১৫ মে, ২০২৪

Special: কুড়িয়ে পাওয়ার আনন্দ (১ম পর্ব)
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2023-04-18 12:29:24   Share:   

সৌমেন সুরঃ বিষয়টির ওপর কিছু বলতে গিয়ে কয়েকটা কথা মনে পড়ে যাচ্ছে, সেগুলো না বললে বিষয়টা সম্পূর্ণ হবে না। যেমন, প্রত্যাশিত প্রাপ্তিযোগে মনে আনন্দ আসে, কিন্তু যা অপ্রত্যাশিত, সেই প্রাপ্তিযোগ মনকে অসম্ভব নাড়া দেয়। শুধু টাকা, পয়সা বা মূল্যবান জিনিস নয়, অপ্রত্যাশিত যে কোনো জিনিস পাওয়া সুখপ্রদ। জীবনে বিভিন্ন অবিস্মরণীয় ঘটনা অপ্রত্যাশিত, তা নানা কুডিয়ে পাওয়ার উজ্জ্বল মুহূর্তের সমষ্ঠি, তাই নয় কি?

আমার ছেলেবেলা থেকে গল্পটা বলি। তখন আমি একটা প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। কোনো কোনোদিন স্কুলে টিফিন নিয়ে যাই। তবে মজার ব্যাপার হলো, যেদিন দু-এক টাকা বড়দের কাছ থেকে পাই, সেদিন আমার ইচ্ছেমতো জিনিস কিনে খাওয়ার আনন্দে মনটা ভরপুর হয়ে ওঠে। এমনিই একটা দিন আমার। ঢোলা হাফ প্যান্ট আর হাফশার্ট পরে স্কুলের পথে চলেছি। মনের অজান্তে পকেটে হাত গলিয়ে অনুভব করি, আমার পকেটে একটা দু'টাকার নোট। বারবার মনে ঘুরেফিরে আসছে-কখন টিফিন হবে আর আমি আমার ইচ্ছেমতো আলুকাবলি বা ছোলামাখা, একটা সবুজ রঙের আইসক্রিম খাবো। এইসব ভাবতে ভাবতে প্রায় স্কুলের সামনে চলে এসেছি। এমন সময় আমার নাম ধরে ডাকতে ডাকতে আমার সহপাঠী আমার কাছে এসে বলে, তোমার পকেট থেকে এই দু'টাকা পড়ে গিয়েছিল, নাও ধরো। আমি দ্রুত আমার পকেটে হাত গলিয়ে দেখি, টাকাটা নেই। এইবার একই সঙ্গে হারানোর দুঃখ আর পর মুহুর্তে ফিরে পাওয়ার আনন্দে আমি আত্মহারা, স্তব্ধবাক। 

এরপর থেকে সহপাঠী বন্ধু আমার প্রাণের বন্ধু হয়ে দাঁড়ায়। দু'জনে মিলে পথে ঘাটে মাঠে জঙ্গলে কতকিছু কুড়িয়ে বেড়িয়েছি, কুড়িয়ে পেয়েছি। তার সবকিছু আজ মনে পড়ে না। তবে সেইসব স্যাঁতস্যাঁতে ডাকটিকিট, তামার এক পয়সা, সোনালি পালক, আরো কতকিছু কুড়িয়ে পাওয়ার আনন্দ আজও বুকের মধ্যে ভিড় করে।


Follow us on :