১২ মে, ২০২৪

Kurmi: কুড়মিদের ডাকা ১২ ঘণ্টা বনধে স্তব্ধ দক্ষিণবঙ্গের একাংশ
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2023-04-26 14:33:40   Share:   

তফসিলি উপজাতি হিসাবে স্বীকৃতির দাবিতে কুড়মিদের (Kurmi) ঘাঘর ঘেরা কমিটির ডাকা ১২ ঘণ্টা বনধে বুধবার সকাল থেকেই স্তব্ধ হল বাঁকুড়া (Bankura) এবং ঝাড়গ্রামের (Jhargram) জনজীবন। বাঁকুড়ার সিমলাপাল ব্লকের বিক্রমপুর, খাতড়া, সারেঙ্গা, পি মোড়-সহ বিভিন্ন এলাকায় বনধের সমর্থনে পথে নামেন কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষেরা। বিক্রমপুর এলাকায় বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম রাজ্য সড়ক এবং খাতড়া এলাকায় বাঁকুড়া-রানিবাঁধ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে শামিল হন কুড়মিরা।

বুধবার সকাল থেকেই বনধের প্রভাবে বাঁকুড়ার রাইপুর, রানিবাঁধ, সারেঙ্গা, সিমলাপাল এবং খাতড়া ব্লকের দোকান-বাজার সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। বাস এবং অন্যান্য যাত্রিবাহী গাড়ি চলাচলও বন্ধ। ফলে অসুবিধায় পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা। তবে বাঁকুড়া সদর মহকুমা এবং বিষ্ণুপুর মহকুমা এলাকায় কুড়মিদের বন্ধের সে অর্থে কোনও প্রভাব চোখে পড়েনি। ওই দুই মহকুমা এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। দোকান-বাজারও খোলা।

কুড়মিদের তফসিলি উপজাতির তালিকাভুক্ত করা এবং কুড়মালি ভাষার সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবিতে সপ্তাহ দুই আগে পুরুলিয়ার কুস্তাউর এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলিতে ‘রেল টেকা, ডহর ছেঁকা’ (রেল রোকো ও পথ অবরোধ) কর্মসূচির ডাক দেন কুড়মিরা। এই কর্মসূচির জেরে টানা ৫ দিন ধরে বিপর্যস্ত ছিল দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা এবং খড়্গপুর শাখার রেল চলাচল। একাধিক সড়ক অবরুদ্ধ থাকায় যান চলাচলেও তার প্রভাব পড়ে। চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হন বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলার সাধারণ মানুষ। পাঁচ দিন পর সরকারি আলোচনার আশ্বাসে অবরোধ উঠলেও তখনই আন্দোলনকারীরা জানিয়েছিলেন যে দ্রুত দাবিপূরণ না হলে তাঁরা আবার আন্দোলন করবেন। কুড়মি নেতৃত্বের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনার পরেও কুড়মিদের তফসিলি উপজাতিভুক্ত করার ব্যাপারে রাজ্য সরকার পদক্ষেপ না করায় বুধবার আবার জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে ‘হুড়কা জাম’ (বন্‌ধ)-এর ডাক দেয় কুড়মিদের ঘাঘর ঘেরা কমিটি। এই আন্দোলনকে বাইরে থেকে সমর্থন জানায় কুড়মিদের আরও বেশ কয়েকটি সামাজিক সংগঠন।

বনধের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে ঝাড়গ্রামে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় মোতায়েন করা হয়েছে পুলিসবাহিনী। বুধবার সকাল থেকে ঝাড়গ্রাম শহরের প্রাণকেন্দ্র পাঁচ মাথার মোড় প্রায় জনশূন্য। সকাল থেকে খাঁ খাঁ করছে রাস্তাঘাট। যেখানে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে একাধিক দূরপাল্লার সরকারি এবং বেসরকারি বাস। সেখানে কেবলমাত্র একটি সরকারি বাস দাঁড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু রাস্তা বন্ধ থাকায় কলকাতা যেতে গিয়েও বাড়ি ফিরতে হচ্ছে যাত্রীদের। কলকাতাগামী সরকারি বাসের এক কন্ডাক্টর বলেন, ‘সকালে বাস নিয়ে বেরিয়েছিলাম। কিন্তু রাস্তা বন্ধ থাকায় আবার ফিরে এসেছি। কলকাতা যেতে পারিনি। বন্‌ধের জেরে সকাল থেকে কোনও বেসরকারি বাসের দেখা নেই। ভাবছি, বাস ডিপোতেই ফিরে যাব।’

ঝাড়গ্রাম শহরের দোকানপাট সকাল থেকেই বন্ধ। কয়েকটি স্কুল ছাড়া শহরের সরকারি, বেসরকারি স্কুলগুলোও বন্ধ রয়েছে। কুড়মি সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা সরকারি অফিস, ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাদের সংগঠনের পতাকা বেঁধে দিয়েছেন। ঝাড়গ্রাম পুরসভার গেটেও বাধা রয়েছে কুড়মি সামাজিক সংগঠনের ঝান্ডা। ঝাড়গ্রাম জেলার বেলপাহাড়ি, শিলদা, বিনপুর, গিধনি, গোপীবল্লভপুর, সাঁকরাইলেও যথেষ্ট প্রভাব পড়েছে এই বন্‌ধের। আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি শিবাজী মাহাতো বলেন, ‘সকাল থেকে বনধের যথেষ্ট প্রভাব পড়েছে। আমাদের দাবিগুলো সাধারণ মানুষ সমর্থন করছেন। তাই রাস্তাঘাট ফাঁকা এবং দোকানপাটও বন্ধ।’


Follow us on :