২৬ এপ্রিল, ২০২৪

Special: বাংলায় প্রথম ফিঙ্গারপ্রিন্ট আবিষ্কার (শেষ পর্ব)
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2023-03-20 12:27:28   Share:   

সৌমেন সুরঃ মারা যাওয়া পেনশন প্রাপকের বদলি লোক কিংবা গ্রামের অন্য কেউ প্রকিস দিয়ে পেনশন তুলছে। সুতরাং হার্শেল সাহেব তার হুগলি বিদ্যেটা কাজে লাগালেন। তিনি ঘোষণা করলেন, পেনশন প্রাপকের সাক্ষর ছাড়াও আঙুলের ছাপ দিতে হবে। কিছুদিনের মধ্যে কাজ শুরু হবার পর ফল হাতেনাতে পাওয়া গেল। পেনশন প্রাপকদের সংখ্যা ক্রমশ কমতে আরম্ভ করলো। এই ঘটনায় হার্শেল সাহেব উৎসাহিত হয়ে দলিল রেজিস্টেশনের ক্ষেত্রেও আঙুলের ছাপ নিতে আরম্ভ করলেন, যাতে বিক্রেতা অস্বীকার করতে না পারে এবং ক্রেতাও বিক্রেতার সই জাল করে জমি আত্মসাৎ করতে না পারে। কিন্তু হার্শেলের দুর্ভাগ্য কয়েদিদের শনাক্তকরনের ক্ষেত্রে তিনি এই পদ্ধতি প্রয়োগ সরকারকে রাজি করাতে ব্যর্থ হলেন। তা না হলে সেইসময় ১৮৬০/৬২- তেই ফিঙ্গারপ্রিন্টের আবিষ্কার স্বীকৃত হতে পারতো।

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দেহের বিভিন্ন অঙ্গ এবং পূর্ণাঙ্গ হাতের ছাপ নিয়ে নানান সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেও প্রকৃত ফিঙ্গারপ্রিন্টের তদন্তের আনুষ্ঠানিক সূচনা কলকাতা থেকেই। বিখ্যাত ফিঙ্গারপ্রিন্ট ব্যুরো অধিকর্তা বিদ্যুৎ নাগের একক প্রচেষ্টায় আজ প্রমণিত, কলকাতাই ফিঙ্গারপ্রিন্টের তদন্তের উৎস। এই প্রসঙ্গে তাঁর বর্ণনায় পাই, কর্মব্যস্ত একজন ইংরেজ আই সি অফিসার এডওয়ার্ড রিচার্ড হেনরি পুলিস ইনসপেক্টার জেনারেল হিসাবে দায়িত্ব নিয়েই তিনি অপরাধী শনাক্তকরনে উঠেপড়ে লেগে যান।

বিজ্ঞানী গ্যালটনের প্রমাণিত সূ্ত্র ধরে হেনরি ফিঙ্গারপ্রিন্টকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিলেন শনাক্তকরনের ব্যাপারে। ফ্যান্সের দেহাঙ্গমিতির সংশোধিত রুপটি হেনরির চেষ্টায় বাংলা তথা ভারতে ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রশংসা পায়। ১৮৯৬ সালে পুলিসের সার্কুলারে আঙুলের ছাপকে প্রধান করে। হেনরি অবশেষে স্বীকার করেন, 'অঙ্গলিছাপ' সূ্ত্রটি একশো শতাংশ নির্ভুল রুপে মত দেন দুজন বাঙালি সাব ইন্সপেক্টর। একজন আজিজুল হক, অন্যজন হেমচন্দ্র বসু। তবে সূ্ত্রটি আজও হেনরি পদ্ধতি নামে সারা বিশ্বে প্রচলিত। ১৮৯৭ সালে ফিঙ্গারপ্রিন্টের ব্যাপারে অনুমোদন পাওয়ার পর ভারতবর্ষে বাংলার মূখ্যকার্যালয় রাইটার্স বিল্ডিং-য়ে ফিঙ্গারপ্রিন্টের কার্যালয় আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করে। (সমাপ্ত) তথ্যঋণ/ বিশ্বজিৎ বন্দ্যোপাধায়

                                      



Follow us on :