১৭ মে, ২০২৪

Police:'কখনও মৃত্যুর ভয় পাইনি,' সিএন ডিজিটালে লিখলেন ডাকাতি কান্ডে ভাইরাল ASI রতন রায়
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2023-08-30 19:32:20   Share:   

এএসআই রতন রায়, রানাঘাট থানা:  হ্যাঁ আমার ওজন বেশি। ১০৪ কেজি। কিন্তু আমার মনে পুলিস প্রশাসনের জন্য অগাধ সম্মান। এর জন্য আমি অনেক কিছু করতে পারি। কখনও ভাবি নি পুলিসের মুখ উজ্জ্বল করার সুযোগ পাবো। 


মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎ ফোন এলো, থানায় তখন ডিউটি অফিসার আমি। ফোনে বলল, 'স্যার সেনকো গোল্ডে ডাকাত পড়েছে, বাঁচান।' সঙ্গে সঙ্গে আরটি গাড়ি কোথায় খোঁজ নিলাম। দেখলাম ঘটনাস্থল থেকে আরটি গাড়ি বেশ খানিকটা দূরে। আমি তখন নিজেই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। ওদিকে টেবিল ছাড়লেও বিপদ আর ঘটনাস্থলে না গেলেও বিপদ। তৎক্ষণাৎ একটি গাড়ি নিয়ে সঙ্গে ৩ জন কনস্টেবল নিয়ে বেরিয়ে পড়ি। 

পুলিস এসেছে টের পেয়ে দুষ্কৃতীরা পালানোর তোড়জোড় শুরু করে। আমি আগেই বুঝেছিলাম বুদ্ধি খাটিয়ে যেতে হবে। তাই পুলিসের পোশাক বদলে ফেলেছিলাম। ওদের বেরোতে দেখে ঘিরে ফেলার চেষ্টা করি। কিন্তু মাত্র ৪ জন পুলিস নিয়ে তা সম্ভব ছিল না। আমাদের দেখেই ওরা গুলি চালাতে শুরু করে। আগ্নেয়াস্ত্র দেখে আমার বাকি কনস্টেবলরা রীতিমত ভয় পেয়ে যায়। তখন আমি নিজেই দুষ্কৃতীদের তাড়া করি। তখন মাথায় ছিল না কি হবে, প্রাণ ভয়ও ছিল না। ভেবেছিলাম যা হবে দেখা যাবে। চিন্তা ছিল ওদের ধাওয়া করার সময় গুলি শেষ না হয়ে যায়। দুষ্কৃতীদের পাল্টা গুলির মুখে প্রায় ৩০০ মিটার ধাওয়া করেছি ওদের। হাঁফিয়েও গিয়েছিলাম। তখন কেবল পুলিসের মান সম্মানের কথা ভেবেছি। তবে রিভলভার জং ধরা নয়। রিভলভার জং ধরা হলে গুলি চালাতে পারতাম না।  


আসলে ছোটবেলা ভীষন লড়াইয়ের মধ্যেই কেটেছে। পুলিসে চাকরি করব স্বপ্ন ছিল। ১৯৯৬ সালে চাকরি পাই। ধীরে ধীরে শরীরেও স্থূলতা চলে আসে। এর জন্য অনেক টিটকিরি শুনতে হয়েছে। পুলিস মহলেই অনেকে আছে যারা টিটকিরি করেছে। আজ তারাই বাহবা দিচ্ছে। কিছুদিন আগেই এএসআই পদোন্নতি হয়েছে।  


স্বাভাবিক ভাবেই রানাঘাটের ঘটনার ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই অনেক ফোন পেয়েছি, শুভেচ্ছা কুড়িয়েছি। আমাদের রানাঘাট জেলার এসপি ড: কে কান্নান সাহেব আমাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। আমি পুলিসে চাকরি করি, এই আমার সৌভাগ্য। আমার আইসি সাহেবও আমাকে বাহবা দিয়েছেন। আজ মনে হচ্ছে স্থূলতা নিয়ে যারা আমাকে টিটকিরি করত তাঁদের জবাব দিয়েছি। কেবল জবাব নয়, নিজের জন্য নয়, পুলিসের জন্য আরও এমন কাজ করতে চাই। 

                                                             "অনুলিখন: মণি ভট্টাচার্য"


Follow us on :