পঃ মেদিনীপুরের দাঁতন ইতিহাস প্রসিদ্ধ জায়গা। দাঁতনের প্রতিটি ছত্রে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে একাধিক ইতিহাস। বাংলা-ওড়িশা সীমান্তে দাঁতনে রয়েছে জটাধারী বাবা।
দাঁতনের রায়বাড় উত্তর এলাকায় অবস্থিত এই ভগ্নপ্রায় জটাধারী বাবা। কালো পাথরে তৈরি এই ভাঙা মূর্তিটি। মূর্তিটির পেট থেকে মাথা পর্যন্ত রয়েছে। পাশে রয়েছে তার পা যুগল।
কালো পাথরের তৈরি এক সন্ন্যাসীবেশী এই পাথরটি। সম্পূর্ণ কালো এই বিগ্রহ। মাথায় রয়েছে জটাও। পাশেই ধ্বংসপ্রাপ্ত বেশ কয়েকটি খণ্ড রয়েছে।
এলাকার মানুষ এই বিগ্রহকে শিবজ্ঞানে পুজো করেন। অনেকে নিজেদের মানসপূরণে মানতও করেন। তবে ইতিহাস এর সুদূর প্রসারী। প্রথম দিকে গবেষকরা মনে করতেন বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর এক অবয়ব এটি। পাশে মোগলমারি বৌদ্ধবিহার থাকার জন্য তা মনে করা হত।
পরে ইতিহাস খুঁজতে গিয়ে গবেষকরা জানতে পারেন, এটি বৌদ্ধ ভিক্ষুকের ছবি নয়। এটি শৈবাচার্য। বৌদ্ধধর্মের প্রসার যখন অবলুপ্তির পথে, তখনই শিবপূজার প্রচলন হয়। গৌড়রাজ শশাঙ্কের সময়ে শিবপূজা বা শৈবধর্মের প্রচার শুরু হয় এবং এই মূর্তি তারই প্রমাণ বলে ইতিহাসবিদরা মনে করেন।
জানা গেছে, ওড়িশার শেষ হিন্দু রাজা মুকুন্দদেব যখন পাঠানদের কাছে পরাস্ত হন, তখন পাঠান সেনাপতি কালাপাহাড় ধ্বংস করে। প্রমাণ মেলে, কালাপাহাড়ের ধ্বংসলীলায় ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় জটাধারী বাবাও। কারণ হাত ভাঙা, নাক কাটা এই অবস্থায় পাওয়া যায় এই জটাধারীকে।
অবিলম্বে প্রশাসন এর ইতিহাস উন্মোচিত করুক, এমনই দাবি এলাকার মানুষজনের। শুধু জটাধারী নয়, সমগ্র দাঁতনকে কেন্দ্র করে সার্কিট ট্যুরিজম গড়ে উঠুক। সংরক্ষণ হোক ইতিহাসের। তবে মিশ্র পরিবার বংশ পরম্পরায় তাদের জায়গায় পাওয়া এই জটাধারী বাবাকে শিবজ্ঞানে পূজা করে আসছেন। আরও নানা অভিমত রয়েছে জটাধারী মূর্তিকে কেন্দ্র করে।তবে ইতিহাস উন্মোচিত হোক, সকলের দাবি একটাই।