Share this link via
Or copy link
দুর্গাপুরের (Durgapur) লাউদোহার কুনুর নদী (Kunur River)এক সময় বাসিন্দাদের কাছে আশীর্বাদ স্বরূপ ছিল। এই নদীর জলে এলাকার প্রতাপপুর, কাঁটাবেরিয়া সহ প্রায় কুড়িটি গ্রামের মানুষ চাষবাস করতেন। কিন্তু সেই কুনুর নদীর জল (water pollution) আজ অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে এলাকার চাষীদের কাছে। অভিযোগ, বেসরকারি গ্যাস উত্তোলনকারী সংস্থার বর্জ্য মিশছে নদীর জলে। চাষের জমিতে জল ব্যবহার করলে কমছে মাটির উর্বরতা। বন্ধ্যা হয়ে পড়ছে জমি। জল দূষণের কারণে সংকটের মুখে কৃষকদের রুজি রোজগার। তারপর আবার কুনুর নদীর সেতুও দুর্বল। ভেঙে গেছে সেতুর রেলিংও। অবিলম্বে বেহাল সেতু আর রাস্তা সারাইয়ের দাবিও তুলেছেন অনেকে।
চাষবাস হচ্ছে না, অথচ চাষবাসের উপর নির্ভরশীল এই কুড়িটি গ্রামের বেশ কয়েক হাজার মানুষ। যাঁরা অনেকে পরিস্থিতির শিকার হয়ে পেশা বদলে ফেলেছেন, আবার অনেকে আত্মহত্যার পথকেই বেছে নিয়েছেন। এখানেই শেষ নয়, কুনুর নদীর সেতু দিনের পর দিন দুর্বল হয়ে পড়েছে, ভেঙে গিয়েছে নদীর সেতুর রেলিং। বেহাল হয়ে পড়েছে নদীর উপরের রাস্তা। তা সত্ত্বেও আজ ভারী যানবাহন এই সেতুর উপর দিয়ে যাতাযাত করছে, এতে বিপদ আরও বাড়ছে।
গ্যাস উত্তোলনকারী সংস্থা কারখানা তৈরির জন্য এলাকার বেশ কিছু জমি ১৫ বছরের জন্য লিজে নেয়। অভিযোগ, লিজের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও জমিদাতারা পুনর্নবীকরণের টাকা পাননি। অভিযোগ, শুধুমাত্র শাসকদল ঘেঁষা জমিদাতারাই টাকা পাচ্ছেন। বিজেপি করার অপরাধে বঞ্চিত একাংশ জমিদাতা।
বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারিকে সঙ্গে নিয়ে এলাকার বেশ কিছু মানুষ কুনুর বাঁচাও আন্দোলনে নামেন। এই আন্দোলন ধারাবাহিকভাবে চলবে বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের। অবিলম্বে বেহাল সেতু আর রাস্তা সারাইয়ের দাবিও উঠেছে। অভিযোগ উঠছে এই আন্দোলনে সামিল হওয়ার অপরাধে তাদেরকে বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারির অভিযোগ, 'কুনুর বাঁচাতে যতদূর যেতে হয় ততদূর যাব। যে মুখ্যমন্ত্রী জমি আন্দোলনকে সামনে রেখে ক্ষমতায় এসেছেন, আর তাঁর জামানায় কিনা ক্ষতির মুখে চাষিরা।'
যদিও এইসব বিজেপির নাটক বলে কটাক্ষ করেন তৃণমূল নেতৃত্ব, দলের লাউদোহা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায় বলেন, 'আমরা বিষয়টি জানি চাষীদের পাশে আছি। বিজেপির নাটকের প্রয়োজন নেই।'
কুনুর নদীর একটা ইতিহাস প্রেক্ষাপট আছে। অনেক লেখা রয়েছে এই নদীকে কেন্দ্র করে। কিন্তু কালের নিয়মে আজ এই নদী হাজারো প্রশ্নের মুখে। এর গতি কোথায় থামবে জানা নেই কারোর। তবে কুনুর বাঁচাও কমিটি বলছে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে কুনুরকে।