Share this link via
Or copy link
সরকারি সাহায্যের আশায় তিন বিশেষভাবে সক্ষম (Particularly Capable) ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন খড়গপুর (Khargapur) পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের আজাদ বস্তি এলাকার দীনবন্ধু বেহেরা। রীতিমতো উদ্বেগে দিন কাটছে তাঁর। তিনি জানেন না এই দুনিয়ায় তিনি না থাকলে কি হবে ওই তিন ছেলেমেয়ের ভবিষ্যৎ। কোথায় বা ঠাঁই পাবে তাঁরা।
জানা গিয়েছে, দীনবন্ধু বেহেরার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে বছর খানেক আগে। এখন ৫৮ বছরের দীনবন্ধু বেহেরা এই রেল বস্তির একটি ছোট্ট ঘরে তিন ছেলেমেয়েকে নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন প্রবল উৎকন্ঠায়। বড় ছেলে শঙ্কর বেহেরা, জন্ম থেকেই বিশেষভাবে সক্ষম ছিলেন। পরে একটি ষাঁড়ের গুঁতোয় ভয়ংকর চোট পান। তারপর থেকেই কোমর, হাত ও পা সবকিছু অকেজো হয়ে যায়। সোজা হয়ে দাঁড়ানো তো অনেক দূরের কথা, ঠিক মত বসতেও পারেন না শঙ্কর।
ছোট ছেলে বিশ্বনাথ বেহেরা শারীরিকভাবে দুর্বল ছিল। ২০১৯ সালে গিরি ময়দান স্টেশনে ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর জখম হন। তারপর থেকে সেও আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। আর দীনবন্ধু বেহেরার একমাত্র মেয়ে পদ্মারও দুটি পা অস্বাভাবিক। ঠিকমত চলতে পারেন না। প্রত্যকেই প্রাপ্ত বয়স্ক। তবে মেয়ে পদ্মা কিছু মানুষের সহযোগিতায় নিজের প্রতিবন্ধী শংসাপত্র করিয়ে নিতে পেরেছেন। কিন্তু দুই ভাইয়ের এখনও তা হয়নি।
জানা গিয়েছে, বছর দুয়েক আগে দীনবন্ধু বেহেরা রাজ্য সরকারের মানবিক ভাতা পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত তিনি সেই সাহায্য থেকে বঞ্চিত। শুধু তাই নয় এই দুই ছেলের আধার কার্ড সংক্রান্ত গণ্ডগোলের জন্য রেশন দোকানের রেশনও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে অদ্ভুত এক সংকটের মুখে পড়েছে গোটা পরিবার।
তাই এই ব্যাপারে দীনবন্ধু বেহেরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বললেন, "সকলেই জানেন আমাদের এই অবস্থা। কিন্তু সেইভাবে কেউই কোনও সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি। আমি স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছে গিয়েছিলাম। তিনি খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে গিয়ে প্রতিবন্ধী শংসাপত্র করিয়ে নেওয়ার পরামর্শও দিয়েছিলেন। সেই পরামর্শ অনুযায়ী দুবার খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি।"
তবে ওই পরিবারের এই অবস্থার বিষয়টি জানতে পেরে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে এগিয়ে এসেছে বামপন্থীর নেতা-কর্মী। বৃহস্পতিবার এই সংগঠনের পক্ষ থেকে তিন ভাই ও বোনকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে। হাসপাতালের অস্থি চিকিৎসকের কাছে তাঁদের শারিরীক পরীক্ষাও করনো হয়। এমনকি দুই ভাইয়ের পক্ষ থেকে প্রতিবন্ধী শংসাপত্রের জন্য আবেদনও করা হয়। এই ব্যাপারে আমরা বামপন্থী খড়গপুরের সম্পাদক অনিল দাস বললেন, "এই পরিবারটিকে দেখার কেউ নেই। অথচ স্থানীয় কাউন্সিলর থেকে শাসকদলের নেতারা সবাই সবকিছু জানেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত তাঁরা কোনও দায়িত্ব পালন করলেন না। খুবই দুঃখজনক ব্যাপার।"