Share this link via
Or copy link
সৌমেন সুর: রঞ্জিতবাবু রবীন্দ্রনাথকে বিনম্র প্রণাম জানিয়ে বললেন,'কাজী নজরুল ইসলাম একটা খুব অন্যায় কাজ করে ফেলেছেন। তিনি আপনার 'নমো হো নমো' গানটির অনুকরনে একটি হাসির গান লিখে ফেলেছেন। আর তার থেকেও বেশি অন্যায় করে ফেলেছি আমি নিজে। আমি গানটি রেকর্ড করে ফেলেছি। অন্যায় জেনেও গানটি একবার শোনার অনুরোধ করছি। যদি মনে করেন তবেই অনুমোদন দেবেন।'
কবিগুরু গানটি চালাতে বললেন। শুনতে শুনতে কবির মনে কৌতুক প্রকাশ হল। আবার চালাতে বললেন। এবার শোনার পর বললেন,'অনুমতি দিতে পারি একটা শর্তে। বার্তাটি হল তিনটে রেকর্ড দিতে হবে।' সবাই শুনে হেসে ফেললেন। এভাবেই জন্ম হল প্যারোডি গানের। যাত্রা শুরু হল সেই তখনই। এরপর এই কাজে এগিয়ে আসেন তৎকালীন দুই কবি কুমুদরঞ্জন মল্লিক ও সতীশ ঘটক। সতীশ ঘটক কবিগুরুর একটি গান, 'তুমি কেমন করে গান করো হে গুণী'র অনুসরণ করে লেখেন, 'তুমি কেমন করো পান করো হে চুনি'। আর কুমুদরঞ্জন মল্লিক রবিঠাকুরের 'সে যে কাছে এসে' এই রবীন্দ্রসঙ্গীতের অনুসরনে লেখেন, 'আমার পাকার যখন কথা ছিল।' কিন্তু দু'জনের কারও অনুমতি পাওয়া হল না, কারণ গুরুদেব প্রয়াত হন।
মিন্টু দাশগুপ্ত ও দীপেন মুখোপাধ্যায় দু'জনেই অপেক্ষা করে বলেন, বিচিত্রানুষ্ঠানের স্বাদ বদলের জন্য থাকতো প্যারোডি গান, হাস্যকৌতুক, মুকাভিনয়, আবৃত্তি ইত্যাদি। কিন্তু হঠাৎ করেই এগুলো সব হারিয়ে গেল। দীপেনবাবুর কথায় 'লক্ষ্য করে দেখবেন জীবনমুখী, ব্যান্ডের নামে যেসব গান হচ্ছে তার অনেকগুলোই প্যারোডি। পাতালঘর ছবিতে খরাজ মুখার্জির গানটার কথা ভাবুন। তাহলে আমাদের বেলায আপত্তি কেন!'
সবশেষে বলতে হয়, বর্তমানে হাসি জীবন থেকে প্রায় উঠে গিয়েছে। সেখানে যদি প্যারোডি গান হাসির মোড়কে জীবন যন্ত্রণার কথা তুলে ধরা যায়-তাতে ফল ভালো ছাড়া খারাপ কোথায়! আশা করছি-আবার যেন বাজারে প্যারোডি গানে রমরমিয়ে ওঠে। তথ্যঋন- দীপক মজুমদার। (সমাপ্ত)