১৫ মে, ২০২৪

Sikkim: সিকিমের বিপর্যয় মোকাবিলায় কন্ট্রোল রুম খুলছে নবান্ন, বার্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2023-10-04 17:57:44   Share:   

নদী আপন বেগে পাগল পারা গানের মতোই তিস্তার এই মুহূর্তে রুদ্ররূপে ছিন্নবিছিন্ন উত্তর সিকিম। পাহাড়-সমতলের দু'কুল ছাপিয়ে তিস্তার প্লাবন। জানা গিয়েছে, বুধবার ভোররাতে হঠাত্ মেঘ ভাঙা বৃষ্টি আছড়ে পড়ে উত্তর সিকিমের লাচেনের লোনক হ্রদে। সেই জল ধরে রাখতে না পারায় হ্রদ উপচে ভাঙে চুংথাম বাঁধ, আর সেই বাঁধভাঙা জল নেমে আসে তিস্তাতে। হরপা বানের জল নিয়েই এগোতে থাকে তিস্তা, আশপাশে পাহাড়ি সিকিম-সহ সমতলের সব কূল ছাপিয়ে ধ্বংসলীলা চালায়। বিচ্ছিন্ন চুংথাম, লাচেন উপত্যকা। ১৫-২০ মিটার উঁচু জল ধ্বংসলীলা চালায় সিংতামের বারদং সেনা ছাউনিতে। উত্তর সিকিমের তিস্তাপারের বহু বাড়ি, বহু ঘর কাদা জলের স্রোতে ভেসে গিয়েছে। তিস্তার এই রূদ্ররূপে নিখোঁজ অন্তত ২৩ জন সেনা, তাঁদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে ভারতীয় সেনার ইস্টার্ন কমান্ড ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। উদ্ধারকাজ এবং বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গ্রাউন্ড জিরো পরিদর্শনে সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং।

প্রাক উত্সব মরশুমে তিস্তার রুদ্ররূপে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পর্যটকরা। এই মুহূর্তে উত্তর সিকিমের যা অবস্থা, ফেরার উপায় নেই। কারণ শিলিগুড়ি হয়ে সিকিম যাওয়ার ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ। প্রতিকূল হয়ে দাঁড়িয়ে ডুয়ার্স, গরুবাথান, কালিম্পং, লাভা হয়ে সিকিমে ঢোকার বিকল্প রাজ্য সড়ক। এই অবস্থায় কতদিন ঘরবন্দি, হোমস্টে বন্দি বা হোটেল বন্দি থাকবেন পর্যটকরা, জানেনা কেউ। ভয়ানক ক্ষতিগ্রস্ত গ্যাংটক, নামচির মতো পর্যটনস্থল। ধংস্তস্তূপ সরলে কী দাঁড়াবে অবস্থা, তাও জানে না প্রশাসন। বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় ৮ অক্টোবর পর্যন্ত প্যাকিয়ং, নামচি, গ্যাংটক, মঙ্গনের সব সরকারি ও বেসরকারি স্কুল বন্ধ  রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। স্থানীয় এবং পর্যটকদের সুবিধার্থে চালু ০৩৫৯২-২০২৪৬১/২০১১৪৫ এমার্জেন্সি হেল্পলাইন নাম্বার। পর্যটকদের জন্য নোডাল অফিসার হেল্পলাইন নাম্বার ৭০০১৯১১৩৯৩। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত সাত জনকে নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। প্রাণহানির সঠিক খবর নিয়ে মুখ খোলেনি কেউই। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি তিনটি দেহ উদ্ধার হয়েছে।

এদিকে এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে সিকিমের পর্যটন। প্রাক উত্সবের মরশুমে রাজ্যের একটি অংশে যেভাবে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে তিস্তা, সেই ক্ষত শুকোতে কমবেশি এক থেকে দেড় মাস। ফলে মাথায় হাত হোটেল ব্যবসায়ীদের। সিকিমের এই বিপর্যয় এবং সেনা নিখোঁজের ঘটনায় এক্স অ্যাকাউন্টে সমবেদনা জানান প্রধানমন্ত্রী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে জরুরি বৈঠকে অডিও বার্তা পাঠান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেহেতু রাজ্যের গা ঘেষা সিকিম, তাই উত্তর সিকিমের বিপর্যয়ের প্রভাব পড়ছে দার্জিলিং, কালিম্পং, কোচবিহার, জলপাইগুড়িতে, বার্তায় জানান মুখ্যমন্ত্রী। দুর্যোগ কমলে তিস্তা বাঁধ মেরমাতি করবে বলেও আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অডিও বার্তায় তাঁর আবেদন, 'বাড়ি থেকেই সাতদিন ২৪ ঘণ্টা আমি নজরদারি করছি। চিন্তা করবেন না, ভয় করবেন না। প্রকৃতির সঙ্গে কারও লড়াইয়ের ক্ষমতা নেই। বিপর্যয় মোকাবিলায় কন্ট্রোল রুম খুলছে নবান্ন।'


Follow us on :