৯ মার্চ, ২০১৮ শুক্রবার ভারতের সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ ঘোষণা করেছিল এক ঐতিহাসিক রায়। জীবন যখন মৃত্যুর চেয়েও যন্ত্রণাদায়ক, তখন 'সম্মানের সঙ্গে মৃত্যু, জীবনের অধিকার। এটা মানুষের মানবিক অধিকার।' অর্থাৎ স্বেচ্ছামৃত্যুর (Euthanasia) অধিকার দেওয়া হয়েছিল। এবার ‘প্যাসিভ ইউথেনেশিয়া’ বা ইচ্ছামৃত্যুর ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট আরও কিছু নিয়ম সহজ-সরলীকরণ করেছে। সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ মঙ্গলবার এই নতুন নির্দেশ দিয়েছে।
যদিও আদালত স্বীকৃত স্বেচ্ছামৃত্যুর অধিকারের প্রয়োগ পরিসর নিতান্তই সীমিত। কারণ, আদালতের রায়ে আগেই বলা হয়েছিল, মুত্যৃ পথযাত্রী কোনও রোগীর মৃত্যুর জন্য ব্যবহার করা যাবে না ইঞ্জেকশন বা প্রাণনাশের অন্য কোনও প্রত্যক্ষ পদ্ধতি। স্বেচ্ছামৃত্যুর এই অধিকারের কোনওরকম অপপ্রয়োগ যাতে না ঘটতে পারে, তার জন্য বেঞ্চের নির্দেশ- মেডিকেল বোর্ডের অনুমতি স্বাপেক্ষেই মরণাপন্ন রোগীর শরীর থেকে খুলে নেওয়া যাবে লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম।
আইনি পরিভাষায় এই ধরনের স্বেচ্ছামৃত্যুকে সর্বোচ্চ আদালত 'প্যাসিভ ইউথেনেশিয়া' নামে অভিহিত করেছিল। বাঁচানো যাবে না বা বাঁচানো একেবারেই অসম্ভব, এমন রোগীর ক্ষেত্রেই কিন্তু স্বেচ্ছামৃত্যুকে বিচারপতিরা বৈধতা দিয়েছিলেন। অন্যান্য ক্ষেত্রে এই অধিকার দেননি। রোগীকে চিকিৎসার মাধ্যমে আদৌ বাঁচিয়ে তোলা সম্ভব কিনা তা বৈজ্ঞানিক দিক দিয়ে বিচার করে দেখারও নির্দেশ দিয়েছিল মেডিকেল বোর্ডকে।
এই প্রক্রিয়া এতদিন ছিল চিকিৎসক এবং সরকারি বিশেষজ্ঞের বিবেচনাধীন। এবার থেকে জেলা শাসকের নেতৃত্বাধীন একটি রিভিউ বোর্ড গঠনের আর প্রয়োজন নেই। বরং সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে একজন জেলা মেডিক্যাল অফিসার থাকবেন হাসপাতালের মেডিক্যাল বোর্ডে। জেলাশাসককে শুধু এ বিষয়ে জানিয়ে দিলেই হবে। আর আগেই নির্দেশে বলা হয়েছিল মেডিক্যাল বোর্ডে থাকা চিকিৎসকদের অন্তত ২০ বছরের চিকিৎসার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এখন শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল, ২০ বছরের থাকতেই হবে এমন বাধ্যবাধকতা আর থাকছে না। চিকিৎসকদের ৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলেই হবে। তবে মেডিক্যাল বোর্ডকে প্যাসিভ ইউথেনেশিয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আবেদনের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে।