২৬ এপ্রিল, ২০২৪

Corruption: ভুয়ো শিক্ষক! সরকারি আইটিআই কলেজের দুর্নীতির পর্দাফাঁস করলেন খোদ অধ্যক্ষ
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2022-10-13 11:09:32   Share:   

'ভুয়ো শিক্ষক'দের (Fake Teacher) হদিশ সরকারি আইটিআই কলেজে (Government ITI College)। রাজ্য সরকারের কারিগরি দফতরের অধীনস্ত ট্রাস্ট্রের মাধ্যমে চলা সরকারি আইটিআই কলেজে দুর্নীতির (Corruption) পর্দাফাঁস। খাতায় কলমে ভুয়ো শিক্ষক দেখিয়ে আর্থিক তছরুপের কর্মকাণ্ড প্রকাশ্যে আনলেন খোদ  কলেজের অধ্যক্ষ (principal)।

সঠিক পরিকাঠামোর অভাবে দীর্ঘদিন ধরেই সঠিকভাবে ক্লাস করতে পারছিলেন না পড়ুয়ারা। এরই প্রতিবাদে বুধবার রীতিমতো রাস্তায় বসে প্রতিবাদ শুরু করেছিল কেশপুর (Keshpur) গভর্নমেন্ট আইটিআইয়ের পড়ুয়ারা। পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়িয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আনলেন কলেজের অধ্যক্ষ শেখ মোহম্মদ নাসিম আলী। ৯টি ডিপার্টমেন্ট। পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ৪৫০। অধ্যাপক ও ইন্সট্রাক্টর মিলিয়ে কলেজে থাকার কথা ৫৪ জন শিক্ষক। রয়েছেন ১০জন। যদিও খাতায় কলমে দেখানো আছে কলেজে বর্তমানে রয়েছেন ২০ জন শিক্ষক। জাতীয় বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ পরিষদের (vocational training) সরকারি পোর্টালেও আপলোড করা আছে এই ২০ জন শিক্ষকের তালিকা।

সিএন-এর ক্যামেরার সামনে কলেজের অধ্যক্ষ দাবি করেন, ১০ জন 'ভুয়ো শিক্ষক' দেখানো রয়েছে খাতায় কলমে। যাঁদের বাস্তবে কোনও অস্তিত্বই নেই। তিনি জানান, ম্যানেজমেন্টের নির্দেশ সরকারি ইনস্পেকশন হলে দেখাতে হবে ২০ জন শিক্ষকের ভুয়ো তালিকা। অথচ আইটিআই কলেজের অ্যাটেনডেন্স রেজিস্টার অনুযায়ী, ২০১৬ সাল থেকে কলেজে ক্লাস নিচ্ছেন মাত্র ১০ জন শিক্ষক। অধ্যক্ষের দাবি, উপায় না থাকলেও ম্যানেজমেন্টের চাপে কার্যত মুখ বন্ধ করে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিতে হচ্ছে তাঁদের।

এখানেই শেষ নয়। নথি বলছে, প্রত্যেক শিক্ষকেরই মাসিক বেতন ৬০০০ থেকে ৭০০০ টাকা। তবে সরকারের খাতে দেখানো হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ টাকা পাচ্ছেন শিক্ষকরা।

২০১৬ সালে রাজ্য কারিগরি দফতরের তত্ত্বাবধানে অভিনেতা সাংসদ দেবের গ্রাম থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে কেশপুরের চেঁচুড়া এলাকায় কয়েক বিঘা জমির ওপর তৈরি করা হয় সরকারি আইটিআই কলেজ। পিপিপি মডেলে এই কলেজ পরিচালনার দায়িত্ব পান বাঁকুড়ার একটি সংস্থা। সেই সংস্থাই নিয়োগ করেন শিক্ষক সহ কর্মীদের। পরিচালনার সুবাদে সরকার থেকে মেলে টাকা। অভিযোগ সরকারের কাছ থেকে ঝাঁ চকচকে পরিকাঠামোর  'গল্প' শুনিয়ে নেওয়া হয় কোটি কোটি টাকা। আদতে যার কানাকড়িও এসে পৌঁছয় না কলেজ ক্যাম্পাসে।

হতদরিদ্র কলেজে রয়েছে বেশ কয়েকটি ল্যাবরেটরি। যেখানে হাতেকলমে কাজ শেখার কথা পড়ুয়াদের। অভিযোগ বছরের পর বছর ধরে সেই ল্যাবে নেই পর্যাপ্ত পরিকাঠামো। যার ফলে পড়ুয়াদের বঞ্চিত হতে হয় প্র্যাক্টিক্যাল ট্রেনিং থেকে। খাতায় কলমে আইটিআই পাস সার্টিফিকেট থাকলেও মেলে না চাকরি।

কলেজের শিক্ষকদের দাবি, তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেডে গত তিন বছর ধরে নেই কোনও শিক্ষক। অথচ প্রতি বছর ছাত্রদের না পড়িয়েই একরকম পাশ করাতে হচ্ছে কলেজ কর্তৃপক্ষকে। 

ঠিক এরকমই একের পর এক তথ্য প্রকাশ্যে এল বুধবার। আর যা ইঙ্গিত করছে শিক্ষাক্ষেত্রের আরও এক দুর্নীতিকে। এই দুর্নীতির অবিলম্বে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত করা হোক দাবি কলেজের অধ্যক্ষ থেকে শিক্ষকদের। বিষ্ণুপুরের এই সংস্থার সাথে একাধিকবার টেলিফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও মেলেনি কোনও উত্তর। ক্যামেরার সামনে মুখ না খুললেও ঘটনা শুনে চক্ষু চড়কগাছ প্রশাসনিক আধিকারিকদের। এই দুর্নীতির জাল কতদূর বিস্তৃত সেটাই এখন দেখার।


Follow us on :