পুজো শেষ, এবার রাজ্যজুড়ে বিজয়া সম্মিলনীর পালা। জেলায় জেলায় চলছে বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠান, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তার আয়োজক রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। তবে এই আনন্দ অনুষ্ঠান ঘিরেই বড়সড় অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসক দল। তাপস রায়ের পর এবার তাপস চট্টোপাধ্যায়ের (Tapas Chatterjee) গলায় অভিমানের সুর। রাজারহাট নিউটাউনের বিধায়ক (MLA) হয়েও নিউটাউনে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনী, সেই অনুষ্ঠানে তিনি আমন্ত্রণ পাননি। আর এরপরেই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন বিধায়ক। আর এই মন্তব্য ঘিরে আরেক আপস কাঁটায় বিদ্ধ ঘাসফুল শিবির।বুধবার নিউটাউন এলাকায় ঘটা করে আয়োজিত বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠান, যেখানে বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকি সেখানে মঞ্চ আলোকিত করে উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছে সব্যসাচী দত্তকেও। বিজয়া সম্মিলনীতে নিমন্ত্রণ না পাওয়ার বিষয়ে মর্মাহত বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, "দু'বছর ধরেই দলে আমার কোনও স্ট্যাটাস নেই। একটা দলে চাকর আর বাবু, আর দলে আমার স্ট্যাটাসটা চাকরের কাজ। চাকরদের সম্মান জানিয়ে বলছি, আমি চিরকাল শ্রমজীবী মানুষের লড়াই করেছি। যাঁরা ২০২১ সালে সাম্প্রদায়িকতাকে সমর্থন করেছিলেন, দিদিকে বেগম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, তাঁরা নানা কারণে স্থান পেয়ে যান, স্থান পান না আমার মত লোকেরা।"এরপরেই দলে নিজের অবদান সম্পর্কে বলতে গিয়ে বিধায়কের মন্তব্য, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদ এবং অনুপ্রেরণায় একুশের বিধানসভা ভোটে ৫৬ হাজার ভোটে জিতে এসেছি, নিউটাউনের ইতিহাসে কেউ কখনো এত ভোটে জিততে পারেনি।৩৯ বছর ধরে জনপ্রতিনিধিত্ব করছি রাজারহাটে। ৪৬ বছর আমার রাজনৈতিক জীবন, সেখানে দাঁড়িয়ে আমি সম্মানটাই চাই। কিন্তু আমার কোনও কথা বলার সুযোগ নেই। কীভাবে কথা বলতে হয় দলে আমার জানা নেই। এবং সিপিএম থেকে আসার পর যদি আমার সততা নিয়ে কোনও প্রশ্ন থাকে তাহলে আমার কিছু করার নেই।"অপরদিকে অবশ্য এই গোটা ঘটনাকে নিয়ে বিরোধীদের কোনও রকম বাড়াবাড়ি করার কারণ নেই বলেই মন্তব্য তৃণমূল সাংসদ ডাঃ শান্তনু সেনের। "আমরা মাথার উপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যাকে নিয়ে দল করি, কোথাও যদি ছোটখাট কোনও মান-অভিমান হয়ে থাকে তাহলে তা বলার মত নির্দিষ্ট জায়গা রয়েছে। অভিমান সেখানেই হয় যেখানে ভালোবাসা খুব গভীর হয়। তাপস চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দলের প্রত্যেকের আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। তিনি দলের এক সুদক্ষ সংগঠক। আর বিরোধীদের উৎসাহিত হওয়ারও কোনও কারণ নেই, তৃণমূল একটি ঐক্যবদ্ধ পরিবার।"
তবে এই প্রথম নয়, আগের বছরেও বিজয়া সম্মিলনীতে ডাক পাননি তিনি। এনিয়ে দ্বিতীয়বার এই ঘটনা। সেই সঙ্গে মাস খানেও আগেও বিধাননগর পুরনিগমের কিছু কাজ নিয়েও প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে।
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)