Share this link via
Or copy link
প্রসূন গুপ্তঃ এই প্রতিবেদন লেখার আগে দু'দিন ধরে প্রচুর ফোন পাচ্ছি যে, দিলীপ ঘোষের গল্পটা কি? অথবা এটা কি শাস্তি হলো, হলে কেন হলো ইত্যাদি। এছাড়া তিনি কি মন্ত্রী হচ্ছেন কেন্দ্রে, গোছের প্রশ্নও আছে। এখানে সাংবাদিকের সূত্র তেমন কাজ করছে না কাজেই একেক মিডিয়ায় একেক বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এর মাঝে কোনটি সত্যি আর কোনটি নয় ধরা মুশকিল। এক জায়গায় তো লেখা হলো রাজ্য দলের চাপেই দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে দেওয়া হলো, আবার একই সঙ্গে বলা হচ্ছে তিনি কেন্দ্রের ক্যাবিনেট মন্ত্রী হচ্ছেন।
১৯৮০-তে বিজেপি দল গঠন হওয়ার পর বহু নেতা কেন্দ্রে এবং রাজ্যে সভাপতি বা দায়িত্বপূর্ণ পদে এসেছেন। বাম জমানায় বিষ্ণুকান্ত শাস্ত্রী থেকে শুরু করে রাহুল সিনহা অবধি এ রাজ্যে বহু সভাপতি এসেছেন। কিন্তু যাঁরাই দায়িত্বে এসেছেন তারা অবশ্যই সংঘ পরিবারের ইচ্ছাতেই এসেছেন বলেই জানা যায়। মূলত আরএসএস করা নেতারাই ভারত তথা রাজ্যগুলির সভাপতি হয়েছেন। দিলীপ ঘোষও ব্যতিক্রম নন। তিনি প্রধানত সংঘ পরিবারের প্রচারক ছিলেন। জীবনের বেশি সময়ে তিনি আদর্শগত ভাবে প্রচারক ছিলেন বলেই তাঁর মুখ থেকে শোনা। একটা সময়ে তিনি আন্দামানে দীর্ঘদিন কাজ করেছিলেন বলে এই প্রতিবেদককে জানিয়েছিলেন।
তিনি বলেছিলেন যে, যা সংঘ বলেছে তার অন্যথা করি নি কখনও। আত্মত্যাগের কারণে বিবাহও করেননি বলে জানা যায়। তাঁর কোনও দাবি নেই, দল যখন রাজনীতিতে আসতে বলেছে তখনিই তার বিজেপিতে প্রবেশ। ভোটে দাঁড়ালেন এবং ২০১৬-তে জিতেও আসলেন। ওই সময়েই তাঁকে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য দলের সভাপতি করা হয়। বলা যেতে পারে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে এবং ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে এ রাজ্য থেকে যথাক্রমে ১৮ টি এবং ৭৭টি আসন বিজেপি পায়। শোনা যায় তাঁকে ২০১৯-এ কেন্দ্রে ক্যাবিনেট মন্ত্রী পদ নেওয়ার আবেদন ছিল কিন্তু দিলীপবাবু তা গ্রহণ করেননি।
অবিশ্যি এরপর সভাপতি হিসাবে ড. সুকান্ত মজুমদারকে নিয়ে আসা হয়। তারপর থেকেই কিন্তু দলে নানা গোষ্ঠী সমস্যা তৈরি হয়। বিজেপির ভোট কমতে থাকে। ৩৮% ভোট কমে এখন ২২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে কেন্দ্রও ভেদাভেদে বিরক্ত। সম্প্রতি দলের প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে দেওয়া হয়। শোনা যায় তিনি অন্য দায়িত্ব পেতে পারেন। কিন্তু বাস্তব সত্যি দিলীপ ঘোষের মতো বর্ণময় চরিত্র কমই দেখা যায় এবং অবশ্যই তাঁর মতো জনসংযোগ কম নেতারই ছিল এ রাজ্যে।