শুঁটকি মাছ নিয়ে ঘটি-বাঙাল তর্ক চলতেই থাকে। শুধু তাই বা কেন, একদল শুঁটকি মাছের গন্ধে নাক সিঁটকায়, আর একদল চেটেপুটে রসনা তৃপ্ত করে শুটকি মাছে। কিন্তু এই মাছ তৈরির পিছনে থাকে বহু মানুষের ঘাম। কেমন আছেন তাঁরা?
করোনা, জাওয়াদ, ওমিক্রন সংক্রমণের আশঙ্কা। বিপর্যস্ত জনজীবন। একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগে জেরবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার শুঁটকি মাছ ব্যবসায়ীরা। আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন শ্রমিকরা। জাওয়াদের নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টিতে নতুন করে সমস্যায় পড়েন দক্ষিণ সুন্দরবনের শুঁটকি চাষিরা। দক্ষিণ সুন্দরবনের ৭টি ব্লকের মধ্যে শুঁটকি মাছের চাষ বেশি হয় কাকদ্বীপ ব্লকে। এই ব্লকেই রয়েছে ছোটবড় পনেরো থেকে কুড়িটি খুঁটি। বিঘার পর বিঘা জমিতে অগ্রহায়ণ মাসের শুরুতে হয় শুঁটকি ব্যবসা। শীতের মরসুমে রমরমিয়ে চলে এর বাজার। তবে দুবছর ধরে করোনা পরিস্থিতিতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন শুটকি মাছের কারবারিরা।
আর্থিক সংকটে সংসার চালানোই দায় হয়ে পড়েছে শ্রমিকদের। সবে ইয়াসের পর একটু একটু করে ছন্দে ফিরতে শুরু করেছিল ব্য়বসায়ী-সহ এই কারবারের সঙ্গে জড়িত সমস্ত কর্মীরা। কিন্তু বিবেকানন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের মুড়িগঙ্গা নদীর তটে খুঁটি ব্য়বসায়ীদের এখন লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষতি। আগের ক্ষতি সামলাতেই এখন হিমশিম খাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
জাওয়াদের ফলে যা ক্ষতি হয়েছে, তা ভেবে দিশাহারা তাঁরা। অভিযোগ, মিলছে না কোনও সরকারি সাহায্য। প্রতি বছর নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্য়ন্ত শুঁটকি বেচা-কেনার প্রস্তুতি থাকে। কিন্তু এ বছর তা সম্ভব হয়নি। মূলত করোনা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগেই কারণেই এমন অবস্থায় পড়তে হয়েছে তাঁদের, জানালেন ব্যবসায়ীরা।
শুঁটকি মাছের আছে হরেক নাম। যেমন লোটে, চ্যালা মাছ, পাতা মাছ, ছুড়ি, ঢেলা, ভোলা মাছ আর রয়েছে চিংড়ি মাছ। জেলা ছাড়িয়ে ভিন রাজ্যেও পাড়ি দেয় এই শুঁটকি। এমনকি বিদেশের বাজার বাংলাদেশ, চিন, জাপানেও পাড়ি দেয় এখানকার মাছ। কিন্তু বর্তমানে তেমন রফতানি নেই। অন্য়দিকে মাছ যোগানেরও অভাব। নিম্নচাপও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সব অবসান কাটিয়ে ফের ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া শুঁটকির ব্যবসায়ীরা।