১৩ মে, ২০২৪

Special: অগ্রজের রথের রশি নবীন সারথির হাতে
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2023-05-23 15:38:28   Share:   

সৌমেন সুর: চারদেয়ালের গণ্ডী কখনো কবিকে আটকে রাখতে পারে! কখনই না। আসলে কবি হওয়ার জন্যই তাঁর জন্ম। তাই ক্লাসরুমের মাপা শাসন তাঁকে স্বস্তি দেয়নি। সে কি বন্দীশালায় দিন কাটাতে পারে! তাঁর মন প্রকৃতির সবুজ সমারোহে ঘুরতে থাকে। প্রকৃতির ঋতুবৈচিত্রে তাঁর ভাবনা ঘুরপাক খেতে থাকে। এহেন অবস্থায় তাঁকে কি বেঁধে রাখা যায়! সে যে সুদূরের পিয়াসী। 

রবীন্দ্রনাথ তখন নেহাতই যুবক। ইউরোপ ভ্রমণ থেকে ফিরেছেন দেশে। সঙ্গে করে নিয়ে এলেন প্রচলিত আইরিশ ও স্কটিশ লোকগানের 'মেঠো' সুর। এই সুর কবির মনপ্রাণ ভরিয়ে দিয়েছে। বয়স তখন কবির, মাত্র ১৯। ইউরোপ থেকে ফিরে এসে, মুক্তঝরা মনের অন্দরে একমুঠো সতেজতা নিয়ে লিখে ফেললেন, দুটি গীতিনাট্য-- 'বাল্মীকি প্রতিভা', 'কালমৃগয়া'। বাল্মীকি প্রতিভায় ও কালমৃগয়ায় রবীন্দ্রনাথ অভিনয় করেন। তাঁকে দেখতে বড় ভালো লাগছিল। রবীন্দ্রনাথ বাল্মীকি ও অন্ধমুনির চরিত্রে অভিনয় করেন। অত্যন্ত সাবলীল অভিনয় করে দর্শকদের মন জয় করে নেন। দর্শকদের মধ্যে সেদিন বঙ্কিম চট্টোপাধ্যায়, গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শিল্পীদের মনে কোনো নতুন কিছু করার বাসনায় একটা অস্থিরতা থাকে। সেই অস্থিরতা রবীন্দ্রনাথের মনে। কারণ নিয়ম শৃংখলার বেড়া দিয়ে তাঁকে বাঁধতে গেলেই, তিনি সেই বেড়া অতিক্রম করে বেরিয়ে গিয়েছেন। অতিক্রম করে এবার রবীন্দ্রনাথ কিছুদিনের জন্য মুসৌরিতে বাবার কাছে চলে গেলেন। সেখান থেকে ফিরে এসে ভারতী পত্রিকায় লিখলেন উপন্যাস 'বউ ঠাকুরানীর হাট'। তরুণ কবির নাম ছড়িয়ে পড়লো চারিদিকে। ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহল থেকে দেশের বর্হিমহলে ছড়িয়ে পড়লো কবির নাম। ১৮৮২ সালে প্রাকশিত হয় 'সন্ধ্যাসংগীত'। এটা পড়ে বঙ্কিমচন্দ্র অত্যন্ত অভিভূত হয়ে গেছিলেন। পুরস্কার স্বরূপ বঙ্কিমচন্দ্র তাঁর গলার মালা খুলে রবীন্দ্রনাথের গলায় পরিয়ে দেন। তখন রবীন্দ্রনাথের বয়স মাত্র একুশ বছর। এ যেন অগ্রজের হাত থেকে রথের রশি নবীন সারথির হাতে। যেন মিলনমেলায় দুই মনিষীর অন্তরঙ্গ প্রকাশ।      


Follow us on :