২৭ এপ্রিল, ২০২৪

Year: হ্যাপি নিউ ইয়ার, কেমন থাকবে ২০২৩-র আর্থিক অবস্থা? বিশ্লেষণে সিএন-র প্রধান সম্পাদক
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2023-01-01 15:26:39   Share:   

সন্দীপন দাস (প্রধান সম্পাদক, ক্যালকাটা নিউজ): প্রথমেই আপামর সংবাদ ও টেলিভিশনপ্রেমী আমার প্রিয় দর্শকদের নতুন বছর ২০২৩-র আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানাই। আমরা সারাটা দিন ধরে খবর করি শুধুমাত্র আপনাদের জন্যই এবং এর জন্য আপনাদের শুভেচ্ছা ও পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি আমাদের পাথেয়। এই নতুন বছর কেমন যাবে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে আপনাদের মনে। প্রথমেই বলি দেখুন আমি জ্যোতিষী নই, কিন্তু বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতি যে পথে যাচ্ছে তার দুটি দিক আছে।

১) অর্থনীতি চলে অবস্থান ও পরিস্থিতির উপর। বলা যেতে পারে পোস্ট কোভিড পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বের অর্থনীতি যথেষ্ট চাপে। প্রায় কিছু করতে না পেরে জীবন-জীবিকা থেকে দু'বছর চলে যাওয়া মানে কতটা পিছিয়ে যাওয়া? বুঝতে পারছেন। গত দু'বছরেরও বেশি সময়ে সারা বিশ্বের উৎপাদন (তা যে কোনও ক্ষেত্রেই হোক) কমেছে। 

একদিকে আমেরিকা ও ইউরোপে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু, তেমনটি এদেশে না হলেও ভারতের অবস্থাও জটিল হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ঠারেঠোরে সে কথা জানিয়েছেন। কিন্তু এও বাস্তব তিনি প্ল্যানিং কমিটিগুলির সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করে ঘুরে দাঁড়ানোর সংকল্প নিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় এবিষয়ে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সহযোগিতা দরকার। সহযোগিতা দরকার বাংলারও। কারণ এই ভারতবর্ষ নানা ভাষাভাষীর দেশ এবং পরিভাষায় ইউনাইটেড স্টেটস বা অঙ্গরাজ্যের মিশেল। এটার উপরই সবার আগে জোর দেওয়া দরকার 

২) অন্যদিকে আমরা জানি গঙ্গার পার একদিকে যেমন ভাঙে, অন্যদিকে তেমন গড়ে। শিল্পের ক্ষেত্রে আমাদের এমন বাণিজ্যে যেতে হবে যা সরাসরি বিশ্ববাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এটা তো বাস্তব এই মুহূর্তে যখন ইউরোপ পিছিয়ে যাচ্ছে, তখন ভারত উন্নয়নশীল দেশ। বিশ্বব্যাঙ্কও নানাভাবে সেটা স্বীকার করেছে।  

ব্যবসা করা সরকারের কাজ নয়। প্রথম বিশ্বের কোনও দেশই তা করে না।  সরকারের কাজ ব্যবসার পরিসর বা আবহাওয়া তৈরি করে দেওয়া। বেসরকারি সংস্থার হাতে থেকে আর্থিক ক্ষমতা কখনও উন্নত দেশের প্রশাসকরা বাণিজ্যর ক্ষেত্রে নিজেদের কাঁধে নেয় না। ভারতবর্ষ স্বাধীন হওয়ার পর পণ্ডিত নেহেরু ভারতের অর্থনীতির কাঠামো সমাজতান্ত্রিক ধাঁচে গড়ে তুলেছিলেন। ব্যতিক্রম হয়নি ইন্দিরা গান্ধীর আমলেও। 

এতে সমস্যা হয়েছে, প্রথমত নিয়মিত হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সরকারি ভর্তুকির আয়োজন। ফলে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সরকারি কোষাগার। দ্বিতীয়ত দেশের ব্যাংকিং পলিসি। সেখানেও ব্যবসায়ীদের পকেট থেকে ট্যাক্স নিয়ে আমজনতাকে প্রচুর পরিমাণে ব্যাঙ্ক সুদ দেওয়ায় অর্থনীতিতে চাপ পড়েছিল। বলা ভালো রাজকোষে ঘাটতি দেখা গিয়েছে।

সেখান থেকে নরসিমা রাও বিশ্ববাজার ধরার জন্য বিশ্বায়নের পথেই হেঁটেছিলেন। তাঁর সেই পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করেছিলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী ডক্টর মনমোহন সিং। অর্থবহ বাজেট করে অনেকটাই সামাল দিয়েছিলেন পরিস্থিতি। এটা একটা দীর্ঘসূত্রী কাজ, যা কিনা ধরে রাখতে কয়েক দশক চলে যায়। যা ধরতে পেরেছিলো ইজরায়েল বা দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলি। ভারত সেই পথেই এগোতে গিয়ে ধাক্কা খেলো করোনা আবহে।

কাজেই ফের নতুন করে চলা। আমি আশাবাদী, দ্রব্যমূল্য থেকে জনতার পকেটে অর্থ বিষয়টি ফের নতুন করে ভাবতে হবে সরকারকে। মানুষের হাতে টাকা থাকলেই ঘুরবে অর্থনীতির চাকা। আমাদের ঘুরে দাঁড়াতেই হবে কারণ বিশ্ববাজারে ভারতের স্থান কিন্তু শীর্ষে। একই সঙ্গে বাংলার দিকেও তাকিয়ে ভূ-ভারত। তাই বছরের প্রথম দিনে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি রইলো নতুন বছরের অনেক অনেক শুভেচ্ছা। ঘুমনোর আগে আমাদের অনেক পথ এখনও যাওয়া বাকি। কারণ কবি বলেছেন, Miles to go before I sleep (অনুলিখন: প্রসূন গুপ্ত)


Follow us on :