১৫ মে, ২০২৪

Rabidranath: নাস্তিকতা ও রবীন্দ্রনাথ (শেষপর্ব)
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2023-06-02 09:35:35   Share:   

সৌমেন সুর: আশির দোরগোড়ায় রবীন্দ্রনাথ ঐ বয়সে 'রবিবার' গল্পটি লেখেন। বিষয় নাস্তিকতা। গল্পের নায়ক অভীক। সে বৈদিক ব্রাহ্মন। পিতৃদত্ত অভয়াচরন নাম বদলে, এখন অভীককুমার। সনাতনী-আচারসর্বস্ব ঘেরা আচার ধর্মকেই আক্রমণ করে বসে নাস্তিক সন্তান অভীক কুমার। ফলে তাজ্যপুত্র হতে হলো তাঁকে। নাস্তিকতা অভীকের গর্বের। শাস্ত্রে নিষিদ্ধ পশু মাংস খাওয়ায় কেউ তাঁকে মুসলমান বললে অভীক বলে, মুসলমান কি নাস্তিকের চেয়ে বড়? এই অভীক কলেজের ছাত্রী বিভার প্রতি আকৃষ্ট হয়। এবং বিভাকে ভালোবাসে। অভীক চায় বিভাকে বিয়ে করতে। কিন্তু অভীকের প্রতি অনুরক্ত হয়েও বিভার কোথাও যেন একটা বাধা ঝলকে ওঠে। সেটা তার পিতার শর্ত। পিতার মতে নাস্তিকরা হলো সমাজের অকল্যাণ। পিতা আর অভীক এই দুই মানুষের মাঝে পড়ে বিভা কি করবে তার কিনারা খুঁজে পায় না। বিভা দোটানায় পড়ে গুমড়ে ওঠে। আর অভীক, তার জাতের বালাই নেই। ব্রাহ্ম বিয়েতে তাঁর জাত যাবার ভয় নেই। তাই অভীক বলে, 'তুমি তো নাস্তিকের জাত মারতে পারো না, আমার ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব এইখানে।' 

দিনরাত ধর্ম নিয়ে খুনোখুনির দেশে সব ধর্মকে মেলাবার পূন্যব্রত নিয়েছে অভীক। সেই অভীক দূর্গাপুজোর চাঁদার টাকা অন্যায়ভাবে দিয়ে দেয় বিভার শিক্ষক অমরবাবুর বিলেত যাওয়ার জন্য। উদ্দেশ্য অঙ্ক কনফারেন্সে যোগ দেবার জন্য। অভীক বিভার মায়ের গয়না বেচতে দেয় না। বিভা এই ব্যাপার দেখে অভীককে প্রশ্ন করলে বলে, 'আমি নাস্তিক আমি বুঝি সত্যিকার পুজো কাকে বলে, ওরা ধর্মপ্রাণ মানুষ, ওরা কি বুঝবে?' এই কথায় আমাদের হৃদয় আর্দ্র করে ফেলে। এরপর বিভা তার মায়ের গয়না অভীকের কাছে রাখার দায়িত্ব দেয় তখন অভীক কপট প্রশ্ন করে, 'আমার লোভ কে সামলাবে?' এ কথার স্পষ্ট জবাব দেয় বিভা, 'তোমার নাস্তিক ধর্ম।' নাস্তিকীয় সততায় এমন পরম ভরসা সর্বত্র যুগিয়ছেন রবীন্দ্রনাথ। তথ্যঋণ-অরুনাভ মিশ্র                                         


Follow us on :