১২ মে, ২০২৪

Srijato: রামপ্রসাদের গান লিখে 'সেরা গীতিকার' মনোনয়ন পেলেন শ্রীজাত! তারপর...
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2023-05-14 14:48:49   Share:   

শনিবারে হঠাৎই সরগরম হয়ে উঠেছিল সামাজিক মাধ্যম। কলকাতার একটি জনপ্রিয় সম্মাননা অনুষ্ঠানের মনোনয়নপত্র ঘুরেছে নেট দুনিয়ায়। সেই পোস্টে দেখা গিয়েছে, মনোনয়ন গীতিকার শ্রীজাত বন্দোপাধ্যায়ের নামে। বিষয়টি এতটুকু হলে হয়তো এই নিয়ে কোনও কথা হত না। কিন্তু মনোনয়নের বিষয় দেখে একপ্রকার আঁতকে ওঠেন নেটিজেনরা। সেখানে লেখা 'মন রে কৃষিকাজ জানো না' গানটি লেখার জন্য শ্রীজাতকে (Srijato Bandopadhyay) মনোনয়ন করেছেন তাঁরা। এরপরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় ওঠে।

'মন রে কৃষিকাজ জানো না' গানটি সাধক রামপ্রসাদ সেনের লেখা এবং সুর করা, সেই স্থানে শ্রীজাতর নাম দেখে ভিরমি খাওয়ার অবস্থা নেটিজেনদের। প্রসঙ্গত, শ্রীজাত পরিচালিত প্রথম সিনেমা মানবজমিনে অরিজিৎ সিং রামপ্রসাদী এই গানটি গেয়েছিলেন। সেই থেকেই হয়তো মনোনয়ন কর্তৃপক্ষের ভ্রান্ত ধারণা থেকেই এই অঘটন। কিন্তু নেট মাধ্যমে শনিবার অবাধ সমালোচনা হয়েছে এই নিয়ে। তাঁদের সমস্ত রাগ ধেয়ে গিয়েছে শ্রীজাতর দিকে। কিন্তু যাঁকে ঘিরে এই এতো আলোচনা তিনি নীরব ছিলেন।

শনিবার পেরিয়ে রবিবারে মুখ খুললেন শ্রীজাত। রবিবার নিজের সামাজিক মাধ্যমে শ্রীজাত লিখেছেন, ‘মন রে, কৃষিকাজ জানো না – টেলি সিনে অ্যাওয়ার্ডস-এর তরফে এই গানটির জন্য সেরা গীতিকারের মনোনয়নপত্রটি যখন আমার ফোনে আসে, তখন আমি একটি বিজ্ঞাপনের কাজে ভীষণ ব্যস্ত। তাই খুলে দেখা হয়নি। পরে চিঠির প্রতিলিপি খুলে তুমুল অঘটনটি দেখামাত্র আমি চেষ্টা করি কোনওভাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তা জানাতে। আমাদের ছবির প্রযোজক রানা সরকার মারফত আমার সঙ্গে কথা হয় সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মৃন্ময় কাঞ্জিলালের। তাঁকে আমি স্পষ্টতই জানাই, বিরাট আকারের এক ভ্রান্তি হয়ে গিয়েছে তাঁদের তরফে এবং পুরস্কার তো অনেক পরের কথা, এই মনোনয়ন মেনে নেওয়াই আমার পক্ষে সম্ভব নয়। সব শুনে তিনি ভুল স্বীকার করেন এবং জানান যে যত দ্রুত সম্ভব এই ত্রুটি সংশোধন করে নেওয়া হবে। ব্যক্তিগত স্তরে এই ঘটনার জন্য তিনি আমার কাছে দুঃখপ্রকাশ করেন। কিন্তু ততক্ষণে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই মনোনয়নপত্রের প্রতিলিপি ছড়িয়ে পড়েছে হু হু ক’রে।'

সমালোচক নেটিজেনদের উদ্দেশে শ্রীজাত লিখেছেন, 'রামপ্রসাদ সেনের গানের জন্য আমাকে মনোনীত করা যেমন বিস্ময়কর অজ্ঞানতা বা অসাবধানতার পরিচায়ক, তেমনই এই মনোনয়নের জন্য আমাকে আক্রমণ করাও অশিক্ষা ও অভব্যতার সামিল। প্রথমত, অনেকেই দেখলাম ধরে নিয়েছেন যে, এই পুরস্কার আমি পাচ্ছি ও গ্রহণ করছি। তাঁরা সম্ভবত মনোনয়ন এবং পুরস্কারের তফাতটুকুও জানেন না। এই দুয়ের মধ্যে কতগুলো পর্যায় আছে বা থাকতে পারে, তাও তাঁদের জানা নেই।'

এই ভুলে শ্রীজাতর ভূমিকা কোথায়? তাও স্পষ্ট করে দিয়ে শ্রীজাত লিখেছেন, 'মনোনয়ন ব্যক্তি-মানুষের গ্রহণ বর্জনের বাইরে। গ্রহণ বা বর্জনের বিষয় তখনই আসে, যখন কেউ পুরস্কৃত হন। নইলে নয়। তাই আমি কেন এই মনোনয়ন গ্রহণ করলাম, এ-প্রশ্ন ভিত্তিহীন। কিন্তু এই মনোনয়নের বিরোধ নিশ্চয়ই করা উচিত, যা আমি যথাস্থানে করেওছি।'

যদিও শ্রীজাতর লেখা পোস্টে তিনি সমালোচকদের উদ্দেশে আরও কড়া কথা শুনিয়ে লিখেছেন, 'যাঁরা যে-কোনও বিষয়ের কারিগরি দিকগুলি বিচার না-করেই ময়দানে নেমে পড়েন, তাঁদের নিয়ে ভাবার সময় আমার নেই। যেমন খতিয়ে দেখা বা পড়ার মতো বাজে সময় তাঁদেরও নেই, বদলে খেউড়ে অংশ নেবার মতো মহান কাজে নিবিষ্ট থাকতে হয়। দ্বিতীয়ত, বহু মানুষ, হয়তো ইচ্ছাকৃত ভাবেই, এই ঘটনার জন্য আমাকে দায়ী করছেন। এখন, দায়ী করলেই কেউ দায়ী হয়ে যায় না। সে তো মাঝেমধ্যে সিরিয়ায় বোম পড়ার জন্যেও ফেসবুকে আমিই দায়ী থাকি। সেটা কথা নয়। এতে বরং অভিযোগকারীদের অশিক্ষা ও উদ্দেশ্যই প্রকাশ পায়।'




Follow us on :