দেনার টাকা শোধ করতে না পারায়, বাড়ি থেকে অপহরণের অভিযোগ নদিয়া জেলার হরিপুর অঞ্চলের পঞ্চায়েত সদস্যের ছেলে ও এক স্থানীয় বাসিন্দার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটে রবিবার রাতে, হরিপুর অঞ্চলের বাগ দেবিপুর এলাকায়।
পরিবার সূত্রে খবর, জাওয়াদ আতঙ্কে জনশূন্য ছিল রাস্তাঘাট। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই বিজয় সরকার ও চিত্তরঞ্জন সরকারকে অপহরণ করা হয়। সম্পর্কে তাঁরা বাবা এবং ছেলে। মূল অভিযুক্ত স্থানীয় বাসিন্দা হারাধন সরকার ও স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের ছেলে রাহুল মণ্ডল।
অভিযোগ, রবিবার গভীর রাতে বাড়িতে ঢুকে পঞ্চায়েত সদস্যের ছেলে ও কিছু দুষ্কৃতী তাণ্ডব চালায়। তাঁদের হাতে আক্রান্ত একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তি সহ শিশুরাও। প্রত্যেককেই ধারালো অস্ত্র ও লোহার অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। এছাড়াও ওই দুজনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা, এমনই অভিযোগ ওই পরিবারের।
ওই পরিবারের ছেলে প্রসেনজিৎ সরকারের অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে বৃষ্টি চলাকালীন ৫০ থেকে ৬০ জন দুষ্কৃতী তাঁদের বাড়িতে হঠাৎ চড়াও হয়। গোটা বাড়ি ভাঙচুর করে। এছাড়াও বাড়ির প্রত্যেকটি সদস্যকে রাম দা, বন্দুক দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। এখানেই শেষ নয়, তাঁর বাবা চিত্তরঞ্জন সরকার ও ভাই বিজয় সরকারকে ব্যাপক মারধর করে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ, তাঁদের মধ্যে ছিল হরিপুর পঞ্চায়েত সদস্যের ছেলে রাহুল মণ্ডল সহ একাধিক তৃণমুল আশ্রিত দুষ্কৃতী।
এই ঘটনার কারণ নিয়ে বিজয় সরকারের স্ত্রী সাধনা সরকার জানান, তাঁর স্বামী ও শ্বশুর বেশ কিছুদিন আগে ব্যবসার কারণে পাঁচ লক্ষ টাকা ধার নেন এলাকারই এক যুবক হারাধন সরকারের কাছ থেকে। লকডাউন থাকায় ব্যবসা লাটে ওঠে। ফলে টাকা শোধ করা সম্ভব হয়নি। হারাধনবাবু যেহেতু তৃণমূল ঘনিষ্ঠ, তাই তাঁর সঙ্গে ওই পঞ্চায়েত সদস্যের ছেলে রাহুল মণ্ডলও আসেন। তিনি আরও বলেন, পাওনা টাকা না দিতে পারায় বেশ কিছুদিন আগে একটি মিটিং ডাকা হয়েছিল পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ডিসেম্বরের শেষে সব টাকা দিয়ে দিতে হবে। কিন্তু তার আগেই এই ঘটনা।
এখন তাঁদের দাবি, সুস্থভাবে যেন ফিরে আসেন বিজয় সরকার ও চিত্তরঞ্জন সরকার। তারই সঙ্গে অভিযুক্তদের যথাযথ শাস্তির দাবি জানান তাঁরা। শান্তিপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে শান্তিপুর থানার পুলিস।