গম নিয়ে সরগরম জলপাইগুড়ি। গম নিয়ে শুরু রাজনৈতিক তরজাও। অভিযোগ, অবৈধভাবে পাচার হচ্ছিল গম। ৫ বা ১০ কেজি নয়, প্রায় ২২, ৫০০ কেজি গম উদ্ধার করেছে পুলিস। প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে, এই গম রেশনের। সাম্প্রতিক অতীতে এত বেশি পরিমাণ খাদ্যশস্য পাচারের ঘটনা ঘটেনি বলেও পুলিস সূত্রে খবর। জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ থানার ঘটনা।
রবিবার বিকেলে রাজগঞ্জের ফাটাপুকুর এলাকায় নাকা চেকিং করে পুলিস। সেইসময় একটি বড় লরি আটক করে তারা। তল্লাশি চালিয়ে দেখা যায়, তাতে থরে থরে সাজানো রয়েছে বস্তা বস্তা গম। মোট ৫০০ প্যাকেট গম। যার ওজন প্রায় ২২,৫০০ কেজি। লরিতে চালক এবং সহকারী ছাড়া আর কেউ ছিল না। কথায় অসঙ্গতি মেলায় গ্রেফতার করা হয় তাদের। বাজেয়াপ্ত করা হয় গম সহ লরিটিকে। সূত্রের খবর, এই গম ময়নাগুড়ি থেকে শিলিগুড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সোমবার ধৃত দুজনকে জলপাইগুড়ি আদালতে তোলা হয়। আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনের হেফাজতের আবেদন জানায় পুলিস। বিচারক তিনদিনের পুলিস হেফাজত মঞ্জুর করেন।
তবে এই গম পাচার নিয়ে তাদের কিছুই জানা নেই বলে দাবি ধৃতদের। তাদের দায়িত্ব ছিল ময়নাগুড়ি থেকে শিলিগুড়ি পৌঁছে দেওয়া। এর মালিক কে বা রেশনের গম কিনা, তা নিয়ে তাদের কিছুই জানা নেই বলে জানিয়েছে তারা।
তবে পুলিসের প্রাথমিক অনুমান, গম রেশনের হয়ে থাকতে পারে। পুলিশের চোখে ধুলো দিতে বস্তা বদল করে তা পাচার করা হচ্ছিল। এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে ইতিমধ্যেই জলপাইগুড়ি জেলা খাদ্য দফতরে যোগাযোগ করেছে পুলিস। জেলা খাদ্য নিয়ামক অমৃত ঘোষ জানিয়েছেন, তাঁরা পরীক্ষার জন্য দফতরের ইন্সপেক্টর পাঠিয়েছিলেন। রিপোর্ট পেলেই গম রেশনের কিনা তা স্পষ্ট হবে।
গম পাচারের ঘটনায় শুরু রাজনৈতিক চাপানউতোর। শুধু চালক এবং খালাসিকে গ্রেফতার করে লাভ নেই। এত পরিমাণ খাদ্যশস্য পাচারের সঙ্গে রাঘববোয়ালরা জড়িত, তাঁদের খুঁজে বের হোক। ঘটনায় শাসকদলের নেতাদের যোগ থাকতে পারে বলে দাবি বিজেপির জেলা সহ সভাপতি অলোক চক্রবর্তীর।
অন্যদিকে তৃণমূল জেলা সভানেত্রী মহুয়া গোপ বলেন, কোনও অসাধু ব্যবসায়ী বা রেশন ডিলার এর সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে। পুলিস প্রশাসন এবং খাদ্য দফতর ঘটনার তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।
সাধারণ মানুষের জন্য বরাদ্দ রেশনসামগ্রী পাচারের খবর মাঝেমাঝেই আসে প্রকাশ্যে। এই ঘটনায় প্রকৃত কারা জড়িত, তাদের খুঁজে বের করার দায়িত্ব প্রশাসনের। দোষীরা শাস্তি পাবে কিনা, তা বলবে সময়।