Share this link via
Or copy link
মণি ভট্টাচার্য: পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Election) ঘোষণার পর থেকে এখনও অবধি রাজ্যে মৃত্যুর সংখ্যা হাফ সেঞ্চুরি পার। কিন্তু এবার মৃত্যুর পরিসংখ্যান বলছে অন্যবারের তুলনায় চিত্রটা কিছুটা আলাদা। প্রত্যেকটি একক দলের কর্মীদের মৃত্যুর সংখ্যার তুলনায় ৪ গুন্ বেশি তৃণমূল কর্মীদের মৃত্যু হয়েছে। একটি অলিখিত সূত্রের খবর অনুযায়ী, এখনও অবধি রাজনৈতিক হিংসা (Political Violence), বোমা বিস্ফোরণ, ইত্যাদি সব মিলিয়ে মোট ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও এই হিংসা ও মৃত্যু নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। এছাড়া মমতা বন্দোপাধ্যায় অথাৎ মুখ্যমন্ত্রীর দাবি মৃত্যু হয়েছে ১৯ জনের।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজনৈতিক হিংসায় বিরোধী দলগুলির থেকে শাসক দলের কর্মীর মৃত্যু বেশি হয়েছে এ ঘটনা বিরল, এমনটাই রাজনৈতিক মহলের দাবি, এঘটনায় অবশ্য শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে বলেন, 'মমতা বন্দোপাধ্যায় মৃত্যুর হিসেবে কমিয়ে বলছেন।'
যদিও সূত্রের খবর অনুযায়ী, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, বোমাবাজি, রাজনৈতিক হিংসায় রাজনৈতিক কর্মীর ছেলে, পোলিং এজেন্ট, প্রার্থীর পরিবার সহ তৃণমূল কর্মী বা তৃনমূল সমর্থনকারী মোট ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। যেখানে সমানভাবে বিজেপি কর্মী ও বিজেপি সমর্থনকারী মোট ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ৭ জন কংগ্রেস কর্মীও রাজনৈতিক হিংসায় প্রাণ হারিয়েছেন। রাজনৈতিক হিংসায় বাদ যায়নি নির্দল বা সিপিআইএম। সিপিআইএম কর্মীদের ৪ জন প্রাণ হারিয়েছে, হিংসায় প্রাণ গিয়েছে ১ জন নির্দল কর্মীরও। এ ছাড়া ভাঙড়ে হিংসায় বৃহস্পতিবার অবধি প্রাণ গিয়েছে ৩ জন আইএসএফ কর্মীরও। ফলে এই পরিসংখ্যানে স্পষ্ট যে অন্য যে কোনও একক দলের কর্মীদের নিরিখে তৃণমূল কর্মীরাই বেশি প্রাণ হারিয়েছেন। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দোপাধ্যায় ১৯ জনের মৃত্যুর হিসেব দেখালেও রাজনৈতিক হিংসায় যে তৃণমূলেরই বেশি মৃত্যু হয়েছে সেটা স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা অবধি অলিখিত সূত্রের খবর অনুযায়ী, পঞ্চায়েত নির্বাচনী হিংসায় দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১৪ জন, মুর্শিদাবাদে ১৪ জন, কোচবিহারে ৬ জন, মালদহে ৬ জন, উত্তর দিনাজপুরে ৪ জন, নদিয়ায় ৩ জন, পুরুলিয়ায়, উত্তর ২৪ পরগনায়, পূর্ব বর্ধমানে ২ জন করে মৃত্যু হয়েছে, এছাড়া বীরভূম, দক্ষিণ দিনাজপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরে ১ জন করে মৃত্যু হয়েছে।
পাশাপাশি অলিখিত সূত্রের খবর অনুযায়ী, ২০০৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১ দফার ভোটে ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যেখানে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০০৮ সালে ৩ দফার ভোটে ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। যেখানে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে, যেখানে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ২০১৮ সালে ৩ দফার ভোটে ৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, যেখানে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ২০২৩ সালে ১ দফা নির্বাচনে এখনও অবধি ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যেখানে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।