০৯ মে, ২০২৪

Bangla: আমি কোন কথা যে বলি! কোন পথে যে চলি!
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2024-02-22 13:03:27   Share:   

'আমি কোন কথা যে বলি! কোন পথে যে চলি!' গানের লাইনটি ভীষণ ভাবে সার্থক এ ক্ষেত্রে, যেখানে বাংলা ভাষা প্রয়োগ নিয়ে বাঙালিরা কেত দেখানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু কেন? কারণ, জানেন সারাদিনে আমরা যা বলি তার মধ্যে কত শতাংশ বাংলা?

চায়ের কাপে বিস্কুট ডুবিয়ে খাওয়ার সময় হঠাৎ মাথায় আসলো যে এই চা চীনা শব্দ। আবার বিস্কুট ফরাসি শব্দ। বিস্কুটের সাথে থাকা চানাচুর হিন্দি। চায়ে যে চিনি ও পানি থাকে সেখানে চিনি চীনা অথচ পানি হিন্দি শব্দ। আবার চা ভর্তি পেয়ালাটা ফারসি কিন্তু কাপটা ইংরেজি শব্দ। এদিকে ইংরেজি শব্দটাই আবার পর্তুগিজ। চা চীনা হলেও কফি কিন্তু তুর্কি শব্দ। আবার কেক পাউরুটির কেক ইংরেজি, পাউরুটি পর্তুগীজ। 

একটু দামী খানাপিনায় যাই। আগেই বলে রাখি, খানাপিনা হিন্দী আর দাম গ্রীক। রেস্তোরাঁ বা ব্যুফেতে গিয়ে পিৎজা, বার্গার বা চকোলেট অর্ডার দেওয়ার সময় কখনও কি খেয়াল করেছেন, রেস্তোরা আর ব্যুফে দুইটাই ফরাসী ভাষার, সাথে পিৎজাও। পিৎজাতে দেওয়া মশলাটা আরবি।

মশলাতে দেওয়া মরিচটা ফারসি! বার্গার কিংবা চপ দুটোই আবার ইংরেজি। কিন্তু চকোলেট আবার মেক্সিকান শব্দ। অর্ডারটা ইংরেজি। যে মেন্যু থেকে অর্ডার করছেন সেটা আবার ফরাসী। ম্যানেজারকে নগদে টাকা দেওয়ার সময় মাথায় রাখবেন, নগদ আরবি, আর ম্যানেজার ইটালিয়ান। আর যদি দারোয়ান কে বকশিস দেন, দারোয়ান ও তার বকশিস দুটোই ফারসি। এবার চলুন বাজারে, সবজি ফলমূল কিনতে। বাজারটা ফারসি, সবজিও। যে রাস্তা দিয়ে চলছেন সেটাও ফারসি। ফলমূলে আনারস পর্তুগিজ, আতা কিংবা বাতাবিলেবুও। লিচুটা আবার চীনা, তরমুজটা ফারসি, লেবুটা তুর্কী। পেয়ারা-কামরাঙা দুইটাই পর্তুগীজ। পেয়ারার রঙ সবুজটা কিন্তু ফারসি। ওজন করে আসল দাম দেওয়ার সময় মাথায় রাখবেন ওজনটা আরবি, আসল শব্দটাও আসলে আরবি। তবে দাম কিন্তু গ্রীক, আগেই বলেছি।

ধর্মকর্মেও একই অবস্থা। মসজিদ আরবি দরগাহ/ঈদগাহ ফারসি। গীর্জা কিন্তু পর্তুগীজ, সাথে গীর্জার পাদ্রীও। যিশু নিজেই পর্তুগীজ। কেয়াং এদিকে বর্মিজ, সাথে প্যাগোডা শব্দটা জাপানি। আর, মন্দিরের ঠাকুর হলেন তুর্কী। আর কি বাকি আছে? ও হ্যাঁ। কর্মস্থল! অফিস আদালতে বাবা, স্কুল কলেজে কিন্ডারগার্ডেনে সন্তান। বাবা নিজে কিন্তু তুর্কী, যে অফিসে বসে আছেন সেটা ইংরেজি, তবে আদালত আরবি, আদালতের আইন ফারসি, তবে উকিল আরবি। ছেলে যে স্কুলে বা কলেজে পড়ে সেটা ইংরেজি, কিন্তু কিন্ডারগার্ডেন আবার জার্মান! স্কুলে পড়ানো বই কেতাব দুইটাই আরবি শব্দ। যে কাগজে এত পড়াশোনা সেটা ফারসি। তবে কলমটা আবার আরবি। রাবার পেনসিল কিন্তু আবার ইংরেজি! পুরো স্ট্যাটাস মনে না থাকলে অন্তত এটা মনে রাখবেন যে মন শব্দটা আরবি। শব্দের কেচ্ছা-কাহিনী এখানেই খতম। তবে কেচ্ছাটা আরবি, কাহিনীটা হিন্দি, উভয়ের খতমটা আরবিতে।  মাফ চাইলাম না বা সরি বললাম না, কারণ মাফটা আরবি আর সরিটা ইংরেজি।

(সোমনাথ পাঠকের পাতা থেকে)


Follow us on :