Share this link via
Or copy link
বিদায়ের বাদ্যি বেজেছে। রক্ত, মাংসের মেয়েকে শ্বশুর বাড়ি পাঠাতে যতটা কষ্ট, বোধহয় তার চেয়েও বেশি বিষাদ জড়িয়ে টুসু বিসর্জনে। শরতে নয় মকরে দেবী নিরঞ্জনে কাঁদে বাঁকুড়া। মকর সংক্রান্তির আড়মোড়া ভাঙা কুয়াশা ঢাকা ভোরে মন ভাঙা গানে গমগম করে ওঠে লাল মাটির দেশ।
টুসু ওদের কাছে কোলের মেয়ে, ওদের খুকি। লক্ষ্মীরূপী টুসুই শোনে মনের কথা। গোটা পৌষমাস মায়ায়, আদরে সেই মেয়েকে জড়িয়ে রাখার পর মকর সংক্রান্তির ভোরে চোখের জলে চৌদল নিয়ে কাছেপিঠের নদী কিংবা পুকুর ঘাটে রওনা দেয় গ্রামের ৮ থেকে আশি। গানে গানে ব্যক্ত করে কন্যা বিচ্ছেদের যন্ত্রণা। টুসু নিরঞ্জনে ফাটে বুক।
ঠুনকো সম্পর্কের যান্ত্রিক এই দুনিয়াতেও লালমাটির মানুষরা পারে কেবলমাত্র বিশ্বাস, ভালোবাসা, স্নেহ সম্বল করে আরাধ্যের সঙ্গে জুড়ে থাকতে। টুসু বিসর্জনের দুঃখ মোছে কনকনে ঠাণ্ডা জলের ঝাপটা। মকরের ওই বহ্নি শিখা শেখায় অপেক্ষা করতে। আবার গোটা একবছর ধরে মেয়ের জন্য চিড়া, মুড়ি জোগাড় করবে রাঢ় বাংলার মাটির মানুষরা। পৌষের জন্য আবার ৩৬৫ দিন সবুর করবে ওরা।