২৭ এপ্রিল, ২০২৪

TMC: দুর্নীতির প্রশ্নে কড়া বার্তা কী আজ দেবেন মমতা?
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2023-01-02 12:39:12   Share:   

প্রসূন গুপ্ত: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দীর্ঘদিন ধরে অনেক কাছ থেকে দেখেছি। এক সময়ে কংগ্রেস আমলে যখন বহু গোষ্ঠীতে বিরোধী কংগ্রেস জর্জরিত তখন মমতা বুদ্ধি করে যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি হিসাবে মূল কংগ্রেসের সমান্তরাল সংগঠন তৈরী করেছিলেন। মজার বিষয় নামেই তা যুব কংগ্রেস ছিল ঠিকই, কিন্তু এখানেই দলবদ্ধ করতে পেরেছিলেন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি থেকে মদন মিত্র, সৌগত রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো প্রবীণ নেতাদের। পরে বেরিয়ে যান প্রিয় কিন্তু মমতার সঙ্গে জুড়ে যান অজিত পাঁজা-সহ আরও অনেকেই। একটি বার্তা মমতার তরফ থেকে ছিল, যে সিপিএম-র বিরুদ্ধে লড়াই করে, তৎকালীন শাসকের মার খেয়ে এই দলের সৃষ্টি সুতরাং এক মতে চলতে হবে।

পরোক্ষে মুকুল রায়রা আরও পরিষ্কার জানিয়েছিলেন, মমতাই প্রথম এবং শেষ কথা। ট্র্যাডিশন চলেছে ২০২১-এর ভোট অবধি সমানেই। কিন্তু এখন দিন বদলেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যথেষ্ট বুদ্ধিমতী এবং কড়া মেজাজের। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে সংবাদ মাধ্যমের সামনে বলতে শুনেছি, ভুল তো কেউ কেউ করেই, ওদের শাস্তিও হয়। দলীয় কোনও নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসলে দলনেত্রী সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ফোন করে ধমকে শুধরোতে বলেন।

মমতা জানতেন সংবাদ মাধ্যম থেকে একটা অংশ সঠিক তথ্য তাঁকে দেবে। কিন্তু তারপর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। এও দেখা গিয়েছে, কিছু নেতা বা অর্ধ নেতাদের চূড়ান্ত রোয়াব। চলতি বছর ১২-তে পা দিলো মমতা সরকার। বিভিন্ন প্রশাসনিক স্তরে নানা দুর্নীতির খবরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। একজোটে আক্রমণে বিরোধীরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে ধমকেছেন কাউকে কাউকে। কিন্তু ওই নেতারা জানেন, যতই হোক 'দিদি' তো আর তাদের তাড়িয়ে দেবে না। সমস্যাটা এখানেই।

আজও গ্রামগঞ্জে মমতার বিকল্প কেউ নেই। শুভেন্দু থেকে সেলিম কেউই তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। এটা খুব ভালোই জানে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। কিন্তু শাসক দলের একটা অংশের এই নেতাগিরি তো আর চলতে পারে না। দলের সংগঠনের দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের অনেকে প্রশাসনে মন্ত্রী বা বিভিন্ন চেয়ারম্যান পদে অবস্থান করছেন। ফলে আধুনিক কর্পোরেট চিন্তায় বিশ্বাসী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে নিয়ে আসলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। 

এখানেই দুটি বিষয় হলো।

১) অভিষেক পরিষ্কার বার্তা দিলেন, একব্যক্তি এক পদ।

২) দলে থেকে যারা অযোগ্য তাদের বাদ দিতে হবে ওই পদ থেকে। কাজেই ঝাড়াই বাছাই করে বেশ কিছুটা পরিবর্তন আনলেন দলে। 

কিন্তু সম্পূর্ণ নয় কারণ মমতার অনুগামী হয় অনেকেই দলে রয়েছে যাদের চট করে বাদ দেওয়া কঠিন। ৩) কাজেই অভিষেক এবারে আস্তিনের তৃতীয় তাসটি ফেললেন, জানালেন দুর্নীতির সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের বহিষ্কার করা হবে। সেভাবে হচ্ছেও তাই। এবারে যদি কেউ মনে করেন যে মমতার কাছে অনুরোধ উপরোধ করে টিকে থাকবেন তো সেখানেও হিসাবে তারা ভুল করছেন। কারণ অভিষেকের কাছে মায়া-মমতার কোনও স্থান নেই। কাজেই সোমবার নজরুল মঞ্চে নিশ্চিত মমতার ভাষণে অভিষেকের যুক্তিতেই সিলমোহর দিতে হবে। দলকে বাঁচানোর এটাই মোক্ষম উপায়। 


Follow us on :