
সৌমেন সুরঃ বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মূলত মানুষের কবি। মাটি আর মানুষের কথাই তাঁর কাব্য। এক সচেতন মানবিক প্রত্যয় থেকেই তিনি কবিতা লিখতেন। আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম পথিকৃৎ বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কবিতায় অনুষঙ্গে প্রেম প্রকৃতি মিলেমিশে আছে। সমাজতন্ত্রের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস, সাম্যবাদের ওপর আস্থা তাঁর ব্যক্তিগত
জীবনকেও নিয়ন্ত্রিত করেছে। আমৃত্যু সে বিশ্বাস হারায়নি। 'রাজা আসে, রাজা বদলায়/ নীল জামা গায়ে, লাল জামা গায়/ এই রাজা আসে, ওই রাজা যায়/ জামা কাপড়ের রং বদলায়...দিন বদলায় না...।'
স্বাধীনতার পরবর্তী বাংলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ও বাংলা কবিতায় 'রাজা আসে যায়' কবিতাটি একটা মিথ। রাজনৈতিক ভন্ডামির এক উপলক্ষ প্রকাশ। কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় চল্লিশ দশকের বিশিষ্ট কবি। তিনি নিজের লেখার প্রেরণার বিষয়ে নিজেই লিখেছেন, 'আমি নিজের কবিতাকে যত বুঝি, আমার কবিতার শিকড় রয়েছে অন্যখানে। সেখানে আজও যাঁরা জলসিঞ্চন করছেন তাঁরা সবাই দলছুট একক কবি- যেমন জীবনানন্দ, তারপর নজরুল এবং রবীন্দ্রনাথ।' তাই বাংলা কবিতার সেই আবাহমান ধারায় নিজের শেকড় প্রোমিত করেছিলেন কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সর্ব অর্থে প্রতিষ্ঠিত বিরোধী লেখক ছিলেন। তাঁর সমস্ত লেখালেখি ছিল অবাণিজ্যিক ছোট কাগজ। ঠাকুরপুকুর ক্যানসার হাসপাতালের বেডে শুয়ে মৃত্যুর সঙ্গে
লড়াই করতে করতে তিনি লিখে গেছেন- 'এ লড়াই মৃত্যুর সঙ্গে মানুষের/ আর হারজিত দুটো কথাই যখন অভিধানে রয়েছে/ বিনা যুদ্ধে কেউ কাউকে মাটি ছেড়ে দেবে না....।' (চলবে) তথ্যঋণ/ রবীন বসু
ওজন কমানো বা মেদ (Fat) ঝরানো এই বিষয়টি যেন এখন সবার মুখে মুখে। সবাই এখন প্রায় এক্সারসাইজ (Exersise) না করেই ওজন (Weight) কমাতে চান, তাও আবার তাড়াতাড়ি। আবার কারও কারও ব্যস্ত জীবনে শরীরচর্চা করা হয়ে ওঠে না, তাই অন্য উপায় খোঁজেন ওজন কমানোর জন্য বা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য। ফলে পুষ্টিবিদরা, কিছু পুষ্টিগুণে ভরপুর স্যালাডের নাম বলেছেন, যা খাদ্য তালিকায় রাখলে মেদ ঝরবে অনায়াসেই।
শসার স্যালাড: শসা প্রায় সবার বাড়িতেই থাকে। তাই শসার সঙ্গে চিলি পেপার, পেপার ফ্লেকস, বাদাম, লেবুর রস, স্বাদমত নুন ও চিনি দিয়ে তৈরি করে ফেলুন এই স্যালাড। আপনি কিছু সবজি যেমন গাজর, বীটও দিতে পারেন। তবে এই স্যালাড তৈরি করে বেশিক্ষণ রেখে দেবেন না, বানিয়ে তখনই খান।
বীটরুট স্যালাড: ছোট করে কাটা বীটের সঙ্গে মিশিয়ে নিন দই, ব্ল্যাক পেপার, নুন, চিনি, রোস্ট করে রাখা জিরে গুড়ো ও ধনে পাতা। এরপর কিছুক্ষণ রেখে স্যালাডটি খেয়ে নিন। এটি স্বাস্থ্যকর ও ওজন কমাতেও সাহায্য করে।
সুইট কর্ন স্যালাড: কর্নকে সেদ্ধ করে, তার মধ্যে দিয়ে দিন টোম্যাটো কেচআপ, মেয়োনিজ, ব্ল্যাক পেপার, স্বাদমতো নুন। এরপর ভালো করে মিশিয়ে তৈরি করুন এই স্যালাড। এই স্যালাডও আপনি রাখতে পারেন আপনার খাদ্য তালিকায়।
স্প্রাউটেড মুগ ডাল স্যালাড: স্প্রাউটেড মুগ ডালের সঙ্গে মিশিয়ে নিন শসা, বীট, পেঁয়াজ, গাজর, লেবুর রস, লঙ্কা, ব্ল্যাক পেপার। এরপর ভালো করে মিশিয়ে সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে নিন।
ছোলার স্যালাড: ভিজিয়ে রাখা কালো ছোলাকে সেদ্ধ করে তার মধ্যে শসা, গাজর, বীট, পেঁয়াজ, লেবুর রস, ব্ল্যাক পেপার, স্বাদমত নুন দিয়ে তৈরি করুন স্যালাড। এটি যেমন পুষ্টিতে ভরপুর তেমনি খেতেও সুস্বাদু।
সৌমেন সুর: সাহিত্য সমাজের(Special story) দর্পন, তার হুবহু অনুকরণ নয়। তবে এর সঙ্গে আছে কবি সাহিত্যিকদের আপন মনের মাধুরী। তখনই সৃষ্টি হয় ধ্রুপদী সাহিত্য, সাহিত্যের অর্থ পারস্পরিক সম্পর্কের যোগ। একের সঙ্গে বহুর মিলন ঘটিয়ে সাহিত্য আত্মীয়তার ক্ষেত্র প্রস্তুত করে। বর্তমান ব্যস্ত জীবনে সাহিত্যপাঠের(Literature) অবকাশ কমলেও সাহিত্যপাঠের প্রয়োজনীয়তাকে অস্বীকার করা যায় না।
সাহিত্য সমাজচিত্রের একটি বিচিত্র সংগ্রহশালা। সাহিত্যের সঙ্গে সমাজের সম্পর্ক খুব নিবিড়। তাই সাহিত্য সমাজের মাটিতে ফুটন্ত ফুল। তবে হুবহু দর্পন নয়, তার সঙ্গে মিশে আছে সাহিত্যিকের মনস্তাস্ত্বিক বিশ্লেষণ। সাহিত্যিক সমাজ(Special Effect) থেকে উপকরন সংগ্রহ করে কল্পনার রঙে রাঙিয়ে, গ্রহণ-বর্জন করে দেশ-কাল-পাত্রের বাইরে সময়ের বহমান ধারায় সাহিত্য সৃষ্টি করেন। সুতরাং একথা সুস্পষ্ট, সমাজের উপদানে সাহিত্যের প্রতিষ্ঠা।
সমাজ তাকে উপাদান জোগায়। সমাজের পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে সাহিত্যেরও ঋতুবদল হয়। কিন্তু সূর্য থেকে নি:সৃত আলোয় চাঁদ শুধু আলোকিতই হয় না। সে আলোর বিকিরণও তার এক গৌরবী কৃতি। সমাজ থেকে উদ্ভূত সাহিত্যের তাই আজ আগামীকালের জন্য ঘুম থেকে জাগরনের সাধনা, জীবন থেকে মহাজীবন রচনার প্রেরণা।
সাহিত্য আমাদের আনন্দের আশ্রয়, দু:খের সান্ত্বনা এবং ন্যায়-বিচারের হাতিয়ার। সাহিত্যপাঠ আমাদের হৃদয়কে প্রস্ফুটিত করে। মনকে ঐশ্বর্যমণ্ডিত করে এবং বুদ্ধিকে তীক্ষ্ণ করে। সাহিত্য এককথায় জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে। তাকে কিছুতেই বর্জন করা যায় না।
কাশির সমস্যা ছোট থেকে বড় সবার মধ্যেই দেখা যায়। তবে কাশি দু'রকমের হতে পারে। এক শ্লেষ্মাযুক্ত কাশি, অন্যটি শুকনো কাশি। সবথেকে মানুষকে বিরক্ত করে দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি। সাধারণত ঋতু পরিবর্তনের সময় ঠান্ডা-গরমের ফলে শ্লেষ্মাযুক্ত কাশি আর ধুলোবালি, দূষণের ইত্যাদির কারণে শুকনো কাশি হয়ে থাকে। তার মধ্যে এখন কোভিড-১৯, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, অ্যাডিনো ভাইরাসের ছড়াছাড়ি, ফলে কাশি যেন কমার নামই নেয় না। তবে আর চিন্তা নয়, কাশির জন্য আপনাকে এখন সবসময় ওষুধ খেতে হবে না। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন বাড়িতেও কিছু প্রাকৃতিক উপায়ে আপনি আপনার দীর্ঘদিনের কাশি থেকে রেহাই পেতে পারেন। তবে কী সেই উপায়গুলি?
চিকিৎসকের পরামর্শ, প্রথমেই আপনাকে আপনার গলাকে বিশ্রাম দিতে হবে। সঙ্গে কিছু খাবার ও পানীয় খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হবে। যা আপনার গলাকে আর্দ্রতা দেবে। আপনাকে দিনে বারবার গরম জল, গরম স্যুপ, তরল জাতীয় খাবার, গরম চা, কফি খেতে হবে। তবে বিশেষ নজর দিতে হবে যাতে চা, কফি বেশি না খাওয়া হয়ে যায়।
কারণ এতে পরে অ্যাসিডিটির সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য ফল, শাকসবজিও খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আর সবথেকে প্রয়োজনীয় ও উপকারী উপায় হল গার্গেল করা। উষ্ণ গরম জলের সঙ্গে সামান্য লবণ মিশিয়ে সারাদিনে বারবার গার্গেল করতে হবে। এতে আপনার গলা ব্যথা থাকলে সেটি কমবে ও কাশি থেকেও দ্রুত মুক্তি পাবেন।
কোলেস্টেরলের (Cholesterol) সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। কোলেস্টেরল দেহের জন্য প্রয়োজনীয়, তবে হাই কোলেস্টেরল শরীরে নানরকমের অসুখের সৃষ্টি করে। কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি পরিমাণে থাকলে হার্টের সমস্যা দেখা যায় ও স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। আবার রক্তে কোলেস্টরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ধমনীতে কোলেস্টেরল জমতে শুরু করে ও রক্ত প্রবাহে বাধার সৃষ্টি করে। কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে না আনলে কখনও ধমনী পুরোপুরি ব্লকও হয়ে যায়। যার ফলে দেহে বিশেষ করে পায়ে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, যাকে পেরিফেরাল আর্টেরি ডিজিস বা প্যাড (PAD) বলা হয়। তবে বুঝবেন কী করে যে, আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে নেই?
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যদি আপনার হাই কোলেস্টেরল থেকে থাকে, তবে আপনি প্রথমেই বুঝতে পারবেন আপনার পা দেখে। যদি কখনও আপনার পায়ে ব্যথা অনুভূত হয়, তারপর সেই ব্যথা কিছুক্ষণ বিশ্রাম করার পর ঠিক হয়ে যায়, তখনই বুঝতে পারবেন যে, আপনার হয়তো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও এই পেরিফেরাল আর্টেরি ডিজিসের আরও একটি লক্ষণ আছে। যেমন-শুয়ে থাকার সময় যদি আপনার পা ও পায়ের পাতায় ব্যথা, জ্বালা বা পা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে, এমন অনুভব করেন বা পায়ের তলার রং পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে, তবে বুঝে নিতে হবে যে আপনার হাই কোলেস্টেরলের সমস্যা রয়েছে।
তবে এতে ভয় পাওয়ার দরকার নেই বলে জানিয়েছেন ডাক্তাররা। ডাক্তারদের পরামর্শ, খাবারের প্রতি সচেতন হলেই কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। বিশেষ করে মদ, ধূমপান থেকে দূরে থাকতে হবে, saturated fats যেমন- ঘি, বাটারের পরিমাণ কমাতে হবে ও soluble fiber যুক্ত শাক-সবজি খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হবে। আবার কোলেস্টেরল কমানোর ক্ষেত্রে নিয়মিত এক্সারসাইজ করার পরামর্শও দিয়েছে বিশেষজ্ঞরা।
প্রসূন গুপ্ত: আজকাল বাঙালিদের মধ্যে একটা রীতিই হয়ে গিয়েছে সরকারি চাকরির জন্য জান লড়িয়ে দেওয়া। কারণ, নিশ্চিত চাকরি, সঙ্গে একাধিক সুযোগ-সুবিধা। অবসর নিলে পেনশন, মারা গেলে নিকটতম স্বজন পাবেন অর্ধেক পেনশন। এ রকম সুখের মধ্যেই ডিএ নিয়ে আন্দোলন, উপলক্ষ্য বেতন একটু বাড়িয়ে নেওয়া। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার ধীরে ধীরে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি বেসরকারিকরণের পথে হাঁটছে। অলাভজনক সংস্থা হাতে রাখছে চাইছে না কেন্দ্র। হয়তো এমন দিন আসবে, সরাসরি প্রশাসনিক অফিস ছাড়া সরকারি চাকরি আর থাকবেই না। বার্তা পরিষ্কার, দক্ষতা দেখাও, শ্রম দাও, বেতন নাও। বার্তা এটাই যে, ব্যবসা করাটা সরকারের কাজ নয়। এই পদ্ধতিই নাকি চলে প্রথম বিশ্বের দেশগুলিতে। সেখানে পুলিস প্রশাসন চালায় কিছু বেসরকারি সংস্থা।
বাংলায় এ সব কিছু হবে না। বামেরা সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্কৃতির দিকে জোর দিয়েছিল। ব্যতিক্রম নয় মমতা সরকার। তবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পর ছাত্রছাত্রীর এমন কিছু কোর্স করা বা পড়া উচিত যেখানে চাকরি প্রায় নিশ্চিত। এই মুহূর্তে বাংলায় অজস্র বেসরকারি কারিগরি ও ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট হয়েছে। যেখানে ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের সমস্ত দফতর রয়েছে। ডিগ্রি কোর্স না পড়তে পারলে ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তি হতেই পারে।
ম্যানেজমেন্ট কোর্স যে কত-শত হয়েছে তা নিয়ে ভাবতেই পারেন পড়ুয়ারা। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে কলা বিভাগের যে কেউই এই কোর্স পড়তে পারে। হোটেল ম্যানেজমেন্ট, হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট থেকে মিডিয়া সায়েন্স। জানেন কি ডাক্তারির সমতুল্য একটি কোর্স এসেছে, বিপিটি। অর্থাৎ ব্যাচেলার অফ ফিজিও থেরাপি। এই কোর্স অবশ্যই বিজ্ঞানের পড়ুয়াদের জন্য। পাশ করলে নামের আগে ডাক্তার লিখতেই পারেন। এরকম বহু অজানা কোর্স এসেছে। এই কোর্সের ধারক মৌলনা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বা ম্যাকাউ। সেখানেই বিশদ জানা যাবে। পরীক্ষার্থীদের উচিত ২৭ মার্চ পরীক্ষা শেষের পর গিয়ে খোঁজ নেওয়া।
মনি ভট্টাচার্য: পাহাড় যেমন সুন্দর তেমন মৃত্যুফাঁদও বটে, সবাই নিশ্চয় ভাবছেন, পাহাড়কে মৃত্যুফাঁদ কেন বলছি? এ পৃথিবীতে ৮ হাজারী পাহাড়ের সংখ্যা মোট ১৪টি। আর এই চূঁড়ায় চড়তে গিয়ে জানি না কত মানুষের মৃত্যু হয় প্রতি বছর। কিছু আমরা খবর পাই, কিছু পাই না। এ পৃথিবীর ১৪টি ৮ হাজারী পাহাড়ের ৭টিই নেপালে (Nepal)। এবার সেই নেপালের দুটি অন্যতম শৃঙ্গ অভিযানে বেড়িয়েছেন বাঙালি পর্বতারোহী পিয়ালী (Piyali Basak) বসাক। পিয়ালী পৃথিবীর উচতম শৃঙ্গ এভারেস্ট (৮৮৪৮মি) বিনা অক্সিজেনে জয় করে পৃথিবীতে নজির গড়েছেন। তিনিই প্রথম বাঙালি যিনি কৃত্রিম অক্সিজেন ছাড়া মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন। পিয়ালী অবশ্য বলেন, 'এভারেস্ট অভিযানের শেষ ১০০ মিটারে অক্সিজেন প্রয়োজন হয়েছিল।' এবার তিনি নেপালের এই দুইটি আট হাজারী শৃঙ্গ, কৃত্রিম অক্সিজেন ছাড়া জয় করবেন, এমন লক্ষ্য নিয়ে রওনা হয়েছেন বলেই খবর। পিয়ালীর পরিবার সূত্রে খবর, এই মাস অর্থাৎ মার্চের ১৬ তারিখ তিনি রওনা দিয়েছেন।
তিনি নেপালের মাউন্ট মাকালু এবং নেপালের মাউন্ট অন্নপূর্ণা সামিট অভিযানে বেড়িয়ে পড়েছেন। নেপাল-তিব্বত বর্ডার রিজিয়নের পাহাড় হলো মাউন্ট মাকালু, যার উচ্চতা ৮৪৬৩ মিটার। মাকালু অভিযানকে কাঠিন্যের বিচারে ৪-ই গ্রেড করা হয়েছে (আল্পাইন গ্রেডিং লিঙ্ক)। এই অভিযান শুরু করার আগে পর্বতারোহীদের উপযুক্ত এবং শক্তিশালী হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মাকালু বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন পর্বতগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত হয়। মাকালু অভিযান কঠিন, কারণ পর্বতটি তার খাড়া পিচ এবং ছুরির ধারের শিলাগুলির জন্য কুখ্যাত।
নেপালের মাকালু শিখর বিশ্বের পঞ্চম সবচেয়ে বিপজ্জনক। একটি আন্তর্জাতিক রিসার্চ সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, এখনও অবধি ২৩৪ জন আরোহীর মধ্যে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এই শিখরে পৌঁছতে। নাসার তথ্য অনুযায়ী, সাধারণত মাউন্ট মাকালুর সামিটের পথে, চতুর্থ শিবির থেকে মাউন্ট মাকালুর সামিট পর্যন্ত, প্রায় ৬০% পর্বতারোহী এই অংশে অক্সিজেন ব্যবহার করেন। এবার এই যাত্রা অক্সিজেন ছাড়াই চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন পিয়ালী।
মাকালুর প্রসঙ্গে আমাদের প্রতিনিধিকে বুধবার পিয়ালী বলেন, 'মাকালু খুবই ভয়ানক শৃঙ্গ। মাউন্ট অন্নপূর্ণা থেকে নেমে তিনি মাউন্ট মাকালুর জন্য যাত্রা শুরু করবেন। সব ঠিক থাকলে এপ্রিলের ২৬ তারিখ থেকে মে মাসের ১৪ তারিখের মধ্যে তিনি মাকালু অভিযান সেরে ফেলবেন।'
এছাড়া তাঁর তালিকায় রয়েছে, পৃথিবীর দশম শৃঙ্গ ,উত্তর-মধ্য নেপালের মাউন্ট অন্নপূর্ণা (৮০৯১ মি)। অন্নপূর্ণা হিমালয়ের একটি অংশ যা অভিযানের দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক পর্বতমালার মধ্যে রয়েছে। নাসার তথ্য অনুযায়ী, ৬০টিরও বেশি প্রাণহানি এবং মৃত্যুর হার ৩২%-সহ এই পর্বত ৮০০০ মিটারের উপরে যেকোনও পর্বতের চূড়ার অনুপাতে সর্বোচ্চ প্রাণঘাতী। পর্বতটি নেপালে গন্ডকী নদীর পূর্বদিকে ৫৫-কিলোমিটার (৩৪ মাইল) রিজ বরাবর অবস্থিত। যা বিশ্বের গভীরতম নদী গিরিগুলির মধ্যে একটি খোদাই করেছে।
এটি একটি উচ্চঝুঁকিপূর্ণ তুষারপাত-প্রবণ এলাকা যেখানে কিছুটা প্রযুক্তিগত অসুবিধাও রয়েছে। এই অভিযানে উচ্চতায় গড়ে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘন্টা হাটতে হবে দুর্গম পথে। কিছু দিন ১০ থেকে ১২ ঘন্টা পর্যন্ত দীর্ঘ হতে পারে।
সিএন ডিজিটালের তরফে পিয়ালীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি আমাদের জানান, 'এই অভিযানে খরচ প্রায় ৩১ লক্ষ টাকা, সেই টাকার মধ্যে ১৪ লক্ষ টাকা এখনও জোগাড় হয়েছে।' তিনি এদিন আরও জানান, 'প্রথমে তিনি মাউন্ট অন্নপূর্ণার জন্য যাত্রা শুরু করবেন, অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প থেকে তিনি অন্নপূর্ণা সামিটের উদ্দেশে ১২-ই এপ্রিল যাত্রা শুরু করবেন এবং এই যাত্রা শেষ করবেন বা শেষ করার চেষ্টা করবেন এপ্রিলের ২৪ থেকে ২৬ তারিখের মধ্যেই।' বুধবার তিনি সিএন ডিজিটালকে বলেন, 'অন্নপূর্ণার এই ১২ থেকে ১৫ দিনের যাত্রায় রোজ গড়ে ১০ থেকে ১২ কিমি হাটতে হবে।'