১৩ মে, ২০২৪

Abhishek: 'প্রত্যেক ক্রিয়ার সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে,' অভিষেকদের মনে করিয়ে দিল দিল্লি পুলিশ
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2023-10-04 12:02:22   Share:   

মণি ভট্টাচার্য: দুটি লড়াই-ই সমগোত্রীয়, দুটিই অধিকারের দাবিতে। একটি, রাজ্যে যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারি চাকরির দাবিতে, অন্যটি বাংলার বকেয়া আদায়ের দাবিতে। আর এই দুই লড়াইকেই এখন একই দাঁড়িপাল্লায় মাপছে বাংলার জনসাধারণের একাংশ। একদিকে বাংলায় দিনের পর দিন অধিকারের দাবিতে পুলিশের লাঠির বাড়ি জুটেছে চাকরিপ্রার্থীদের। অন্যদিকে, সোমবার ও মঙ্গলবারে দিল্লিতে তৃণমূলের আন্দোলনের চিত্রটিও যেন কিছুটা একইরকম। কখনও খেলেন পুলিশের তাড়া, কিংবা কখনও অভিষেক সহ সমস্ত সাংসদদের টেনে-হিঁচড়ে, চ্যাংদোলা করে তোলা হয় প্রিজন ভ্যানে। ঠিক যেমনটা চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে করা হয় এ রাজ্যে। দিল্লির পুলিশ যেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলকে মনে করিয়ে দিলেন, 'প্রত্যেক ক্রিয়ার একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে।'

হ্যাঁ, একদিকে নিয়োগ দুর্নীতি জর্জরিত রাজ্য, ঠিক তখনও রাস্তায় বসে কাতরাচ্ছে যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা। তখনও হুশ ফেরে না প্রশাসনের। চ্যাংদোলা করে, কখনও আন্দোলনকারীদের কামড়ে, কখনও রাত বাড়লেই মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে লাঠিচার্জ, সে এক নির্মম অত্যাচার। এই ঘটনা লিখতে গেলেই মনে পড়ে যায়, ক্যা-এনআরসি আন্দোলন চলাকালীন কবি আমির আজিজের লেখা কবিতার দুটি লাইন। 'রাত্রি হলে অধিকার দাবিতে গুলি আর লাঠির বাড়ি, যাদের গায়ে আঘাত তাদেরকেই বলা বদমাইশের ধারি,' আন্দোলন ও প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও লাইন দুটি আজ বড়ই প্রাসঙ্গিক। এভাবেই প্রত্যেকবার বঞ্চনা ও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। কেউ কখনও তাঁদের কথা শোনেইনি। বরং রাজনীতির আঙিনা বাঁচাতে প্রতিশ্রুতি জুটেছে তাঁদের। ঠিক তেমনই তৃণমূল দিল্লির রাজপথে ধরণা-প্রতিবাদ কর্মসূচি গ্রহণ করলেও কেউই শুনলো না তাঁদের কথা, প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও দেখা মিলল না কেন্দীয় মন্ত্রীর। বরং চ্যাংদোলা করে তোলা হল প্রিজন ভ্যানে।

আবাস যোজনা ও ১০০ দিনের কাজে বকেয়ার দাবি তুলে দিল্লির রাজপথে কর্মসূচি গ্রহণ করে তৃণমূল। চলতি সপ্তাহেই সোমবার অর্থাৎ তৃণমূলের আন্দোলনের প্রথম দিনই কেন্দ্রীয় গ্রাম উন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিং জানিয়েছিলেন, ৫৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল আবাস যোজনা খাতে। সেই টাকার হিসাব তৃণমূল দেখাতে পারছেনা। ফলে গিরিরাজ সিংয়ের অভিযোগ সেখানেও টাকার নয়-ছয় হয়েছে। পাশাপাশি জবকার্ডের ক্ষেত্রে ২৫ লক্ষ জবকার্ড ভুয়ো বলে দাবি করেন তিনি।

কেন্দীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে কৃষি ভবনে ধরনা দিলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ অন্যান্য সাংদেরও জোরপূর্বক প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। মোটের উপর প্রথম বারের জন্য প্রিজন ভ্যানে ওঠার অভিজ্ঞতা হলো তৃণমূল সেকেন্ড ইন কমান্ডের। এরই প্রতিবাদের সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি দাবি করেন, '৩রা অক্টোবর দেশের জন্য কালো দিন।' প্রশ্ন উঠছে, জোর করে, টেনে-হিঁচড়ে, কামড়ে, লাঠির বাড়ি মেরে বাংলায় প্রতিনিয়ত চাকরিপ্রার্থীদের মারধর করা হয়। ওদের আন্দোলনও তো অধিকারের দাবিতে। ওদের ক্ষেত্রে তবে আপনাকে সরব হতে দেখা যায় না কেন? নাকি আপনি কেবল আপনার সাংসদদের মুখ্যমন্ত্রী! রাজ্যের যোগ্য চাকরিপ্রার্থী কিংবা সমস্ত আপামর জন সাধারণের মুখ্যমন্ত্রী নয়?


Follow us on :