দীর্ঘদিন ধরে বেতন বৃদ্ধি সহ অতিরিক্ত কাজের চাপ নিয়ে সমস্যা। পাশাপাশি ১২ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করায় প্রতিবাদে বিক্ষোভ।
প্রসঙ্গত, সোমবার সাত সকালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়ার একটি সার তৈরির কারখানা ইন্দোরামার ১২ জন শ্রমিককে কাজ থেকে ছাঁটাই করা হয়। তাও আবার বিনা নোটিশে বলে অভিযাগ। আর এরপরই বিক্ষোভে সামিল সেখানকার শ্রমিক মহল। ছাঁটাই শ্রমিকদের দ্রুত কাজে ফেরানোর দাবি জানিয়ে সকাল থেকেই কারখানার গেট আটকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন শতাধিক শ্রমিক।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এই কারখানার ঠিকাদার সংস্থার মালিক হলদিয়া পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলার প্রশান্তকুমার দাস। তিনিই আবার ওই সার কারখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাও। তাঁর কাছে ঠিকা শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরেই বেতন বৃদ্ধির দাবি সহ অতিরিক্ত কাজের চাপ কমানোর দাবি জানিয়ে আসছেন। তবে তা নিয়ে কেউই কর্ণপাত করেনি বলে অভিযোগ শ্রমিকদের। তাঁদের আরও অভিযোগ, গত এক বছর ধরে শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির চুক্তি কার্যকর করা হচ্ছে না। এছাড়াও শ্রমিকদের অমানসিকভাবে খাটানো হচ্ছে। বিশেষত লোডিং-আনলোডিং বিভাগের শ্রমিকদের জোর করে অতিরিক্ত মাল পরিবহণে বাধ্য করা হচ্ছে। এর জেরে প্রায়শই শ্রমিকরা দুর্ঘটনার মুখে পড়ছেন। এরই প্রতিবাদ জানিয়ে কিছুদিন যাবৎ শ্রমিকরা অতিরিক্ত মাল পরিবহণের বোঝা নিতে অস্বীকার করায়, আন্দোলনের প্রথম সারিতে থাকা ১২ জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
এদিকে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূল দলের মদতেই রাজ্যের সঙ্গে জেলার শ্রমিকদের অত্যচার করা হচ্ছে। তৃণমূলই কোটি কোটি টাকা কোম্পানির থেকে নিচ্ছে, আর শ্রমিকদের পাওনা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। ইউনিয়নগুলির অপদার্থতার কারণে শ্রমিকদের হয়ে কথা বলার কেউ নেই।
অন্যদিকে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে জেলা আইএনটিটিইউসি নেতৃত্ব। তাদের দাবি, তাদের ফ্ল্যাগ নিয়ে কেউ বা কারা অপব্যবহার করছে। তবে এর সঙ্গে আইএনটিটিইউসির কোনও সম্পর্ক নেই। কোম্পানি কাদের রাখবে, তা সম্পূর্ণ কর্তৃপক্ষের ভাবনার বিষয়। এতে তাদের কিছু করার নেই। তবে তাদের কাছে অভিযোগ এলে নিশ্চয়ই তা খতিয়ে দেখা হবে। পাল্টা তাদের অভিযোগ, এই আন্দোলনে বিজেপি নেতৃত্বের যোগসাজশ রয়েছে।
কটাক্ষ পাল্টা-কটাক্ষে কবে সঠিক সুরাহা মিলবে, আদতে সেটাই এখন দেখার।