২৬ এপ্রিল, ২০২৪

ED: নিয়োগ দুর্নীতিতে মানিক যোগ!দিনভর শহরের ৬ জায়গায় ইডি হানা, ফ্ল্যাট সিল
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2022-10-15 18:23:35   Share:   

মানিক ভট্টাচার্যের (Manik Bhattacharya) গ্রেফতারির দিন কয়েকের মাথায় কলকাতা এবং শহরতলির একাধিক জায়গায় ইডির (ED Raid) ধারাবাহিক অভিযান। শনিবার সকাল থেকেই মহিষবাথান, কলেজ স্কোয়ার, রাজাবাজার, মুচিপাড়া, বারাসাত,কৈখালিতে একযোগে ইডির তল্লাশি। মহিষবাথানে মিনার্ভা এডুকেশন এন্ড ওয়েলফেয়ার সোসাইটির অফিসে তালা ভেঙে ইডির তল্লাশি। জানা গিয়েছে, প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল ও চন্দন মাইতি এই ট্রেনিং ইনস্টিটিউট চালাতেন। মাঝে মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের (primary Board) অপসারিত সভাপতিকে দেখা গিয়েছে আসতে। স্থানীয় সূত্রে এমনটাই খবর।


মহিষবাথানের ওই অফিসে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে চাবি না মেলায় তালা ভাঙার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় সংস্থা। সেই মোতাবেক চাবিওয়ালা ডেকে হাতুড়ি দিয়ে ভাঙা হয় তালা। সূত্রের খবর, এই অফিস থেকে প্রাইমারি বোর্ডের একাধিক কাজ করা হতো। এখন প্রশ্ন উঠছে, একটি বেসরকারি সংস্থার অফিসে কীভাবে সরকারি কাজ চালানো হতো? এমনকি একাধিক কোর্সের সার্টিফিকেট দেওয়া হতো এই অফিস থেকেই। প্রাথমিক তদন্তের পর জানতে পেরেছে ইডি।


স্থানীয়দের দাবি, একাধিক ব্যক্তির আনাগোনা ছিল এই অফিসে। প্রায় ২ মাস ধরে বন্ধ এই অফিস। তবে যে বাড়ির নিচে এই ইনস্টিটিউট সেই বাড়ির মালিককেও জিজ্ঞসাবাদ করেছে ইডি। অফিসে লাগানো সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখে কারা কারা আসতেন এবং ঠিক কী কাজ হতো বোঝার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় সংস্থা।

এই অফিসের একাধিক আলমারি, লকার কম্পিউটার খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় নথি বাজেয়াপ্ত করছে ইডি। এদিকে, রাজাবাজার এলাকায় ৩০২ নম্বর এপিসি রোডের আইডিয়াল হাইটস নামে এক আবাসনে সকালেই হানা দিয়েছিল ইডি। প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এই কমপ্লেক্সে একটি ফ্ল্যাটের সঙ্গে মানিক ভট্টাচার্যের যোগ পায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই যোগসূত্রেই এদিন ইডি অধিকারিকরা ওই কমপ্লেক্সে আসেন। প্রায় দু'ঘন্টা নির্দিষ্ট ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালান তাঁরা। সেখান থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি পাওয়া গিয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর। জানা গিয়েছে, বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং কলেজ অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি সংস্থা ৩০২ এপিসি রোডের আইডিয়াল হাইটস ব্লক বি-তে নথিভুক্ত। যার সিটি অফিস ১৮ নম্বর কার্তিক বোস ট্রিটে।


পাশাপাশি কলেজ স্কোয়ার এলাকার ১৮ নম্বর কার্তিক বোস ট্রিটের বিভাস অধিকারীর নামে কেনা সেই ফ্ল্যাটেও ইডি হানা। স্থানীয়রা বলছেন ছয় থেকে সাত বছর আগে এই ফ্ল্যাট কেনেন বিভাসবাবু। কিন্তু গত তিন মাস এই ফ্ল্যাটে আসছেন না তিনি। কিন্তু যখন তিনি এই ফ্ল্যাটে আসতেন, তাঁর পরিবারকে সঙ্গে দেখা যেত না। তবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত একাধিক বয়সী ব্যক্তিদের আনাগোনা ছিল এই ফ্ল্যাটে। স্থানীয়দের আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, সম্ভবত এই ফ্ল্যাটেই বিভাস চৌধুরী বেআইনি কার্যকলাপ করতেন। ফ্ল্যাটের বাইরে একটি নেমপ্লেট টাঙানো থাকলেও আগে বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং অ্যাসোসিয়েশনের একটি নেমপ্লেট লাগানো ছিল। পরে সেই নেমপ্লেট বিভাসবাবু খোলেন।

স্থানীয়দের দাবি, 'ফ্ল্যাটের ভেতরে সন্দেহজনক গতিবিধি ছিল। স্থানীয় থানাকে ছয় বছর আগে অভিযোগও জানিয়েছিলেন ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা কিন্তু অভিযোগ করেও কোন লাভ হয়নি। এখানেই শেষ নয়, বিভাসবাবু নাকি নীল বাতি লাগানো গাড়ি ব্যবহার করতেন সঙ্গে থাকতো বন্দুকধারী নিরাপত্তারক্ষী।' 

পাশাপাশি মুচিপাড়া থানার গোপালমল্লিক লেনে সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ এক চিকিৎসকের বাড়িতে ইডি হানা। কেন্দ্রীয় সংস্থার ৪-৬ সদস্যের এক দল ওই বাড়িতে গিয়ে এক ছাপাখানায় অভিযান চালায়। জানা গিয়েছে, চিকিৎসকের বাড়ির নিচে সেই ছাপাখানা খুলে প্রিন্টিংয়ের কাজ চলতো। শুধু শহর কলকাতা নয় শহরতলির কৈখালী মন্ডলগাঁথি মসজিদ গলিতে ইডি রেড করেছে। এখানেও প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতে মানিক যোগ পেয়েছেন তদন্তকারীরা।

অপরদিকে, মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ জনৈক তাপস মণ্ডলের বারাসাতের বাড়িতে ইডি হানা। রাজ্যের একাধিক জায়গায় বিএড কলেজ চালাতেন তাপস মণ্ডল। সূত্রের খবর এই নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে তাপস মণ্ডলের যোগাযোগ রয়েছে। মানিক ভট্টাচার্যের মহিষবাথানের টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটও বকলমে চালাতেন এই তাপস মণ্ডল।


Follow us on :