শেষ বারের মত কথা হয় বৃহস্পতিবার রাত ১২.৩০ মিনিট নাগাদ। ভারত সরকারের কাছে করজোড়ে আবেদন করেছে, তাঁদের মেয়ে সহ বাকি যাঁরা ইউক্রেনে (Ukraine) আটকে রয়েছে তাঁদের অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হোক।
আগাম যুদ্ধের খবর পেয়ে ১৫ মার্চ ফেরার কথা ছিল উত্তর ২৪ পরগনার হাবরা কাশিপুরের বাসিন্দা বছর ২০-র নিশা বিশ্বাসের। বৃহস্পতিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনে সেনা অভিযানের ঘোষণা করার পরই শুরু হয়ে যায় যুদ্ধ।
মাত্র ৩ মাস আগে কিয়েভ মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়তে গিয়েছে নিশা। সেই দেশের রাস্তাঘাটও সবটা এখনও বুঝে উঠতে পারেনি হয়তো। এই পরিস্থিতিতে কী করবে, কোথায় যাবে, কার কাছে সাহায্যের দরবার করবে কিছু বুঝে উঠতে পারছে না নিশার পরিবার। আতঙ্ক আর চোখের জল ফেলে প্রহর গুনছে নিশার পরিবার।
কখনও ভারতীয় দূতাবাস থেকে সাহায্য মিলবে সে আশায় মা। বৃহস্পতিবার রাত ১২.৩০ মিনিট নাগাদ শেষ বারের মত বাড়িতে ফোন করে নিশা জানিয়েছেন, গতকাল রাত থেকেই মাথার ওপর দিয়ে একের পর এক বিমান উড়ে যাওয়ার শব্দে দুচক্ষের পাতা এক করতে পারেনি। সাইরেন,বোমার আওয়াজে তাঁর বাসস্থান কেঁপে উঠছে মাঝে মধ্যেই। তার পর থেকে এখনও পর্যন্ত আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
অপরদিকে ডাক্তারি পড়তে গিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে আটকে পড়েছে আরামবাগ পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের বৃন্দাবনপুরের দেবার্ঘ্য পোড়েও। ভয়ঙ্কর দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁর পরিবারের লোকেরা। কখন ফিরবে বাড়ির ছেলে সেই আশায় তাকিয়ে আছেন ভারত সরকারের দিকে।ছেলের অপেক্ষায় রয়েছেন পরিবারের লোকজন। দুশ্চিন্তায় চোখের জল ফেলছেন মা।
পরিবারের লোকেরা জানান, ২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর ইউক্রেনের লভিভ শহরে ডাক্তারি পড়তে গিয়েছে দেবার্ঘ্য। বাড়ি ফেরার কথা ছিল সামনের ৩ মার্চ। কিন্তু যুদ্ধের কারণে আটকে পড়ে।
উল্লেখ্য, দেবার্ঘ্য তার পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছেন,ভারতীয় দূতাবাস থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। সমস্ত কিছুই গুছিয়ে রাখতে বলা হয়েছে। যেকোন সময়েই তাঁদের নিয়ে যাওয়া হবে বলেই জানানো হয়েছে। আর ছেলের কাছে এই বার্তা পেয়ে একটু হলেও স্বস্তি পেয়েছেন তাঁরা। কিন্তু যতক্ষণ না ছেলে বাড়ি আসছে ততক্ষণই উৎকন্ঠায় রয়েছেন বাবা, মা ও অন্যান্য আত্মীয় স্বজনেরা।