Share this link via
Or copy link
সৌমেন সুর: বাংলা তথ্যচিত্রের স্বার্থক রূপায়ন পেতে আমাদের সময় লেগেছিল একটু বেশি। ১৮৯৫ সালে চলচ্চিত্রের জন্মলগ্ন থেকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে আমরা যা যা পেয়েছি, সেগুলোর কোনও নান্দনিক মূল্য ছিল না। সব দেশেই স্বল্পদৈর্ঘ্যর অনেক চিত্ররূপ তৈরি হয়েছিল, যা অতি সাধারণ এবং বিজ্ঞাপনী চিত্র। সার্থক তথ্যচিত্র আমরা পেলাম ১৯২২ সালে রবার্ট ফ্লাহার্টির তৈরি 'Nanook of the North' ছবি থেকে। মিস্টার ফ্লাহার্টি সব তথ্যচিত্র নির্মাতাদের গতিপথ নির্ধারণ করে দিলেন। ফ্লাহার্টির 'নানুক' এমন একটি ছবি যা বাস্তবতাকে ফুটিয়ে তোলার লিরিক্যাল গুনে তথ্যচিত্র সম্পর্কে মানুষের ধারণা বদলে দিলেন। কানাডার তুষার ঢাকা জমিতে এস্কিমোদের জীবন সংগ্রামে 'নানুক' নামে এক শিকারির মধ্যে দিয়ে যেভাবে তিনি তথ্যচিত্রটি তুলে ধরলেন, যা শিল্প সুষমা এবং নান্দনিকতায় অসামান্য।
তথ্যচিত্রের এই যে জয় যাত্রা শুরু হল এরপর একে একে গ্রিয়ারসন, আইজেনস্টাইন, আলবার্তো কাভালকাইন, পুডভকিন--এঁরা বিষয়ে, চিন্তায়, টেকনিকে তথ্যচিত্রকে অন্য মাত্রা এনে দেয়। যার ফলে তথ্যচিত্র একটি পৃথক ও স্বয়ংসম্পূর্ণ মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। তথ্যচিত্র মানে বাস্তব তথ্যনির্ভর অ-কাহিনী চিত্র। এখানে কাল্পনিক বিষয়ের কোনও স্থান নেই। আমরা নানা ধরনের তথ্যচিত্র দেখতে পাই। যেমন প্রামানিক, প্রাসঙ্গিক, অবস্থানগত, তথ্যমূলক, জীবনীকেন্দ্রিক এবং ভ্রমণমূলক।
সম্ভবত পাঁচের দশকে যে কয়েকজন শিক্ষিত সিনেমাপ্রেমী তরুণ কলকাতায় ফিল্ম সোসাইটি মুভমেন্ট গড়ে তুলেছিলেন, ভালো ছবি তৈরির চর্চা শুরু হয়েছিল তাঁদেরই উদ্যোগে। তথ্যচিত্রের ক্ষেত্রে সর্বপ্রথমে উল্লেখ করতে হয় হরিসাধন দাশগুপ্তের কথা। তবে ভারতে প্রথম তথ্যচিত্রের চালিকাশক্তি হলেন পল জিনস। যিনি ছিলেন এক যুদ্ধবন্দি। (ক্রমশ)