ্ঞা না বসিয়ে শব্দের পরিমান কমিয়েছিলেন। ৯০ ডেসিবল থেকে কমে ৬৫ ডেসিবল করা হয়েছিল। প্রথম প্রথম এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে ভালোই কাজ হয়েছিল। ধরপাকড়, চিহ্নিত শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত ইত্যাদি ইত্যাদি।

বাম আমলে মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু একবার ১৯৯৭-এ নির্দেশ দিয়েছিলেন কোনও শব্দবাজি ফাটানো যাবে না। সে বছর বাংলায় একটিও শব্দবাজি পাওয়া যায়নি কালীপুজোয়। ব্যস ওই একবছর, পরের বছর থেকে ফের কালীপুজোর দিন কয়েক আগে থেকেই দুমদাম শব্দ।

ভোট বরাবর রাজনীতিতে বড় বালাই, কাজেই বাজি ফাটানো আটকাবে কে? মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য অবশ্য এসব বিতর্ক থেকে দূরে থাকতেন চিরকাল। ২০১১-তে বাংলার রাজনীতিতে শাসকের পালা বদল। বিপুল জনসমর্থন নিয়ে এলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রাথমিকভাবে এই শব্দবাজি, আতসবাজি নিয়ে সরকার খুব একটা মাথা গলায়নি। কিন্তু একটা সময় ক্রমেই বাড়তে থাকে শব্দের তাণ্ডব। ৬৫ ডেসিবেল ছেড়ে প্রবল শব্দবাজির আওয়াজে গমগম করতো দীপাবলি উৎসব।

এখন তো কালীপুজোর উদ্যোক্তা কোনও না কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তাই শব্দবাজি আটকানোয় খানিকটা গড়িমসি প্রশাসনের। এই অভিযোগ হামেশাই করে আম জনতা। সম্প্রতি কোর্টের আদেশ তো ছিলই, তার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আবেদন করেছেন জনগণের কাছে বাজির ব্যবহার নিয়ন্ত্রিত করতে। পুলিসকে দিয়েছেন প্রয়োজনীয় নির্দেশ। শনিবার বিরাটি-সহ বিভিন্ন এলাকায় পুলিস পথে নেমেছে। মাইকিং করে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে যে শব্দবাজির বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। এসব তো ঠিক আছে কিন্তু রাত বাড়লে কে আটকাবে বাজি? দক্ষিণ দমদম এই বিষয়ে প্রায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তবু আশায় অসুস্থ, বৃদ্ধ মানুষ, যদি কালীপুজোর আগে একটু সতর্ক এবং সক্রিয় হয় প্রশাসন।


Follow us on :