Share this link via
Or copy link
প্রসূন গুপ্ত: পার্সি কারা? কোথা থেকে এদের আগমন? এরা কি হিন্দু না মুসলমান? এরকম প্রশ্ন বহু প্রাচীন সময় থেকে চলে আসছে। প্রথমেই বলে রাখা ভালো, আজ ভারতের বাণিজ্যিক যা অবস্থান, তার জন্য কৃতিত্বের অনেকটাই দাবিদার এই পার্সিরা। টাটা, গোদরেজ, মিস্ত্রি বা বালসারা ইত্যাদিরা ভারতের বাণিজ্যের মান উন্নত করেছে চিরকাল। এরা খুব দেশপ্রেমী এবং জাতীয়তাবাদের ভাবনায় অসামান্য। এদের নাম দেখলে মনে হতে পারে এরা হয়তো মুসলমান যেমন ফিরোজ, জামশেদ ইত্যাদি। কিন্তু পদবীতে গেলেই চমক আসে। কারও পদবি দারুওয়ালা, কারও ইঞ্জিনিয়ার, কারওবা ইরানি বা কন্ট্রাক্টর। অর্থাৎ পেশার সঙ্গে যুক্ত থাকা থেকেই এদের পদবি। এরা একসময় পারস্য বা ইরানের বাসিন্দা ছিল। কিন্তু ক্রমশই কালের নিয়মে তাঁরা সিল্করুট ধরে চলে আসে ভারত উপমহাদেশে।
প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর স্বামী স্বদেশী আন্দোলন করা ফিরোজ গান্ধী ছিলেন পার্সি। পরে তিনি গান্ধী পদবী দত্তক নেন। এদের ঈশ্বর অগ্নিদেব বা আগুন। তার মন্দির পর্যন্ত আছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এদের বিয়ে অনেকটাই হিন্দুদের মতো। মৃত্যুর পর এদের মৃতদেহ আগে একটি উঁচু স্থানে ফেলে দেওয়া হতো, কাক শকুনের খাদ্য হতে। কিন্তু আজকাল দাহ করা হয়।
এদের উৎসবে খাওয়া কিন্তু দারুন। বাঙালিদের মতো এরাও আমিষ খাদ্য খান। মাংস বলতে মাটন ও চিকেন। ব্যস অন্য মাংসে এদের ঝোঁক নেই। যে কোনও উৎসবে এদের খাওয়া হয় কলাপাতায়। প্রথমে পরিবেশিত হয় সুস্বাদু সরবত। তারপর পাতে পরে আচার ও ছোট পাঁপড়। কখনও সামান্য ভাজাভুজি থাকলেও তেমন কিছু না। আসে রুটি, যাকে বলে রোটালি সঙ্গে চিকেনের পদ। এরপর সাদা মাটন, যা খেতে অপূর্ব, কাজু ইত্যাদি দিয়ে তৈরি। এরপর আসে ধান ডাল কলমি। একদম শেষে ভাত ডাল আসলেও তা সুস্বাদু। সব শেষে কাস্টার্ড বা পুডিং। বেশ রসালো হয় এঁদের রান্না কিন্তু একটু ভিন্ন স্বাদের। আজকাল মুম্বই ছাড়া এই পার্সিদের সংখ্যা অন্য প্রদেশে খুব কম।