Share this link via
Or copy link
সৌমেন সুর: বাংলা কবিতার দেশ। আধুনিক কালে বাংলার শ্যামল স্নিগ্ধ নরম মাটিতে জন্ম নিলেন সর্বকালের সর্বদেশের আর এক উজ্জ্বল বিস্ময়। তাঁর নাম রবীন্দ্রনাথ, আকাশের মতোই তিনি বিরাট, নদীর মতোই তিনি গভীর, অনন্ত। নিঃসন্দেহে তিনি বরেণ্য কবি। এরপর বাংলা কবিতার প্রবাহে এক নতুন ঢেউ উঠলো। সবাই শুনলেন নতুন এক কন্ঠস্বর। বিস্ময়ের আর সীমা রইল না। হাজার বছর ধরে পথহাটা ক্লান্ত প্রাণ এক কবি। চোখে তার শতাব্দীর নীল অন্ধকার। বিস্ময়ের ঘোর কাটতে না কাটতেই সেই কবি ব্য়ক্তিত্ব হয়ে উঠলো সকলের একান্ত প্রিয়। সেই কবির নাম জীবনানন্দ দাশ। রবীন্দ্র উত্তর যুগের এক ব্য়তিক্রমী কবি।
জীবনানন্দের কবিতার বিষয়-বিষন্ন প্রকৃতি, ইতিহাসের ধূসর পটভূমি, আত্মমগ্ন সৌন্দর্য চেতনা, রোমান্টিক মনন, মানব মনের জটিল রহস্যময়তার স্বরূপ উপলব্ধি। তাঁর কাব্য়ে শুনতে পাই চিরন্তন বাংলার প্রাণের স্পন্দন। এমন নিবিড় মমতা দিয়ে আর কোনও কবি বাংলার প্রাণ প্রতিমা রচনা করেননি। বাংলার কত খাল-বিল, মাঠ-প্রান্তর, ঘাস-লতাপাতা, পাখি তাঁর কবিতায় অমূল্য় সম্পদ হয়ে উঠেছে।
এই বাংলার সঙ্গেই কবির জন্ম জন্মান্তরের সম্পর্ক। এখানেই তাঁর আশা আকাঙ্খা, ব্য়র্থতা-সফলতা। এর আকর্ষণ দুর্নিবার। জন্ম-জন্মান্তরেও এই ঋণ শোধ হওয়ার নয়। বারবার তিনি ফিরে আসতে চান, "ধানসিড়িটির তীরে-এই বাংলায়/ হয়তো মানুষ নয়/হয়তো বা শঙ্খচিল শালিখের বেশে/হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে/কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব, এ কাঁঠাল ছায়ায়।" (চলবে)