Share this link via
Or copy link
সৌমেন সুরঃ মানুষের কল্যাণে সমাজ। সমাজের কল্যাণেই মানুষ। সমাজের ভালখারাপ মানুষের ইচ্ছের ওপর নির্ভর করে। আমরা মোদ্দা কথাটা জানি, মনুষ্যত্ব নিয়েই মানুষ। মনুষ্যত্ব বিহীন মানুষ-অমানুষ। যে জীবন নিজের সুখে মগ্ন, সে জীবন স্বার্থপর। সে জীবন অমানবিকতায় পঙ্কু। তাই চোরাপথে জীবনের যে সাফল্য, তা বেশিদিন টেকে না। আসলে নীতিবোধ মানুষের জীবনে বড় আশ্রয়। ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে সমাজ জীবনের সম্পর্ক নিবিড়। আজকের ব্যবসায়, স্বার্থটা-বড়। অভাব হলো নীতিবোধের। সর্বত্র ভেজালের মহিমা। ওষুধে ভেজাল, চাল, ডাল তেল, আটা এমনকি রান্নার মশলাপাতিতে পর্যন্ত ভেজাল। পোস্তয় ভেজাল। শাকসবজি, বেগুন, পটলে তীব্র পরিমাণে বিষ তেলের প্রয়োগ। শরীরের পক্ষে কত অস্বাস্থ্যকর। পৃথিবীতে ভারতের মতো আর কোনো দেশে খাদ্যে এত ভেজাল মেশানো হয় না। এক্ষেত্রে আমাদের দেশ বোধহয় শীর্ষে। বাড়ি তৈরী করবেন? গালে হাত দিয়ে ভাবতে হবে আপনাকে, কারণ সিমেন্টে ভেজাল। এমনকি যে শাকসবজি খেয়ে একটু স্বস্তি পাবেন, তাতেও ভেজাল, কারণ তাতে রং করানো হয়। এভাবেই বেড়ে চলে অসাধু ব্যবসায়ীদের মুনাফার অঙ্ক।
ভেজাল ব্যবসায়ীদের রোধ করা যাচ্ছে না কেন? ভেজাল খাবার খেয়ে কত মানুষ অসুস্থ হয়ে যায়। কেউ কেউ মৃত্যুর কোলেও ঢলে পড়ে। এসব দেখেও অসাধু ব্যবসায়ীদের কোনো চেতনা নেই। তারা মুনাফা লুটতেই ব্যস্ত। ঘৃণ্য ব্যবসায়ীদের এখানে কঠোর শাস্তি হয় না। তবে দুর্নীতি দমনের জন্য একসময় গঠিত হয়েছিল 'সদাচার সমিতি'। কিন্তু কোনো কার্যকর হলো না। সদাচার সমিতি ভরে উঠলো বাস্তু ঘুঘুদের নিয়ে। অবশেষে তৈরি হলো ভেজালরোধে 'খাদ্য ভেজাল নিবারনী বিধি।'সে আইনেও অসাধু ব্যবসায়ীদের ঘায়েল করা গেল না। আসলে আইন দিয়ে কখনও মানুষের হৃদয় পরিবর্তন করা যায় না। দরকার মানবিক বোধ। এই চেতনা যতদিন ব্যবসায়ীদের না হচ্ছে ততদিন সমাজে ভেজাল অটুট থাকবে। ভেজালের সর্বনাশা বিভীষিকা থেকে মানুষের কি কোনো মুক্তি নেই? ভেজাল সমাজের একটা রীতিমত ভয়ানক অপরাধ। এক্ষেত্রে সরকারের দিকে তীব্র দৃষ্টি আকর্ষন করছি।