২৭ এপ্রিল, ২০২৪

NASA: প্রথম চেষ্টাতেই সফল নাসার 'ডার্ট মিশন', রক্ষা করা সম্ভব হবে মানবসভ্যতাকে
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2022-09-27 10:49:00   Share:   

মহাজাগতিক বস্তুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্যই নাসার এই ডার্ট মিশন। জানা গিয়েছে, প্রথম চেষ্টাতেই সফল হয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (NASA) এই বিশেষ প্রজেক্ট। নাসার ডবল অ্যাস্টেরয়েড রিডায়রেকশন টেস্ট (DART Mission) মহাকাশযানকে সুপরিকল্পিতভাবে আছড়ে ফেলা হল পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা একটি গ্রহাণুর উপর। ১০ মাস আগে ক্যালিফোর্নিয়া (California) থেকে এই বিশেষ আত্মঘাতী অভিযানের জন্য ডার্ট স্পেশক্রাফ্টকে মহাকাশে পাঠানো হয়। এদিন সেই অভিযান সফলের কথা একটি অফিসিয়াল বিবৃতি দিয়ে জানায় নাসা। বলা হয়, "মহাকাশ বিজ্ঞানে নতুন যুগের সূচনা হল। পৃথিবীর কক্ষপথে গ্রহাণু আছড়ে পড়ার বিপদ থেকে নিজেদের রক্ষা করার যোগ্যতা অর্জন করলাম আমরা"



বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছিল একটি গ্রহাণু। ডাইমরফাস নামের ওই গ্রহাণুটি আয়তনে প্রায় ৫৩০ ফুট। মিশরের বৃহদাকার পিরামিডের সঙ্গে তার তুলনা করা হয়েছিল। ডিডিমস নামের আধ মাইল বিস্তৃত একটি অভিভাবক গ্রহাণুকে ঘিরে পাক খাচ্ছিল সেটি। ডাইমরফাস এবং ডিডিমস, দু’টি গ্রহাণুই প্রতি চার বছর অন্তর সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করে। কোনও ক্রমে পৃথিবীতে তা আছড়ে পড়লে মুহূর্তের মধ্যে প্রাণের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। ডায়নোসরের অবলুপ্তির জন্যও এমনই গ্রহাণু আছড়ে পড়েছিল বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

বিজ্ঞানী ড. দেবীপ্রসাদ দুয়ারি বলেন, "১০ মাস আগে নাসা একটি রকেট (Rocket) উৎক্ষেপণ করেছিল। তার সঙ্গে ছিল একটি উপগ্রহ। এই পুরোটিকে বলা হয়েছিল ডার্ট মিশন। এর উদ্দেশ্য ছিল, পৃথিবী থেকে ১ কোটি ১০ লাখ কিলোমিটার দূরে দু'টি যুগ্ম গ্রহাণুকে আছড়ে পড়া থেকে আটকানো। ডাইমরফাস আকারে ২৩০ ফিট হলেও ডিডিমস ২৫০০ ফিট। এই দু'টি গ্রহাণু পৃথবীর দিকে ধেয়ে আসছিল। এই রকম গ্রহাণু পৃথিবীর কক্ষপথে আঘাত এনে মানবসভ্যতাকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। এই গ্রহাণুদের আটকানোর জন্য নাসা এই পরীক্ষামূলক অভিযান চালায়।

মঙ্গলবার ভোর ৪টে ৪৪ মিনিট নাগাদ ইচ্ছাকৃত এবং সুপরিকল্পিতভাবে মহাকাশযানটিকে ডাইমরফাসের উপর আছড়ে ফেলেছে। নাসা। ২২ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার আছড়ে ফেলা হয় ডার্ট মিশন। ডাইমরফাসের সময়কাল ১০ মিনিট কমিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। কক্ষপথ থেকে তাকে ১ শতাংশ বিচ্যুত করা হয়েছে। এই ১ শতাংশই পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা গ্রহাণুকে কক্ষপথ থেকে অনেকটা বিচ্যুত করেছে। এই পরীক্ষার্থী আগামী শতকে বিজ্ঞানীদের আরও অনেকটা প্রস্তুত করে ফেলল।

উল্লেখ্য, আগামীদিনে যদি এমনই কোনও গ্রহাণু পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসলে তার থেকে মানবসভ্যতাকে রক্ষা করা সম্ভব হবে। এই সফল প্রচেষ্টাকে বলা যেতে পারে বিজ্ঞানের একটা "যুগান্তকারী অভিযান।" নাসার এই ডার্ট মিশন আগামী ১০০ বছরে যে কোনওরকম অঘটন থেকে রক্ষা করবে পৃথিবীকে, এমনটাই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।


Follow us on :