১৭ মে, ২০২৪

Narendra Modi: পরিবারতন্ত্র বাদ দিয়েই আগামীতে মোদী
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2023-12-15 17:05:44   Share:   

প্রসূন গুপ্তঃ ২০১৪ তে বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদীর স্লোগানই ছিল রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র বন্ধ করতে হবে। জিতেও ওই একই বক্তব্যে অটল ছিলেন তিনি। একই সাথে আরও একটি বিষয়ে মোদীর বার্তা কড়া ছিল, ৭৫ বছর বয়স হলে আর সাংগঠনিক বা প্রশাসনিক রাজনীতিতে থাকা চলবে না। এই ফর্মুলাতে বিদায় নিতে হয়েছিল বিজেপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা লালকৃষ্ণ আডবানীকে। একই ভাবে অনেককেই চলে যেতে হয়েছিল 'মার্গ দর্শনে' অর্থাৎ বাড়ির অন্দরে মোটামুটি।

মোদী প্রথম থেকেই আক্রমণাত্বক ছিলেন নেহেরু-গান্ধী পরিবারের প্রতি। আজ তিনি অনেকটাই এই বিষয়ে সার্থক। সোনিয়া রাহুল বা প্রিয়াঙ্কা রাজনীতিতে থাকলেও, তাঁদের ভূমিকা ভারতীয় রাজনীতিতে নেহাতই নগণ্য| মোদী জানেন তাঁর দলে এমন অনেকেই আছেন এখনও যাঁদের পরিবারের অনেকেই প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে আছেন। শোনা যাচ্ছে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে এখানেও তিনি 'ছাঁটাই পর্ব' রাখবেন। রাজনাথ সিং থেকে শুরু করে অনেকের পুত্র,কন্যা বা স্ত্রীরা রাজনীতিতে আছেন, তাঁদের ভবিষ্যত কি খুব দ্রুতই বোঝা যাবে। একই পরিবারভুক্ত দুই ব্যক্তি একই হাউসে তিনি রাখতে নারাজ। একই সাথে দীর্ঘদিন মুখ্যমন্ত্রীর পদে কেউ থাকবে না, তা তো এবারের তিন রাজ্যের নির্বাচনের পরেই প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। বিদায় নিতে হয়েছে শিবরাজ সিং চৌহানের মতো জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রীকেও। তাঁকেও এক প্রকার মার্গ দর্শনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।

ভারতীয় রাজনীতিতে 'সিন্ধিয়া' পরিবারেরও একটি ভূমিকা রয়েছে বা ছিল। গোয়ালিয়রের প্রয়াত মহারাজ পত্নী বিজয়রাজে সিন্ধিয়া আরএসএসের কাজের সঙ্গে জড়িয়ে যান। শোনা যায় ইন্দিরা গান্ধী যখন রাজপরিবারের ভূমিকা বাতিল করে দেন তারপর থেকেই বিজয়রাজে সক্রিয় ভাবে রাজনীতিতে চলে আসেন। ভোটেও দাঁড়ান প্রথমে জনসংঘের হয়ে, পরে বিজেপির হয়েও। রাজরানী ছিলেন বিজয়রাজে। অটলবিহারি বাজপেয়ীর খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলে শোনা যায়। বিজয়রাজের পুত্র প্রথমে গেরুয়া পতাকার দিকে গেলেও পরে মায়ের সঙ্গে প্রবল সংঘাতে আলাদা হয়ে যান। রাজবাড়ীর এক প্রান্তে থাকতেন তিনি। পরে ইন্দিরার হাত ধরে কংগ্রেসে যোগ দেন এবং রাজীব গান্ধীর আমলে তাঁর মন্ত্রী হওয়া ছাড়াও আরও দায়িত্ব বাড়ে। মাধব রাওয়ের অসময়ে মৃত্যু হলে পুত্র জ্যোতিরাদিত্য কংগ্রেসে যোগ দেন এবং রাহুল গান্ধীর ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন। মনমোহন সিংয়ের মন্ত্রিসভায় ১০ বছর মন্ত্রীও ছিলেন। অন্যদিকে মাধব রাওয়ের বোনেরা বিজেপিতে যোগ দেন। ইতিমধ্যে বিজয়রাজের মৃত্যু হয়েছে।

জ্যোতিরাদিত্যর ইচ্ছা ছিল মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার কিন্তু ২০১৮-র বিধানসভার নির্বাচনে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর রাহুল, কমলনাথকে মুখ্যমন্ত্রী করলে কয়েকমাস বাদে দল ভেঙে জ্যোতিরাদিত্য বিজেপিতে যোগ দেন এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হন। অন্যদিকে আদবানি ঘনিষ্ঠ বসুন্ধরা রাজে দুবার রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। এবারের ভোটের পরে জ্যোতিরাদিত্যর ইচ্ছা ছিল মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার এবং তাঁর পিসি বসুন্ধরার ইচ্ছা ছিল রাজস্থানের মুখমন্ত্রীত্ব। কোনোটাই হলো না, স্রেফ মোদীর ইচ্ছায় বলেই গুঞ্জন। আগামীতে জ্যোতিরাদিত্যকে লড়াই করে জিতে আসতে হবে এবং মন্ত্রী করা হবে কিনা নির্ভর করবে ফের জয় এবং মোদীর ইচ্ছার উপরেই নতুবা সিন্ধিয়া পরিবারকেও মার্গ দর্শনে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে।


Follow us on :