পরিচারিকার জন্য খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন ৭২ বছরের বৃদ্ধ। পরিচারিকার খোঁজে গিয়ে অপহৃত সেই বৃদ্ধ। তিন লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবি অভিযুক্তদের,পরে পুলিসি তৎপরতায় পূর্ব মেদিনীপুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বৃদ্ধকে। এই ঘটনায় গ্রেফতার চারজন।
পুলিস সূত্রে খবর, হুগলির পোলবা শঙ্করবাটির বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব জীবনকৃষ্ণ পাল দেড় মাস আগে খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন পরিচারিকার জন্য। শঙ্করবাটিতে দো'তলা বাড়িতে এই বৃদ্ধ, ছেলে পুত্রবধূ ও নাতিকে নিয়ে থাকেন। সেই বিজ্ঞাপন দেখে অনেকেই ফোন করছিলেন। এরপর পূর্ব মেদিনীপুরের এক মহিলা যোগাযোগ করে কথাবার্তা পাকা করে যোগ দেন মাস খানেক আগে।
দিন তিনেক কাজ করে হঠাৎ সেই মহিলা উধাও হয়ে যান। গৃহকর্তা অর্থাৎ কৃষ্ণ বাবুকে চলতি সপ্তাহে ফোন করে সেই মহিলা বলেন,' একটা কাজের মেয়ের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, একা থাকে তাই জীবনবাবুকে গিয়ে নিয়ে আসতে হবে।' সেই ফোনালাপ মোতাবেক পরিচারিকা আনতে ভোরে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন জীবনকৃষ্ণ বাবু। সকাল নটা নাগাদ ছেলে প্রসেনজিৎকে ফোন করে কাঁদতে কাঁদতে বৃদ্ধ জানান তাঁকে অপহরণ করে রেখেছে কয়েকজন।
তিন লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিলে তবেই ছাড়া পাবেন। জীবনকৃষ্ণ বাবুর ফোন থেকে আরও কয়েকবার ফোন করে টাকা পাঠাতে বলা হয়। একটি ব্যাঙ্ক একাউন্ট নম্বর দিয়ে তাতে টাকা দিতে বলে অপহরনকারীরা। প্রসেনজিৎ সময় নষ্ট না করে পোলবার থানায় গিয়ে ওসি বাপি হালদারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। থানার পুলিশ মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশান দেখতে পান পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরে। প্রসেনজিৎ বুদ্ধি করে অপহরণকারীদের বলেন নেটওয়ার্কের সমস্যার জন্য টাকা ট্রান্সফার করা যাচ্ছে না, একটু সময় লাগবে। এর মধ্যে ভিডিওকলে বাবার সঙ্গে কথাও বলেন ছেলে। ভগবানপুর থানার গুরগ্রামে নির্জন জায়গায় গাড়িতেই আটকে রাখা হয় বৃদ্ধ ও তাঁর ড্রাইভারকে।
পোলবা থানার পুলিশ দ্রুত সেখানে পৌঁছে চারজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। তাঁদের মধ্যে দু'জন মহিলা, দু'জন পুরুষ। রাতে অভিযুক্তদের নিয়ে পোলবার উদ্দেশ্য রওনা দেন তদন্তকারীরা। বৃহস্পতিবার অভিযুক্তদের চুঁচুড়া আদালতে তোলা হয়েছিল। প্রসেনজিৎ পাল বলেন, 'বাবাকে ফোন করে ডেকে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবী করে অভিযুক্তরা। পুলিশের তৎপরতায় অভিযুক্তরা ধরা পড়েছে, বাবাকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা গিয়েছে।'