হাসপাতালের কর্মী নন, কোনওদিন হাসপাতালে পা দেননি। অথচ দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের রান্নাঘরের রাঁধুনি হিসেবে গত ২০১৮ সাল থেকে আজও প্রতি মাসে ৭৩২৪ টাকা করে মাইনে পেয়ে চলেছেন। দুর্গাপুরের এক সমাজকর্মীর এমনই অভিযোগকে ঘিরে তোলপাড় শিল্পাঞ্চল।
এবার আসা যাক ঘটনার বিবরণে। অরুণ হালদার নামে দুর্গাপুরের এক সমাজকর্মী আর টি আই অর্থাৎ তথ্য জানার অধিকার আইনে চিঠি দেন। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার ডক্টর ধীমান মণ্ডলের কাছে চিঠির মাধ্যমে জানতে চান, সোনালী পাণ্ডে নামে এক মহিলা ২০১৮ সাল থেকে হাসপাতালের হেঁসেলঘরের কুক হিসেবে প্রতি মাসে মাইনে পেয়ে যাচ্ছেন। অথচ উনি হাসপাতালের কর্মী নন। কোনওদিন হাসপাতালের চৌকাঠের মধ্যেও ঢোকেননি। এটা কীভাবে সম্ভব হচ্ছে?
লিখিত চিঠির সঙ্গে তথ্য সম্বলিত নিয়মিত বেতন তোলার প্রমাণ দিয়ে তিনি ওই অভিযোগপত্রে প্রশ্ন করেন, কীভাবে এই অনিয়ম এতদিন ধরে হয়ে আসছে। সমাজকর্মীর এমন অভিযোগকে ঘিরে তোলপাড় দুর্গাপুর।
অভিযুক্ত সোনালী পাণ্ডে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের আপার ডিভিশন ক্লার্ক পার্থসারথী পাণ্ডের স্ত্রী। ওই সমাজকর্মীর অভিযোগ, দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের অন্দরে অত্যন্ত প্রভাবশালী পার্থসারথী পাণ্ডে। আর যার জেরে সেই ক্ষমতা ব্যবহার করেই চলছে এই অনিয়ম। অবিলম্বে এই ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি হাসপাতাল সুপারের কাছে রেখেছেন এই সমাজকর্মী।
তিনি সমাজকর্মীর লিখিত অভিযোগ ও তথ্য জানার অধিকার আইনে জানতে চাওয়া নিয়ে লিখিত চিঠির বিষয়ে জানান, পুরো বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবার তাঁরা যা করার করবেন।
পশ্চিম বর্ধমান জেলা সিপিআইএম সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের অভিযোগ, তৃণমূলের মদতে এই অনিয়ম চলছে। সুর সপ্তমে চড়িয়ে রাজ্য বিজেপির অন্যতম সম্পাদক তথা দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই বলেন, গোটা রাজ্যে এই অরাজকতা চলছে। দুর্গাপুর বাদ যায় কেন? অবিলম্বে যথাযথ তদন্ত করে আইনমাফিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই।
বিরোধীদের পাল্টা কটাক্ষ করে তৃণমূল নেতা তথা দুর্গাপুর মহকুমা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার ও মহকুমা প্রশাসনের সাথে তাঁর এই ব্যাপারে কথা হয়েছে। অন্যায় থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিরোধীদের এই নিয়ে মাথাব্যথা করতে হবে না।