১২ মে, ২০২৪

Kalpana Dutta: স্বাধীনতা সংগ্রামী বীরকন্যা কল্পনা দত্ত (শেষ পর্ব)
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2023-09-18 14:49:17   Share:   

সৌমেন সুর: জেল থেকে মুক্তির পর কল্পনা দত্ত রবীন্দ্রনাথ ও দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজকে ধন্যবাদ জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। উত্তরের রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, 'তোমার চিঠি পেয়ে আমি খুশি হয়েছি। দীর্ঘদিন বন্দি থাকার পর তুমি মুক্ত হয়েছ। তুমি এখন দিনে দিনে শান্তি ও শক্তি লাভ করো। আমাদের দেশে অনেক কাজ করার আছে। তার জন্য দৃঢ়তা ও সুনিয়ন্ত্রিত মন থাকা চাই। দুঃখ ও নির্যাতনের অভিজ্ঞতাই তোমার জীবন পূর্ণতা লাভ করুক। এই আমার আশীর্বাদ তোমার শুভার্থী- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।' জেলে থাকাকালীন তিনি সংকল্প করেন দেশের জন্য মাস্টারদা তারকেশ্বর দস্তিদার এবং বহু কর্মী প্রাণ দিয়েছেন, তাদের অসমাপ্ত কাজ সম্পাদন করবেন তিনি।

ইতিমধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। তার ওপর পুলিশের নির্দেশ জারি হল, ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাকে কলকাতা ছাড়তে হবে। তিনি চট্টগ্রাম ফিরে যেতে বাধ্য হন। চট্টগ্রামে তখন জাপানি বোমা পড়ছে। বার্মা থেকে দলে দলে কেউ হেঁটে, কেউ নৌকায় চেপে ভারতের চলে আসছে। অন্য জেলার লোকও চলে আসছে। এদিকে জীবনযাত্রার মানও গেছে পাল্টে। চট্টগ্রামে যুদ্ধের জন্য ব্রিটিশ-আমেরিকান, আফ্রিকান ও ভারতীয় সৈন্য ছেয়ে গেছে। দিনকে দিন জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলেছে। মিলিটারি রাস্তা বাধার জন্য জমি অধিগ্রহণ করছে। এদিকে খাদ্যের সন্ধানে দলে দলে মানুষ শহরের পথে ঘাটে আশ্রয় নিয়েছে। কত মানুষ না খেতে পেয়ে রাস্তায় মরে পড়ে আছে। দুটো ভাত দাও ফ্যান দাও-এর কান্না ভেজা গলা। বিচলিত মানুষ। এই সবকিছু সাক্ষী কল্পনা দত্ত। পুরোপুরি সেবায় নিয়োজিত করলেন নিজেকে। খাওয়া, চিকিৎসা এমনকি নৈশ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা সমস্ত কাজ করতে লাগলেন।

এরপর দেশভাগের পর ভারতে চলে আসতে বাধ্য হলেও এবং চাকরি গ্রহণ ছাড়া বাঁচার পথ না থাকলেও, তিনি শিক্ষামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। রুশ ভাষা শিক্ষায়তনের দায়িত্বে কাজ করেছেন। স্বাধীনতা সংগ্রামী কল্পনা দত্ত পড়াশোনা করতেন বিস্তর। দেশ বিদেশের প্রচুর নামিদামি লেখক এর বই পড়তেন। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে 'বীরকন্যা' রূপেই চিহ্নিত হয়ে আছেন কল্পনা দত্ত। তথ্যঋণ- কল্পতরু সেনগুপ্ত


Follow us on :