Share this link via
Or copy link
প্রসূন গুপ্ত: বহু বছর আগে প্রয়াত ভারত অধিনায়ক টাইগার পাতৌদি বলেছিলেন, স্পিনারকে পা বাড়িয়ে খেলতে হয়, কিন্তু পিছনের পা-টি যেন পপিং ক্রিজে থাকে। আজকের ক্রিকেটে ওই আপ্তবাক্য কেউই মানে না। অন্তত আইপিএলে, সে কারণেই সিক্সারও যেমন হয়, তেমনি আউটও হচ্ছে নিয়মিত। যদিও বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিষয়টিকে ক্রিকেটের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া যায় না। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে উদাহরণটি কিন্তু অস্বীকার করা যায় না। এজলাস বা কোর্টের প্রধানের আসনটি মোটেই খেলার স্থান নয়। অন্যদিকে বিচারপতির আদেশ শিরোধার্য করতে হবে এটাই দস্তুর। কিন্তু এখানেও নিয়ম নিশ্চিত আছে যে, মাননীয় বিচারপতি তাঁর প্রক্রিয়ায় কীভাবে এগোবেন বা কী আদেশ বা রায় দেবেন তা সর্বদা তাঁর নিজস্ব বিষয়। কে দোষী বা সন্দেহভাজন তা বিচারপতি আদেশের আগে প্রচার করেন না।
তিনি দুই পক্ষের কথা শুনে রায় বা আদেশ দেবেন এটাই চিরায়ত। শিক্ষা সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় একটি টিভি চ্যানেলে গত সেপ্টেম্বর মাসে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। সেখানে এই শিক্ষা সংক্রান্ত মামলায় কী হচ্ছে বা তিনি কী ভাবছেন অথবা তাঁর ধরন কী, তা অনেকটাই প্রকাশ করে ফেলেছিলেন। যা আইনসিদ্ধ কিনা তাই নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিতর্ক তুঙ্গে ছিল।
অভিজ্ঞ আইনজীবীরা বলেছিলেন, এসব তিনি আদেশ দেওয়ার আগে বলে ঠিক কাজ করেননি। ওই সময়ে বর্তমান সরকার বিরোধী মহলে তিনি নায়ক হয়ে উঠেছিলেন। তাঁর নামে পোস্টার পড়েছিল বিভিন্ন স্থানে। এরপর তাঁকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছে, এমনকি পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেও। মূল বিষয়ের বাইরে তিনি এজলাসে নাম করেছেন রাহুল গান্ধীর বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের, যাঁরা এই মামলায় ছিলেনও না। এই সমস্ত নিয়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের এজলাসে অভিযোগ জমা পড়ে গঙ্গোপাধ্যায়ের নামে। সমস্ত দিক বিচার করে প্রধান বিচারপতি শিক্ষা সংক্রান্ত মামলা থেকে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে সরিয়ে দিলেন। এমনটাই নাকি হওয়ার ছিল বলেই ধারণা আইজীবী মহলে। রাতারাতি নায়ক থেকে ট্রাজিক কিংয়ে চলে আসলেন তিনি। এরপর সম্মানের সঙ্গে তিনি কী করেন সেটাই দেখার।