কন্যাসন্তান হওয়ায় গৃহবধূকে বেসরকারি নার্সিংহোমে ফেলে রেখে পালিয়েছেন স্বামী। শুক্রবার ঠিক এমনই অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু পরে জানা গেল অন্য বিষয়। মালদহের ওই বেসরকারি নার্সিংহোম নাকি প্রচুর টাকা বিল হওয়ায় প্রায় ২০ দিন আটকে রেখেছিল প্রসূতি ও তাঁর কন্যাসন্তানকে। পরে প্রশাসনের দ্বারস্থ হলে তাঁদের ফিরিয়ে আনা হয়। তবে ওই প্রসূতিও নাকি সেদিন বলেছিলেন, তাঁর স্বামী তাঁকে ফেলে পালিয়েছে। তাই তিনিও একথা বলেছিলেন কেন, সেটাও যথেষ্ট রহস্যের।
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট ব্লকের বানহাট খাঁড়িপাড়ার বাসিন্দা পূজা মার্ডি ওই নার্সিংহোমে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। জানা যায়,মাটির বাড়িতে ভাঙা চালের নিচে বসবাস করেন পূজা ও তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। নেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ডও। গত ১১ ই নভেম্বর বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু বালুরঘাট হাসপাতাল থেকে পূজাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় মালদা মেডিক্যাল কলেজ। অ্যাম্বুলেন্স চালক মেডিক্যাল কলেজে না নিয়ে গিয়ে তাঁকে সোজা নিয়ে চলে যায় বেসরকারি একটি নার্সিংহোমে। সেখানেই কন্যাসন্তানের জন্ম দেন এবং অসুস্থ থাকায় প্রায় চারদিন অজ্ঞান ছিলেন। সেই সময় আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা হয় পূজার।
বেসরকারি নার্সিংহোমে তিন লাখ কুড়ি হাজার টাকার বিল দেখেই চমকে যায় তাঁর পরিবার। গ্রামের এক মহাজনের কাছে দাদনে ২০ হাজার টাকা ধার করে বেসরকারি হাসপাতালকে দেন স্বামী। এরপরেই তিনি ভিন রাজ্যে চলে যান কাজ করে টাকার জোগাড় করতে। পূজা মার্ডির দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁর সঙ্গে কোনও খারাপ ব্যবহার করেনি। কিন্তু টাকা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিত। শেষমেশ প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে ছাড়া পেয়েছেন তিনি ও তাঁর মেয়ে। তিনি এখন চান, দ্রুত তাঁর স্বামী ফিরে আসুক।
বালুরঘাটের ডিএসপি হেডকোয়ার্টার সোমনাথ ঝাঁ জানান, মালদহ পুলিশ থেকে খবর পেয়ে তাঁদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজের পরিবর্তে ওই প্রসূতি কে বা কেন নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়েছিল? কেনই বা প্রসূতি বলেছিলেন, তাঁর স্বামী তাঁকে ফেলে রেখে পালিয়ে গেছে? সমস্তটাই খতিয়ে দেখছে প্রশাসন। অ্যাম্বুল্যান্স চালকের খোঁজ চলছে।