Share this link via
Or copy link
এ যেন ভিনদেশী রোকিয়া ও সম্রাটের হাড়হিম করা সিনেমার চিত্রনাট্য। বাংলাদেশের একই গ্রামে বাড়ি এই প্রেমিক-প্রেমিকার। ঘর বাধার স্বপ্ন নিয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে এসেছিলেন যুগল। কিন্তু প্রেমিকের ফন্দি ছিল অন্য। পরে প্রেমিকা জানতে পারেন তাঁর প্রেমিক মোটা অর্থের বিনিময়ে ভিন রাজ্যে তাঁকে বিক্রি করার ফন্দি এঁটেছেন। এরপরই প্রেমিকের কাছ থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করেন প্রেমিকা।
তবে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়া এতটা সহজ ছিল না। সীমান্ত পেরোতে গিয়ে বিএসএফের জালে ধরা পড়েন প্রেমিকা। বাংলাদেশের চাঁদিপুরের ডুরুলিয়া গ্রামের বছর ২০-র সম্রাট গাজীর সঙ্গে বছর ১৯-এর রোকিয়া সুলতানার আলাপ হয় ফেসবুকে। সেই আলাপচারিতা গড়ায় হোয়াটসঅ্যাপ অবধি। তারপরে তাঁরা ভালোবাসার সম্পর্ককে পরিণতি দিতে দু'জনই দেশ ছেড়েছিলেন চলতি বছরের ২৩শে জুলাই। দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নজর এড়িয়ে প্রবেশ করেন ভারতে। নাম পরিচয় গোপন রেখে গত এক মাস ধরে বসিরহাটের বিভিন্ন জায়গায় দু'জনে সুখে বসবাস করছিলেন।
এরপরই কাহিনীতে আসে টুইস্ট। রোকিয়া জানতে পারেন তাঁর প্রেমিক মোটা টাকার বিনিময়ে তাঁকে বিক্রি করার ফন্দি এঁটেছেন। তরুণী কোনওক্রমে সেখান থেকে পালিয়ে বসিরহাটের স্বরূপনগর থানার বিথারী-হাকিমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের হাকিমপুর চেকপোস্টের মাধ্যমে বাংলাদেশের ঢোকার চেষ্টা করেন। সেই সময় ওই তরুণী ১১২ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের সীমন্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানদের হাতে আটক হন। বিএসএফকে পুরো ঘটনা জানান রোকিয়া।
ঘটনা জানতে পেরে নড়েচড়ে বসে সীমন্তরক্ষী বাহিনী। তারপর বিএসএফ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এরপর তদন্তে নেমে জানতে পারে তরুণীর বাড়ি বাংলাদেশেই। রোকিয়া সবটাই সত্যি বলেছেন। এরপরই দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীদের মধ্যে প্রশাসনিক আলোচনা শুরু হয়। বিএসএফের ১১২ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের কোম্পানি কমান্ডার মণিষ কার্কি, ওপার বাংলার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের আধিকারিকদের সঙ্গে এক জায়গায় বসে একটি ফ্ল্যাগ মিটিং করেন। উপযুক্ত নথিপত্র আদান প্রদানের পর ওই তরুণীকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেয় বর্ডার গার্ড। তরুণী ভালবাসার অনেক স্বপ্ন নিয়ে একই গ্রামের যুবকের সঙ্গে দেশ ছেড়েছিলেন। ভিনদেশে ঘর বাধার স্বপ্ন ছিল তার। কিন্তু ভালোবাসার মধ্যে যে কাটা রয়েছে সেটা প্রকাশ হতেই একরাশ তিক্ততা নিয়ে দেশে ফিরলেন রোকিয়া। প্রেমিক সম্রাটের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানরা।