শ্বশুর প্রভাবশালী তৃণমূল বিধায়ক (MLA)। তাই গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হয়েও সুবিচার পাননি এক গৃহবধূ। এবার তাই আদালতের দ্বারস্থ প্রভাবশালী সেই বিধায়কের ছোট পুত্রবধূ। আদালত (court) তাঁকে সুবিচার পাইয়ে দেবে বলেই আশায় রয়েছেন তিনি। গত ২০১৯ সালের ১৩-ই মার্চ ময়নাগুড়ির বাসিন্দা তরুণীর সঙ্গে বিয়ে হয় বিধায়কপুত্রের ছোট ছেলের। বধূর পরিবারের দাবি, বিয়ের সময় দাবিমতো পণ হিসেবে দুই লক্ষ টাকা নগদ, পাশাপাশি পাঁচ ভরি সোনার গহনা-সহ অন্য সামগ্রী দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তাঁর ওপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার শুরু হয়। বধূর বক্তব্য, স্বামী মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরেই শারীরিক নির্যাতন চালাত। অত্যাচার করত শাশুড়িও। সঙ্গে ছিল কটূক্তি, গঞ্জনা। শ্বশুর প্রতিবাদ তো করতেনই না, বরং ছেলে এবং স্ত্রীকে প্রশ্রয় দিতেন বলে অভিযোগ বধূর।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিয়ে ঠিক হওয়ার সময়ও পাত্রের সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলা হয়েছিল। জানানো হয়েছিল, পাত্র একটি তেল কোম্পানির উঁচু পদে চাকরি করে। বিয়ের পর তিনি জানতে পারেন, স্বামী একটি কলেজের গ্রুপডি কর্মী। একটা সময় নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে, বাপের বাড়ি চলে আসেন তিনি। বধূ জানিয়েছেন, এরপর একাধিকবার থানায় অভিযোগ দায়ের করার চেষ্টা করলেও প্রভাবশালী পরিবারের হুমকির ভয়ে পিছিয়ে গিয়েছেন। তবে ২০২১ সালের, ৮ই জানুয়ারি তিনি থানায় বধূ নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ, পুলিস মামলাটি সরাসরি আদালতে না পাঠিয়ে লিগ্যাল এইড সার্ভিসে পাঠিয়ে দেয়। বধূর অভিযোগ, এদিকে তাঁকে প্রায়ই হুমকি দেওয়া হচ্ছিল শ্বশুরবাড়ির তরফে।
অভিযোগকারিণীর আইনজীবী জানান, এই কাজ পুলিসের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না। লিগ্যাল এইডের তরফে বেশ কয়েকবার দুইপক্ষকে নিয়ে বসাও হয়। যদিও সমাধানসূত্র মেলেনি।
এদিকে গোটা ঘটনায় সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সেই বিধায়ক। তাঁর দাবি, পুত্রবধূ মিথ্যা অভিযোগ করছেন। এর পিছনে বিরোধীদলের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র আছে।
অন্যদিকে, এই বিষয়ে সুর চড়িয়েছে বিরোধী দলও। স্থানীয় বিজেপি নেতা কটাক্ষের সুরে জানান, যে জনপ্রতিনিধি নিজের পুত্রবধূকে সুরক্ষা দিতে পারেন না, তিনি সাধারণ মানুষকে কী সুরক্ষা দেবেন।