০৯ মে, ২০২৪

Rath yatra: পুরীর জগন্নাথের অসম্পূর্ন মূর্তির ইতিহাস আজও গায়ে কাঁটা দেয়
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2023-06-20 11:34:14   Share:   

সারা দেশে বহু জায়গায় রথযাত্রায় (Rath Yatra) জগতের নাথের আরাধনা করা হয়। কথিত আছে এই দিনটিতে জগন্নাথ তাঁর ভাই বলরাম ও বোন সুভদ্রাকে নিয়ে মাসির বাড়ি যান। ফিরে আসেন উল্টোরথের দিন। সব রীতির যেমন ইতিহাস থাকে এই বিশেষ দিনেরও রহস্যময় ইতিহাস রয়েছে। তবে সেই কাহিনী লোকমুখে অনেকটা বদলে গিয়েছে। তবে জনপ্রিয় কাহিনীকে সত্যি বলে ধরে নেওয়া হয়। রবীন্দ্রনাথের পূজা ও প্রার্থনা পর্যায়ের গানে একটি লাইন রয়েছে, 'তুমি আপনি না এলে কে পারে হৃদয়ে রাখিতে!' পুরীতে হঠাৎ জগন্নাথের আগমন নাকি তেমনই এক গিয়ে কাঁটা দেওয়া অধ্যায়।

দেশের অন্যান্য অনেক জায়গায় জগন্নাথ -বলরাম ও সুভদ্রার বিগ্রহে হাত পা দেখা যায়। তবে পুরীর মন্দিরের বিগ্রহে হাত পা নেই। যদিও সেই মূর্তির অনুসরণেই এই রাজ্যের অন্যান্য জায়গায় তিন দেবতার বিগ্রহের আকার প্রচলিত রয়েছে। তবে শোনা যায়, এই অসম্পূর্ন বিগ্রহ তৈরির পিছনে বিশেষ কারণ রয়েছে। এই রথযাত্রা নাকি শুরু হয়েছিল সত্যযুগ থেকে। তখন অবশ্য ওড়িশা ছিল মালব দেশ। সেই সময় মালব দেশের রাজা ছিলেন ইন্দ্রদ্যুম্ন। তিনিই এই জগন্নাথের পূজা শুরু করেছিলেন পুরীতে।

মহারাজকে নাকি জগন্নাথ স্বপ্নাদেশ দিয়েছিলেন তাঁর পুজো করার এবং কথা দিয়েছিলেন তিনি নিজেই আসবেন সেখানে। এই শুনে মহারাজ ইন্দ্রদ্যুম্ন জগন্নাথদেবের জন্য মন্দির তৈরী করেন।  প্রভু কবে আসবেন, তার জন্য কাতর প্রার্থনা করতে শুরু করেন মহারাজ। আবারও তাঁর স্বপ্নে আসেন জগন্নাথ। তিনি বলেন, দ্বারকা নাগরী থেকে একটি নিমকাঠের গুঁড়ি ভেসে আসবে পুরীর সমুদ্রতটে। সেই দিয়েই তৈরী করতে হবে তিন দেবতার মূর্তি। যথা সময়ে পুরীতে ভেসে আসে সেই নিমকাঠ। কিন্তু রাজার কর্মচারীরা কিছুতেই সেই কাঠ কাঁধে তুলতে পারেন না। অবশেষে রাজার অনুরোধে সবর জাতির দলপতি পুরোহিত বিশ্ব বসু একাই কাঁধে সেই কাঠের গুঁড়ি ডাঙায় তুলে আনেন।

এরপর মহারাজ নিজের রাজ্যে ওই মূর্তি তৈরীর কারিগরের খোঁজ করতে থাকেন। এমন সময় সেখানে বৃদ্ধ কারিগরের রূপে উপস্থিত হন বিশ্বকর্মা। তবে তিনি তিনটি শর্ত দেন। এক, কারও সাহায্য ছাড়া তিনি একই মূর্তি তৈরী করবেন। দুই, এই মূর্তি তৈরী হবে বন্ধ দুয়ারের পিছনে, সকলের অলক্ষ্যে। তিন, মূর্তি তৈরী করতে ২১ দিন সময় লাগবে। আর এই ২১ দিনের মধ্যে কেউ সেই মূর্তি চোখে দেখতে পারবেন না।

মূর্তি তৈরি শুরু হতেই মহারাজের স্ত্রী রানী গুন্ডিচা দেবীর আগ্রহ বাড়তে থাকে। বেশ কিছুদিন যাওয়ার পর মন্দিরের ভিতর থেকে কোনও আওয়াজ শোনা না গেলে সকলে মনে করেন বৃদ্ধ কারিগর বোধহয় ক্ষুধায়-তৃষ্ণায় মারা গিয়েছেন। রাজার আদেশে মন্দিরের দরজা খোলা হলে  সেখান থেকে গায়েব হয়ে যান বিশ্বকর্মা। মূর্তি তৈরী হয়ে গেলেও, শুধুমাত্র হাত অসম্পূর্ন রয়ে যায়। এই ঘটনাকে জগন্নাথ দেবের ইঙ্গিত ভেবেই শুরু হয় রথযাত্রা।


Follow us on :