রাজ্যের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদ থেকে রাজ্যপালকে সরানোর প্রস্তুতি শুরু করেছে নবান্ন। এবার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটর বদলের পরিকল্পনা নিচ্ছে উচ্চশিক্ষা দপ্তর। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটর পদেও বসে রয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। রাজ্যপালের বদলে এবারে ভিজিটর হবেন শিক্ষামন্ত্রী? এমনটাই উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রে খবর।
চলতি সপ্তাহেই সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আচার্য পদে রাজ্যপালের বদলে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিসভা। এই পদক্ষেপ প্রসঙ্গে শিক্ষাবিদ অচিন্ত্য বিশ্বাস বলেছেন, 'বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন লোকসভায় পাশ হওয়ার কথা। তাই রাজ্য সরকার এই ধরনের ভিজিটর নিয়োগ করতে পারে কিনা, সেটা আইন দেখে বলতে হবে। তাছাড়া ভিজিটর বা আচার্য প্রায় কাছাকাছি। তাই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটর সম্মানীয় রাজনীতি বহির্ভূত ব্যক্তিকে নিয়োগ করা হয়। তাই শিক্ষামন্ত্রীকে ভিজিটর নিয়োগ করলে রাজনীতি আসবেই।' শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেছেন, 'শিক্ষাক্ষেত্রে রাজনৈতিকরণের চেষ্টা। এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধিকার মেনে তারাই আচার্য বা ভিজিটর নিয়োগ করতে পারে। এভাবে রাজ্য সরকার কীভাবে ভিজিটর নিয়োগ করতে পারে, সেটা আইনবিদরা খতিয়ে দেখুক।'
উচ্চশিক্ষা দফতরের এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে বিজেপির কটাক্ষ, 'শিক্ষার উন্নতি না করে কুক্ষিগত করা। সংবিধানকে চ্যালেঞ্জ করছে রাজ্য সরকার। এতে কলুষিত হচ্ছে বাংলার শিক্ষা, আঘাত আসছে সংবিধানে।' কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেছেন,'শিক্ষাক্ষেত্রকে সঙ্কুচিত এবং রাজনীতিকে অনুপ্রবেশ করাতে এই সরকার উঠেপড়ে লেগেছে। শিক্ষার মুক্ত চরিত্র সঙ্কুচিত হচ্ছে।'
বাম নেতা সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, 'আচার্য পদে রাজ্যপাল কোনওদিন পছন্দ করিনি। আমরা চেয়েছি এই পদে শিক্ষাবিদরা থাকুক। তবে রাজ্যপালকে পছন্দ নয় বলে মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য? এটা রাজনীতিকরণ। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটর পদে শিক্ষামন্ত্রী কেন? মন্ত্রীদের কোনও কাজ নেই?
তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের পাল্টা কটাক্ষ, 'আচার্য পদ নিয়ে বাজার গরম করছে বিরোধীরা। ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হলে, মুখ্যমন্ত্রী কেন রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হতে পারবেন না?'