১৭ মে, ২০২৪

Woman: এক নির্লজ্জ নারী নির্যাতনের নাম পণপ্রথা
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2023-07-25 21:13:42   Share:   

সৌমেন সুর: অফিস যাবার তাড়ায় সবেমাত্র খেতে বসেছি এমন সময় একটা মর্মান্তিক খবর পেলাম। পাশের বাড়ির মাসিমার একমাত্র মেয়ের মৃত্যু সংবাদ। মৃত্যুর কারণ পণের বলি। মুহূর্তে আমার চোখের সামনে ভেসে উঠলো- ইতিহাসাশ্রিত কয়েকটা ছবি আর মাসিমার মেয়ের জন্য সমবেদনা। সেই সঙ্গে মন থেকে কে যেন বলে উঠলো, হৃদয়হীন সমাজের এক নির্লজ্জ নারী নির্যাতনের নাম, পণপ্রথা। এই নির্যাতনের নিঃশ্বাসে আজও শোনা যায় বুকফাটা কান্না, আর কবিগুরুর নিরুপমার আর্ত চিৎকার।

বিবাহ নরনারীর এক চিরন্তন মঙ্গল অনুষ্ঠান। সেই মঙ্গল অনুষ্ঠানে এলো নির্মম প্রথাচার। পাত্রের হাতে কন্যাকে দান করে পিতা হয়ে পড়েন সর্বস্বান্ত- বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা দেখা গেছে। পণপ্রথার নানা রূপ। সমাজ ও ধর্মের ভিত্তিতে তার ভিন্নতা। হিন্দু ধর্মের উচ্চ বর্ণে বর-পণ প্রথা প্রচলিত। সেখানে কন্যাদায়গ্রস্থ পিতা বর পণ দিয়ে দেউলিয়া হয়ে যান। আবার নিম্ন বর্ণে আছে কন্যা পণের চলন। সেখানে কন্যার পিতাকে কন্যাপণ দিয়ে ঘরে আনতে হয় নববধূকে। সমাজের চারিদিকে উড়ে চলেছে প্রগতির নিশান। তবু পণপ্রথা সমাজের কলঙ্ক। এই নির্মম প্রথার পাষাণ ফলকে আছে কত মেয়ের করুণ কাহিনী। আজও শোনা যায়, কত বুক চাপা সকরুণ কান্নার আওয়াজ, কত অশ্রুময়ী নারী দীর্ঘশ্বাস।

নারী আজ অনেক পরিণত। আপন ভাগ্য জয় করবার অধিকার পেয়েছে নারী। জ্ঞান বিজ্ঞানে, শিল্পে, সাহিত্যে, নারীর সর্বত্র জয় জয়কার। তবু পণপ্রথা আজ নারীর লজ্জা। পণপ্রথা আইন করে বদলানো যাবে না। যতক্ষণ না পর্যন্ত দৃষ্টিভঙ্গি সচেতন না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত নির্যাতন নির্লজ্জের মত প্রকাশ থাকবে। তবে বর্তমানে বেশ কিছু মানুষ পণের বিরুদ্ধে। কিন্তু এদের সংখ্যা অনেক কম। বেশিরভাগই মেয়ে এই প্রথার বলি হচ্ছে। প্রয়োজন আমূল সংস্কারের। আমাদের জন্য অপেক্ষা করে আছে নতুন পৃথিবী, নতুন জীবন। সেখানে থাকবে না নিকৃষ্ট পণের ছোবল। থাকবে মিলিত যুবক-যুবতীর কন্ঠ,  "পণ দেবো না, পণ নেবো না।


Follow us on :