পিনকন চিটফান্ড মামলায় আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে গ্রেফতার ব্যবসায়ী কৌস্তুভ রায়। সোমবার গভীর রাতে ইডির তরফে তাঁকে গ্রেফতার করা হয় বলে সূত্রের খবর। ইডি সূত্রে খবর, আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে তাঁকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে তাঁর জবাবে সন্তুষ্ট না হওয়ায় পরে তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি।

এ ঘটনায় যদিও রাজনৈতিক একাংশ ও সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, তৃণমূলের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় তাঁকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার অবশ্য জোকায় কৌস্তুভ রায়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে এলে সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তিনি কোনও রকম বেআইনি কিছু করেন নি।

সূত্রের খবর, এই প্রথম নয়, এর আগেও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল তাঁর নামে। একাধিকবার তল্লাশি চালানো হয় তাঁর অফিসে ও বাড়িতে। ব্যাঙ্ক প্রতারণা মামলায় বিশিষ্ট এই ব্যবসায়ীকে একাধিকবার জেরা করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। আগে সিবিআই জেরার মুখোমুখি হয়েছিলেন কৌস্তুভ রায়। শেষবার মাস খানেক আগেই কৌস্তুভ রায়ের অফিস ও বাড়িতে হানা দেয় আয়কর দফতর। সেসময়ই বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করা হয় বলে খবর মিলেছিল। তবে তখনও কোনও পদক্ষেপ করা না হলেও সম্প্রতি সেই নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার খবর আসে।

ইডি সূত্রে খবর, আর পি গ্রুপের কর্ণধার কৌস্তুভ রায়। তাঁকে পিনকন মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সোমবার তলব করা হয়েছিল ইডি দফতরে। সকালে হাজিরার কথা থাকলেও কৌস্তুভ আইনজীবীর চিঠি পাঠিয়ে বিকেলে হাজিরা দেওয়ার কথা জানান। সেই মতো বিকেলে ইডি-এর অফিসে হাজির হন ব্যবসায়ী। বিকেল থেকেই শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। চলে রাত একটা পর্যন্ত। একটানা জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব শেষে গভীর রাতেই তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তাঁর মোবাইল।জানা গিয়েছে, সোমবার একাধিক নথি নিয়ে অফিসে দেখা করার কথা বলেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট। সেই সব নথির বেশিরভাগই সঙ্গে এনেছিলেন কৌস্তুভ। সূত্রের দাবি, সেই নথি খুঁটিয়ে দেখেই একাধিক অসঙ্গতি মেলায় তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। মঙ্গলবার তাকে ব্যাংকশাল কোর্টে তুলে নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইবে ইডি।

২০১৮ সালেও ব্যাঙ্ক প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন কৌস্তুভ রায়। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যাঙ্কের সঙ্গে ৫১৫ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছিল। সেবার এই আর্থিক তছরূপের অভিযোগেই তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। ওই একই মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন শিবাজী পাঁজাও। রাজনৈতিক মহলের দাবি, তিনি তৃণমূল ঘনিষ্ঠ। বিভিন্ন দলীয় রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে তাঁকে শাসক দলের নেতা নেত্রীর সঙ্গে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন সময়। উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তলবে হাজিরা দেওয়ার সময় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও দেখা গিয়েছিল ব্যবসায়ী কৌস্তুভ রায়কে।