প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নাম পরিবর্তন হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে পূর্ব মেদিনীপুরে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। রবিবার পূর্ব মেদিনীপুরের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক এলাকায় তদন্তে আসে কেন্দ্রের একটি প্রতিনিধি দল। মূলত প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নামে বাংলা আবাস যোজনার বাড়ি ধার্য করা হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা খতিয়ে দেখতেই রাজ্যে এসেছেন কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা।
শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের বিশ্বাস, মথুরি, ধলহরা সহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে বাংলা আবাস যোজনার বাড়িগুলির অবস্থা খতিয়ে দেখেন তাঁরা। প্রতিনিধি দল লক্ষ্য করে, বেশিরভাগ বাড়িতে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নাম লেখা থাকলেও সেই বোর্ড মাত্র ৭ দিন আগে লাগানো হয়েছে। বেশ কিছু পরিবার প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় টাকা পাওয়া সত্ত্বেও বাড়ি এখনও সম্পূর্ণ করেনি। অথচ ওই বাড়িটি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার পুরো টাকা পেয়ে গিয়েছে। ওই সমস্ত বাড়িতে যাঁরা বসবাস করছেন, তাঁদের সঙ্গেও কথা বলেন এবং বাড়িটির বিষয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। অনেক পরিবার বলতে পারেনি যে কোন যোজনায় বাড়ি পেয়েছে। আবার অভিযোগ উঠেছে, বেশ কিছু পরিবার বাড়ি তৈরি করার জন্য ১০০ দিনের মজুরির প্রাপ্য এখনও বকেয়া রয়েছে।
উল্লেখ্য, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীই বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন। তিনি জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের যেসব প্রকল্প রয়েছে, সেগুলিই রাজ্য সরকার তার নিজের স্টিকার বানিয়ে সাধারণ মানুষকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে। এই নিয়ে তিনি কেন্দ্রের কাছে রিপোর্ট পাঠান। কেন্দ্র সরকারের যেসব প্রকল্প রয়েছে, তা নিজের নাম দিয়ে রাজ্য সরকার চালিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। এই ধরনের কাজ করলে কেন্দ্র সরকার যেন তৎপর হয়, তাও জানিয়েছেন। তার ফলস্বরূপ কেন্দ্র সরকার জানিয়ে দেয়, কতগুলি বাড়ি, কতগুলি রাস্তা কেন্দ্রের টাকায় হয়েছে এবং রাস্তার জন্য প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনা, বাড়ির জন্য প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা কথাটি না লিখলে কেন্দ্র সরকার একটি কানাকড়িও দেবে না।
ঠিক তারপর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় দেখা যাচ্ছে রাতারাতি রাস্তার পাশে সাইনবোর্ডে লেখা প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনা। লেখার সঙ্গেই বাড়িগুলিতেও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা স্টিকার লাগানো হয়। সরজমিনে খতিয়ে দেখতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রামনগর বিধানসভা এলাকার দুটি ব্লকে কেন্দ্র সরকারের একটি দল বাড়ি বাড়ি গিয়ে সার্ভে করে। তবে সার্ভে করতে গিয়ে ঝুলি থেকে বেরিয়ে আসে বিড়াল। সেই সার্ভেই চলছে এখনও।