২৭ এপ্রিল, ২০২৪

Special: অসীম সাহসী বীরাঙ্গনা ঝলকারি বাঈ (শেষ পর্ব)
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2022-12-07 10:37:08   Share:   

সৌমেন বসু: ঝলকারি বাঈ ছোট থেকেই অসীম সাহসী ও দৃঢ় চরিত্রের মেয়ে ছিলেন। ঝাঁসির রানী লক্ষ্মীবাঈয়ের যোগ্য সহচরী ছিলেন। দরিদ্র দলিত পরিবারের সন্তান হলেও, ঝলকারির বাবা নেয়েকে ঘোড়ায় চড়া ও অস্ত্র চালনা শিক্ষায় পারদর্শী করেছিলেন। ঝাঁসির কাছে ভোজনা গ্রামে ঝলকারি জন্মগ্রহণ করেন। সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণে ঝলকারির কৃষক বাবা মেয়েকে বেশি দূর পড়াশোনা করাতে পারেনি। শোনা যায়, ঝলকারি ঘরের কাজকর্ম সেরে জঙ্গলে কাঠ কাটতে যেতেন। একদিন তিনি এই কাজ করতে গিয়ে বাঘে খপ্পরে পড়লেন। একদম ভয় না পেয়ে বাঘের সঙ্গে লড়াই করে কুড়ুলের আঘাতে সেই বাঘকে মেরে ফেললেন। এমন সাহসী ছিলেন তিনি...প্রথম পর্বের পর

ফিল্ড মার্শাল হিউরোজ তাঁর সেনাবাহিনী নিয়ে একবার ঝাঁসি আক্রমণ করলেন। মাত্র চার হাজার সেনা নিয়ে রানী ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে মরণপণ লড়াই করলেন। হিউরোজ ভাবলেন ঝাঁসির রানীকে এভাবে পরাস্ত করা যাবে না। ব্রিটিশ বাহিনী উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লো। কিন্তু দুর্ভাগ্য লক্ষ্মীবাঈয়ের। তাঁর সেনাবাহিনীর একজন বিশ্বাসঘাতকতা করে দুর্গের একটা দরজা খুলে দেন। সেই দরজা দিয়ে ব্রিটিশ সৈন্যরা দলে দলে প্রবেশ করেন। সেই সময় একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিলেন ঝলকারি বাঈ। তিনি লক্ষ্মীবাঈকে বাঁচানোর জন্য রানীর সাজ পোশাক নিজে পরলেন, আর কিছু সৈন্য নিয়ে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করলেন। সবাই ভাবলো রানী লড়াই করছেন। এই ফাঁকে রানী তাঁর শিশুপুত্রকে পিঠে বেঁধে ঘোড়ায় চেপে সকলের চোখকে ফাঁকি দিয়ে ঝাঁসি ত্যাগ করলেন।

এদিকে, খবর রটে যায় ঝলকারি বাঈ, ঝাঁসির রানী লক্ষ্মীবাঈ নয়। যুদ্ধ করতে করতেই ঝলকারি ধরা পড়েন। লক্ষ্মীবাঈয়ের বিশ্বাসঘাতক সৈন্য তাঁকে ধরিয়ে দেয়। পরে ঝলকারিকে মুক্তি দেওয়া হয়। অন্য একটি মতে, ঝলকারি বাঈ যুদ্ধ করতে করতে কামানের গোলার আঘাতে মাটিতে পড়ে যান। তখন শুধু মাটিতে উচ্চারণ হয় জয় ভবানী।

দীর্ঘ সময় পর্যন্ত এই বীর নারীর গাঁথা ইতিহাসের পাতায় অবহেলিত ছিল। কোরি সম্প্রদায় প্রতি বছর ঝলকারি বাঈয়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শহিদ দিবস পালন করে। ভারত সরকার ২০০১ সালের ২২ জুলাই ঝলকারি বাঈকে স্মরণ জানিয়ে ডাক টিকিট প্রকাশ করে। ঝাঁসি দূর্গের মধ্যে একটি মিউজিয়ামকে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ ঝলকারি বাঈয়ের নামে উৎসর্গ করে। এমন বীর নারীর প্রতি রইলো অন্তরের গভীর শ্রদ্ধা।     


Follow us on :