Share this link via
Or copy link
সৌমেন সুর: পাহাড় প্রমাণ বাধা অতিক্রম করে নারীর সম্মানজনক অবস্থান সমাজে আজ স্বীকৃতি পেয়েছে। প্রথমে কয়েকজন, তারপর শতসহস্র কন্ঠে ধ্বনিত হয়েছে প্রতিবাদ। সেই ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদকে দমিয়ে রাখা যাইনি। দুই শতকেরও বেশী সময় ধরে বিশ্বজুড়ে চলেছে নারী আন্দোলন। কিন্তু আজও কি তার প্রয়োজন ফুরিয়েছে!
মহাভারতে দ্রৌপদী শোনিতসিক্ত একবস্ত্রে বলপূর্বক রাজসভায় আনলে একের পর এক ধর্ম ও আইনের যুক্তি তুলে ধরে তথাকথিত ধার্মিক ভদ্রজনদের তীব্র তিরস্কারে মাথা হেট করে দিয়েছিলেন। আবার অন্যদিকে দেখি, ক্রিকেটার মহম্মদ সামির স্ত্রী হাসিন জাহান স্বামীর বিরুদ্ধে বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্ক, শারিরীক ও মানসিক অত্যাচার এবং বিশ্বাস ভঙ্গের মতো অভিযোগ এনে আইনি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েছেন। তখন মনে হয় এও এক প্রতিবাদ। আর একদিকে দারিদ্র সীমার নীচে বসবাসকারী মহিলা, তিনি হিন্দু-মুসলিম যে সম্প্রদায়েরই হোক না কেন, তাদের লড়াই অনেক কঠিন। কারন দেখা যায়, মায়েরা অধিকাংশই নিরক্ষর। কিন্তু ইদানীং চোখে পড়ছে-তাদের তীব্র ইচ্ছা, তাদের মেয়েরা শিক্ষার আলোয় শিক্ষিত হোক। তারা পরের ওপর নির্ভর করে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সরণিতে মেয়েদের ফেলে রাখতে অনিচ্ছুক। সাধারণভাবে সমাজের ধারণা, মেয়েদের জন্য শিক্ষায় লগ্নি করা লোকসান। কারণ তার ফলভোগ করে অন্য পরিবার। তাই সেই অর্থ শিক্ষায় খরচ না করে বরপনের জন্য তুলে রাখা শ্রেয়। এখানেই হতদরিদ্র মায়েরা মরিয়া হয়ে উঠেছে। এটা সত্যিই একটা আলোর দিক।
নিরাপত্তার দিকটায় আসি। আমাদের দেশে বিভিন্ন রাজ্যে যখন নারী ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটে তখন যারা নারীর পোশাক নিয়ে আলোচনা করেন বা মেয়েরা কেন সিগারেট খাবে, কেন বেশী রাতে বাড়ি ফিরবে বলে তার দিকে আঙুল তুলবে! তাদের যদি প্রশ্ন করা হয়, কোন দৃষ্টিকোণ থেকে তিনবছরের শিশুকন্যা এবং সত্তর বছরের বৃদ্ধাকে যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হয়, তখন সমাজরক্ষকরা কি উত্তর দেবেন?
আন্তর্জাতিক দিবসে প্রতিবছর সেমিনার রুমের ঠাণ্ডা ঘরে বসে কেতাবি নারীমুক্তি নিয়ে ভাষণ, তর্কবিতর্ক হয়, কিন্তু বাস্তব চিত্রের পরিবর্তন হয় কি? পরিবর্তনের ছবিতে এটুকু দেখা যাচ্ছে, আগের চেয়ে নারীরা বর্তমানে অনেক বেশী ডেভলপড। সাফল্যের মাপকাঠিতে তারা উচ্চশিখরে। তবু সমাজের নারীদের নিরাপত্তায় আমাদের এগিয়ে আসা উচিত। যাদের চোখেমুখে সত্যতার বলিষ্ঠ ছাপ চিহ্নিত হয়ে আছে-তারাই একটা নবদিগন্তের পথ খুলে দিতে পারেন। তথ্যঋণ-সর্বাণী